ক্ষুদ্র ঋণদাতা সংস্থাগুলোতে যে গ্রাহকরা আমানত হিসাবে অর্থ জমা রাখেন, তাদের নিরাপত্তায় একটি বিশেষ তহবিল গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে ক্ষুদ্রঋণ নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ (এমআরএ)।
রোববার সকালে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এমআরএ আয়োজিত এক সেমিনারে ‘ডিপোজিটরস সেফটি ফান্ড’ নামের এই তহবিলের রূপরেখা উপস্থাপন করা হয়।
ইনডেক্স ক্যাপিটাল গ্রুপের ফাহিম আনোয়ার ওই উপস্থাপনায় জানান, ক্ষুদ্র ঋণদাতা সংস্থাগুলোয় যারা আমানত জমা রাখেন, তাদের ৮০ শতাংশের অর্থের পরিমাণ সাড়ে তিন হাজার টাকার নিচে। তাই তহবিলের আওতাও সাড়ে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত রাখা হবে।
“এ তহবিল গঠন করা হলে এ খাতে সুশাসন ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হবে। যদি সংস্থাগুলো অর্থনৈতিক, কৌশলগত বা পরিচালনাগত ঝুঁকিতে পড়ে, তাহলে ‘ডিপোজিটরস সেফটি ফান্ড’ গ্রাহকদের রক্ষা করবে।
আনোয়ার জানান, ঝুঁকির ওপর ভিত্তি করে ক্ষুদ্র ঋণ সংস্থাগুলোকে নিম্ন ঝুঁকি, মধ্যম ঝুঁকি (ওপরের ধাপ), মধ্যম ঝুঁকি (নিচের ধাপ) এবং উচ্চ ঝুঁকি- এই চারটি ধাপে ভাগ করা হয়েছে। এর ওপর ভিত্তি করেই তহবিলের জন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর প্রিমিয়াম ধার্য করা হবে।
তিনি জানান, জরিপে দেখা গেছে, ৫১৭টি ক্ষুদ্র ঋণ সংস্থার মধ্যে ৪৯টি নিম্ন ঝুঁকিতে আছে। ২০২টি মধ্যম ঝুঁকির ওপরের ধাপে ও ২১৬টি নিচের ধাপে এবং ৫০টি উচ্চ ঝুঁকিতে আছে।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ‘ডিপোজিটরস সেফটি ফান্ডকে’ ভালো উদ্যোগ অভিহিত করে বলেন, বাংলাদেশের তিন হাজারেরও বেশি ক্ষুদ্রঋণ সংস্থা কাজ করলেও নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের কাছে নিবন্ধিত হয়েছে মাত্র ৬০০টি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আতিউর রহমান জানান, ক্ষুদ্রঋণ সংস্থাগুলোর গ্রাহক প্রায় এক কোটি, যাদের আমানতের পরিমাণ প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা।
“এই আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষা করতে হবে”, বলেন তিনি।
ফাহিম আনোয়ার বলেন, এমএলএম কোম্পানি যুবক বাংলাদেশ ব্যাংককে জানিয়েছে, তাদের কাছে ২ লাখ ৭০ হাজার গ্রাহকের ৩৮ কোটি টাকা জমা আছে। কিন্তু তদন্ত কমিটি অনুসন্ধান করে জেনেছে, গ্রাহকদের প্রায় ২ হাজার ১৪৭ কোটি টাকা যুবকের কাছে আছে।