অর্থনীতিকে শক্তিশালী ও টেকসই উন্নয়নের জন্য কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র এবং মাঝারি (সিএমএসএমই) শিল্প খাতকে সম্প্রসারিত করার কোনো বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এমপি। তিনি বলেন, করোনা মহামারীর মধ্যেও বিসিক শিল্পনগরি এলাকাগুলোতে উৎপাদন অব্যহতভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশে সিএমএসএমই শিল্পখাতকে জাতীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নের মূল চালিকা শক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। এখাত কর্মসংস্থান, জিডিপি প্রবৃদ্ধি, নারীর আর্থিক ক্ষমতায়ন ও রপ্তানি আয় বাড়াতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে। রূপকল্প-২০২১, ২০২৬ সালের মধ্যে পরিপূর্ণভাবে এলডিসি গ্রাজুয়েশন, ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এবং ২০৪১ সাল নাগাদ শিল্পোন্নত বাংলাদেশ গড়ার মতো সরকারের নির্ধারিত উন্নয়ন লক্ষ্যগুলো অর্জনে এখাত ভূমিকা রেখে যাচ্ছে।
ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের প্রিজম প্রকল্পের টেকনিক্যাল এসিসটেন্স কম্পোনেন্ট ও ইকোনমিক রিপোটার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত ‘ওসঢ়ধপঃ ড়ভ ঈড়ারফ-১৯ ড়হ ঈগঝগঊং ধহফ টহফবৎংঃধহফরহম ঃযরবৎ জবপড়াবৎু: ঊাষফববহপব ভৎড়স ইঝঈওঈ ওহফঁংঃৎরবৎধষ ঊংঃধঃবং’ শীর্ষক ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী আজ ভার্চ্যুয়ালি এসব কথা বলেন। ইআরএফ এর প্রেসিডেন্ট, শারমিন রিনভী সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত ও হেড অব ডেলিগেশন রেনজি থ্রিংক (জবহংলব ঞববৎরহশ), বিসিকের চেয়ারম্যান মোশতাক হাসান এনডিসি এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পরিকল্পনা) মো: গোলাম ইয়াহিয়া। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রিজম প্রকল্পের টেকনিক্যল এসিসটেন্স কম্পোনেন্ট এর টিম লিডর আলী সাবেত। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন প্রিজম টেকনিক্যাল এসিসটেন্ট প্রকল্পের সিনিয়র এক্সপার্ট ও বিআইডিএস এর গবেষণা পরিচালক ড. মঞ্জুর হোসেন। এতে অন্যদের মধ্যে প্যানেল আলোচক হিসেবে অংশ নেয় বাংলাদেশ ব্যাংকে সাবেক গভর্ণর আতিউর রহমান, প্রাণ আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সিইও আহসান খান চৌধুরী, বিল্ড এর চেয়ারপার্সন আবুল কাশেম খান, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি রিজওয়ান রহমান। এতে সঞ্চালনা করেন ইআরএফ এর সাধারণ সম্পাদক এসএম রাশেদুল ইসলাম।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশ এখন স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা ভোগ করেছে। যা জাতির জন্য এক মহান গৌরবের বিষয়। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য-প্রযুক্তি, নারীর ক্ষমতায়ন, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধিসহ আর্থসামাজিক প্রতিটি সূচকে এগিয়েছে বাংলাদেশ। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর এই ক্ষণে সমৃদ্ধির এ ধারা অব্যাহত রেখে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী সম্মিলিতভাবে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রেনজি থ্রিংক কোভিড-১৯ এর আর্থিক ক্ষতি মোকাবেলায় বাংলাদেশ সরকারের গৃহিত পদক্ষেপের প্রসংশা করেন। করোনা মহামারীতে যারা কর্ম হারিয়েছে, তাদের দ্রুত কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে সিএমএসএমইখাতের আরও নজর বাড়ানোর উপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি। তিনি বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন মানবিক সহায়তার পাশাপাশি স্বাস্থ্যখাতে সমস্যা নিরসন, স্বাস্থ্য, স্যানিটেশন ও পানি সুবিধা নিশ্চিতসহ করোনা মহামারীর গবেষণা খাতকে শক্তিশালী করতে জোর দিচ্ছে। ভবিষ্যতেও ইইউ বাংলাদেশের পাশে থাকবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।