সরকার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ওপর নির্ভরশীল। বিশেষ করে দেশের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ সব তথ্য বিবিএস থেকে আসে। এজন্য পরিসংখ্যান ব্যুরোর আরও বিশুদ্ধতা দরকার বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
আজ বৃহস্পতিবার (১০ জুন) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিসংখ্যান ভবনে বিবিএস গ্লোসারি (কনসেপ্টস অ্যান্ড ডেফিশেন) শীর্ষক বইয়ের প্রকাশ করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মোহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) মহাপরিচালক মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ন্যাশনাল স্ট্রাটেজি ফর দ্য ডেভেলপমেন্ট অব স্ট্যাটিসটিকস (এনএসডিএস) প্রকল্পে পরিচালক মো. দিলদার হোসেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, যেহেতু আমরা জনগণের পক্ষে কাজ করি সেহেতু আমলাদের দক্ষতা বাড়াতে হবে। বেশি বেশি প্রশিক্ষণ দিতে হবে। বর্তমানে ৯৯ শতাংশ ক্ষেত্রে সরকারি তথ্য প্রকাশে কোনো সমস্যা নেই। শুধু রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার কারণে এক শতাংশ গোপনীয়তা রয়েছে। সেটির প্রতি গণমাধ্যম অবশ্যই সম্মান দেখাবে। আগামীতে সেই এক শতাংশ আর গোপন রাখার প্রয়োজন নাও হতে পারে। সরকার অত্যন্ত স্বচ্ছ।
মন্ত্রী বলেন, আপনারা কোনো তথ্য লুকাবেন না। আপনাদের জরিপে যদি কোনো ভয়ংকর কিছু আসে সেক্ষেত্রে মহাপরিচালক ও সচিবকে জানাবেন। তারা মনে করলে আমাকে জানাবেন। আমি মনে করলে সরকার প্রধানকে জানাব।
মোহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী বলেন, অনেক জরিপ বা শুমারির ফলাফল নিয়ে বিতর্ক হয়। এতে বিভিন্ন জন বিভিন্ন ধরনের ব্যাখ্যা দিয়ে থাকেন। এই প্রকাশনাটির মাধ্যমে এসব বিতর্কেও অবসান হবে।
প্রকল্প পরিচালক মো. দিলদার হোসেন জানান, এ প্রকাশনায় কৃষি, শিল্প, পরিবেশ, ব্যবসা, উৎপাদন, সেবা, জিডিপি, মূল্য ও মজুরি, বৈদেশিক বাণিজ্যে, ব্যাংকিং, দারিদ্র্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাসস্থান, শ্রমশক্তি, জেন্ডার, রেমিট্যান্স, ডেমোগ্রামি, ফার্টিলিটি, মর্টালিটি, মাইগ্রেশনসহ বিভিন্ন বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক বিষয়ে ২ হাজার ৪১টি কনস্পেট ও ডেফিনেশন স্থান পেয়েছে। গ্রন্থটির বাংলা অনুবাদ ও তিন বছর পরপর এর হালনাগাদ করা প্রয়োজন হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এসডিজির অগ্রগতি মনিটরিংয়ের জন্য সঠিক উপাত্ত সরবরাহ নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এসডিজির ২৩১টি ইন্ডিকেটরের মধ্যে ১০০টির তথ্য বিবিএস সরাসরি প্রণয়ন ও সরবরাহ করে। বিবিএসের বিভিন্ন শুমারি ও জরিপ বা অন্যান্য পরিসংখ্যান কার্যক্রম একই বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন ধারণা ব্যবহৃত হয়। ফলে অনেক ক্ষেত্রে একটি বিষয়ের তথ্য ভিন্ন ভিন্ন হয়। এ সমস্যা দূর করার জন্য সব শুমারি ও জরিপ বা অন্যান্য পরিসংখ্যান কার্যক্রম একই বিষয়ে যেন একই ধারণা বা সংজ্ঞা ব্যবহার করা হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।