করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা রাজশাহীতে সাতদিনের বিশেষ বিধিনিষেধ ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। শুক্রবার (১১ জুন) বিকেল ৫টা থেকে ১৭ জুন মধ্যরাত (১২টা পর্যন্ত) এক সপ্তাহের জন্য এ বিশেষ বিধিনিষেধ কার্যকর থাকবে।
বৃহস্পতিবার (১০ জুন) রাত সাড়ে ৯টা থেকে ১০টা পর্যন্ত রাজশাহী সার্কেট হাউসে অনুষ্ঠিত জরুরি বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বৈঠকে রাজশাহী জেলা প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। পরে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার হুমায়ুন কবীর।
রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার হুমায়ুন কবীর জানান, রাজশাহীতে একদিনের ব্যবধানে ফের বেড়েছে সংক্রমণের হার। বৃহস্পতিবার রাজশাহী মেডিক্যালে কলেজ ও রাজশাহী মেডিক্যাল হাসপাতালের দুইটি পিসিআর ল্যাবে রাজশাহীর ৫৬২ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে ২৩৭ জনের করোনা পজিটিভ এসেছে। এছাড়া গেল ২৪ ঘণ্টায় রামেক হাসপাতালে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাই মৃত্যু ও সংক্রমণ বিবেচনায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হলো।
রাজশাহীর জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল জলিল বলেন, রাজশাহীতে প্রথমে সন্ধ্যা ৭টা থেকে পরদিন সকাল পর্যন্ত বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। তারপর গত ২ জুন আরো দুই ঘণ্টা এগিয়ে বিকেল ৫টা থেকেই বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। এই কদিন আমরা পর্যবেক্ষণ করছিলাম। কোথাও করোনার নিম্নমুখী সংক্রমণ, কোথাও ঊর্দ্ধমুখী। কিন্তু ঊর্দ্ধমুখী সংক্রমণই বেশি। তাই শুক্রবার (১১ জুন) বিকেল ৫টা থেকে ১৭ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত রাজশাহী শহরে সর্বাত্মক বিধিনিষেধের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি প্রজ্ঞাপনও জারি করা হয়েছে। তাতে উল্লেখ করা হয়েছে— বিধিনিষেধ চলাকালে সব ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, শপিংমল, দোকান রেস্টুরেন্ট বন্ধ থাকবে। তবে ওষুধ, কাঁচাবাজার, চিকিৎসাসেবা, মরদেহ দাফন ও সৎকারের সাথে জড়িত প্রতিষ্ঠান এর আওতাবহির্ভূত থাকবে।
বিধিনিষেধ চলাকালীন বাস-ট্রেনসহ কোনো প্রকার যানবাহন রাজশাহী নগরীতে প্রবেশ করবে না এবং রাজশাহী নগর থেকে বাইরে যেতে পারবে না। তবে আমসহ অন্যান্য কৃষিপণ্য, খাদ্য সামগ্রীবাহী পরিবহন, রোগী পরিবহনকারী অ্যাম্বুলেন্স এবং জরুরি সেবাদানকারী পরিবহন এ নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবে।
জনসমাবেশ হয়, এ ধরনের সামাজিক (বিয়ে, জন্মদিন, পিকনিক পার্টি ইত্যাদি) আচার-অনুষ্ঠানসহ সব ধরনের গণজমায়েত বন্ধ থাকবে। সব পর্যটনস্থল, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদনকেন্দ্র বন্ধ থাকবে। এই বিধিনিষেধ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপরিউক্ত বিধিনিষেধ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।