পদ্মা সেতু ‘সরকার চার বিকল্প নিয়ে এগোচ্ছে’

পদ্মা সেতু ‘সরকার চার বিকল্প নিয়ে এগোচ্ছে’

দেশের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো প্রকল্প পদ্মা সেতু নির্মাণে সরকার চারটি বিকল্প নিয়ে এগোচ্ছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

রোববার সচিবালয়ে এক অনুষ্ঠান শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “প্রথমটি পথটি হচ্ছে বিশ্ব ব্যাংকের বাতিল ঋণচুক্তি পুনর্বহাল। দ্বিতীয়টি হলো অন্য তিনটি দাতা সংস্থা এবং নতুন কাউকে নিয়ে অগ্রসর হওয়া। তৃতীয় পথ আছে পিপিপির আওতায় প্রকল্প বাস্তবায়ন। আর সর্বশেষ বিকল্প প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ।”

মন্ত্রী বলেন, “যদি প্রথম তিনটি সুযোগ কাজে না লাগে তাহলে নিজস্ব অর্থায়নেই কাজ শুরু হবে। আমরা এ অর্থবছরেই সেতু নির্মাণ শুরু করব।”

২৯০ কোটি ডলারের পদ্মা সেতু প্রকল্পে বিশ্ব ব্যাংক ১২০ কোটি ডলার দেওয়ার জন্য চুক্তি করলেও পরে দুর্নীতির অভিযোগে তা বাতিল করে। এছাড়া এডিবি ৬১ কোটি, জাইকা ৪০ কোটি এবং ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংক ১৪ কোটি ডলার ঋণ দেওয়ার জন্য সরকারের সঙ্গে চুক্তি করেছিল।

বিশ্ব ব্যাংকের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য সরকার ‘নানা পর্যায়ে’ তৎপরাত চালিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে মুহিত বলেন, “জাইকার প্রেসিডেন্ট এখন ওয়াশিংটনে আছেন। তিনি বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক করবেন। আমি তাকে পদ্মা সেতুর বিষয়টি নিয়েও আলোচনা করার অনুরোধ জানিয়েছি।”

নিজস্ব অর্থায়নে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের সম্ভাব্যতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমাদের এখন প্রায় ২ লাখ কোটি টাকার বাজেট। আগামী তিন বছরে এটা ৩ লাখ কোটি টাকায় গিয়ে দাঁড়াবে। এই তিন লাখ কোটি টাকার বাজাটে প্রতি বছর আট হাজার করে ২৪ হাজার কোটি টাকা যোগানো কোনো সমস্যা না।”

তবে সেক্ষেত্রে এখনকার মতো ‘রমরমা অবস্থা’ আর থাকবে না বলেও মন্তব্য করেন মন্ত্রী।

তিনি বলেন, “এই খরচের জন্য অনেক মন্ত্রণালয়কে ছাড় দিতে হবে; অনেক অর্থ এই খাতে চলে আসবে।”

বিশ্ব ব্যাংকসহ অন্য দাতাদের রাজি করানোর ব্যাপারে সরকার কতোটুকু আত্মবিশ্বাসী জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, “কনফিডেন্স হ্যাজ বিন বিল্ড আপ।”

হিসাব খোলার নীতিমালা চূড়ান্ত

নিজেদের অর্থে পদ্মা সেতু নির্মাণে দেশের মানুষের কাছ থেকের অনুদান গ্রহণের জন্য দুটি ব্যাংক হিসাব খোলার নীতিমালা চূড়ান্ত হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, “এ সংক্রান্ত নীতিমালাটি চূড়ান্ত করা হয়েছে। এটি এখন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে রয়েছে। সেখান থেকে এলেই এর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক এটা তদারকি করবে।”

বিশ্ব ব্যাংক পদ্মা সেতুতে ফিরে আসবে এমন আশার কথা পুনর্ব্যক্ত করে মুহিত বলেন, “বিশ্ব ব্যাংক বলেছে, তারা আমাদের চারটি পদক্ষেপ নিতে বলেছিল। আমরা দুটি পদক্ষেপ নিয়েছিলাম। আর দুটি নেইনি। কিন্তু তাদের এই কথা ঠিক নয়।”

“টু ইজ নট রাইট। দুদকের (দুর্নীতি দম কমিশন) কাছ থেকে যে সহায়তা তারা চেয়েছিল তার সবই করেছে।”

অর্থমন্ত্রী বলেন, “আমাদের (সরকার) আশা বিশ্ব ব্যাংকসহ সবাই আমাদের সঙ্গে থাকবে। বিশ্ব ব্যাংক যদি না আসে, তাহলে এডিবি, জাইকা ও আইডিবি’র সঙ্গে নতুন দাতাদের সঙ্গে নিয়ে অগ্রসর হব।”

সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার আগে অর্থ মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেডের (বিডিবিএল) ২০১১ সালের লভ্যাংশ হস্তান্তর অনুষ্ঠানে অংশ নেন মুহিত।

অনুষ্ঠানে বিডিবিএলের চেয়ারম্যান শান্তি নারায়ণ ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক জিল্লুর রহমান অর্থমন্ত্রীর হাতে ২০১১ সালের লভ্যাশ বাবদ পাঁচ কোটি টাকার পে-অর্ডার তুলে দেন।

অর্থ বাণিজ্য