সৈয়দ আবুল হোসেনের পদত্যাগ আসন্ন!

সৈয়দ আবুল হোসেনের পদত্যাগ আসন্ন!

পদ্মাসেতু নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের সাথে বিশ্বব্যাংকের সমঝোতা হতে যাচ্ছে। বিশ্বব্যাংকের তরফ থেকে এরই মধ্যে সরকারকে এটি জানানো হয়েছে।

তবে বিশ্বব্যাংকের শর্ত হচ্ছে, পদ্মাসেতু নিয়ে যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ, তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংকের সদর দফতর থেকে এটি নিশ্চিত করা হয়েছে।

বিশ্বব্যাংকের এই শর্তে সরকারও রাজী হয়েছে বলে জানায় সংশ্লিষ্ট সূত্র। তাই সৈয়দ আবুল হোসেন আর মন্ত্রী থাকছেন না। যেকোনও সময় তিনি পদত্যাগ করতে পারেন।

যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বিশ্বব্যাংকে যে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে তা পাওয়ার পর তারা বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। সরকার দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কি কি ব্যবস্থা নেয় তা দেখার জন্য এখন অপেক্ষা করছে বিশ্বব্যাংক।

কয়েক দিন ধরেই তথ্য ও যোগাযোগ-প্রযুক্তিমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন পদত্যাগ করছেন বলে নানা গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। এসব গুঞ্জনের ডালপালা রাজধানী ছাড়িয়ে দেশের আনাচে-কানাচেও ছড়িয়ে পড়ে। সারাদেশে এ গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ায় আবুল হোসেন দেশবাসীর কাছে তার অবস্থান তুলে ধরার উদ্যোগ নেন। সেই উদ্যোগের অংশ হিসেবেই  গত ২১ জুলাই শনিবার সৈয়দ আবুল হোসেন তার অবস্থান সম্পর্কে বিভিন্ন পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়েছেন।

‘পদ্মাসেতু: দেশবাসীর প্রতি সৈয়দ আবুল হোসেনের খোলা চিঠি’ শীর্ষক বিজ্ঞাপনে তিনি তার বক্তব্য তুলে ধরেন। সেই বিজ্ঞাপনে তিনি বলেছেন, `কিছু কিছু সম্মানিত ব্যক্তি আমার মন্ত্রিসভায় থাকাকে পদ্মাসেতুর স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু তদন্তের জন্য বাধা মনে করছেন। স্বচ্ছতার স্বার্থে আমি যেকোনও পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত। এর মানে মন্ত্রিসভা থেকে সৈয়দ আবুল হোসেনকে সরে যেতে হচ্ছে।

এদিকে সৈয়দ আবুল হোসেনের ঘনিষ্ঠ একাধিক সূত্র জানায়, পদত্যগের বিষয়ে তিনি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন। যেকোনও মুহূর্তে তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিতে পারেন।

বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালের ৯ জানুয়ারি যোগাযোগমন্ত্রী হন সৈয়দ আবুল হোসেন। পদ্মাসেতু নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় তিনি ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন।

তিনি যোগাযোগমন্ত্রী থাকাকালে দেশের রাস্তাঘাটের অবস্থা খুবই বেহাল হয়ে পড়ে। যথাসময়ে সংস্কার ও মেরামত না করায় দেশের অনেক এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। কিন্তু, তিনি রাস্তাঘাট সংস্কার ও মেরামত করতে ব্যর্থ হন। তাই তখন বিভিন্ন মহল থেকে তার পদত্যাগের দাবি ওঠে।

আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে পদ্মাসেতুতে দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আনে বিশ্বব্যাংক। শুধু তাই নয়, আবুল হোসেনসহ সংশ্লিষ্ট দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারকে অনুরোধ জানায় বিশ্বব্যাংক।

কিন্তু, সরকার দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। সরকার দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় বিশ্বব্যাংক ঋণচুক্তি বাতিল করে দেয়। তারপরও সৈয়দ আবুল হোসেন পদত্যাগ করেননি।

বাংলাদেশ