বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ভারতীয় শিল্প উদ্যোক্তাদের দেশের বিশেষায়িত শিল্পাঞ্চলে (এসইজেড) বিনিয়োগের জন্য বিশেষ এলাকা বরাদ্দ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া।
রোববার শিল্প মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশ সফররত কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রির (সিআইআই) প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে শিল্পমন্ত্রী একথা বলেন।
তিনি বলেন, আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর শিল্পায়নের জন্য বাংলাদেশ ভারতের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে আগ্রহী। বাংলাদেশি শিল্পোদ্যোক্তা প্রতিনিধিদল ভারতের শিল্পখাতে অর্জিত অভিজ্ঞতা সরেজমিনে দেখতে খুব শিগগিরই ভারত সফর করবে বলে তিনি জানান।
বৈঠকে ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার তারিক আহমাদ করিম, শিল্পসচিব কে এইচ মাসুদ সিদ্দিকী, অতিরিক্ত সচিব এ বি এম খোরশেদ আলম, বাংলাদেশি শিল্পোদ্যোক্তা আবদুল মাতলুব আহমাদ, সিআইআইর সভাপতি আদি গোদরেজ, সাবেক সভাপতি শেখর দত্ত, মহাপরিচালক চন্দ্রজিৎ ব্যানার্জিসহ ১৮ সদস্যের ভারতীয় প্রতিনিধিদল আলোচনায় অংশ গ্রহণ করেন।
বৈঠকে বাংলাদেশের শিল্পখাতে ভারতীয় বিনিয়োগের সম্ভাবনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এ সময় ভারতীয় উদ্যোক্তারা বাংলাদেশে গ্যাস উত্তোলন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রযুক্তি, আইসিটি, উদ্যোক্তা প্রশিক্ষণ, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পখাতের উন্নয়নসহ সম্ভাবনাময় শিল্পখাতে বিনিয়োগের বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন।
ভারতীয় প্রতিনিধি দলের প্রধান আদি গোদরেজ বলেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ভৌগোলিক সম্পর্ক বিরাজ করছে। এ ক্ষেত্রে ভারত বাংলাদেশকে সব ধরনের পণ্যে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার দিয়েছে। এ সুযোগকে কাজে লাগাতে ভারতের ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে বিদ্যুৎ, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, গ্যাসক্ষেত্রে বিনিয়োগ করতে চায়।
এ বিষয়ে শিল্পমন্ত্রী বলেন, গ্যাসের বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। সরকারের সিদ্ধান্ত সাপেক্ষে বিষয়গুলো পরবর্তীতে ভারতকে জানানো হবে।
এ সময় ভারতীয় প্রতিনিধিদলের সদস্যরা বলেন, অভ্যন্তরীণ বিশাল বাজার এবং ভৌগোলিক অবস্থানের জন্য বাংলাদেশে ভারতীয় উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগ আকর্ষণে পরিণত হয়েছে। ভারতীয় বিনিয়োগ বাংলাদেশে ব্যাপকহারে কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি গুণগত শিল্পায়নের ক্ষেত্রে সহায়তা করবে।
তারা দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে দyÕদেশের মধ্যে শিল্প উদ্যোক্তা প্রতিনিধিদলের সফর বিনিময়ের ওপর গুরুত্ব দেন। তারা বাংলাদেশের টেকসই এসএমইখাতের বিকাশে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তি সহায়তার প্রস্তাব করেন।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, শিল্পখাতে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সহায়তা পেতে বাংলাদেশ বহুমাত্রিক যোগাযোগ সম্পর্ক স্থাপনের প্রতি গুরুত্ব দিচ্ছে। জ্বালানি ও বিদ্যুৎখাতে সক্ষমতা বাড়াতে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে প্রতিবেশি দেশ নেপাল ও ভূটানের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে।
পাশাপাশি এসব ক্ষেত্রে বিনিয়োগের জন্য ভারতীয় ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশের শিল্পখাতে বিনিয়োগের প্রস্তাবকে স্বাগত জানান।
এছাড়া দেশের এসএমইখাতের উন্নয়নে ভারতের প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তিগত সহায়তার প্রস্তাবের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন শিল্পমন্ত্রী।