তিন থেকে ১৭ বছর বয়সের শিশুদের সিনোভ্যাকের কোভিড-১৯ টিকা দেওয়ার জরুরি অনুমোদন দিয়েছে চীন। শুক্রবার রাতে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে এ তথ্য জানান চীনের সিনোভ্যাক বায়োটেক কোম্পানির প্রধান ইয়িন উইডং।
চীনে বর্তমানে যাদের বয়স ১৮ বছরের ওপরে শুধু তাদের কোভিড-১৯ টিকা দেওয়া হচ্ছে।
কবে নাগাদ সিনোভ্যাকের টিকা শিশুদের দেয়া শুরু হবে এমন প্রশ্নের জবাবে ইয়িন বলেন, চীনের টিকাদান কর্মসূচির অংশ হিসেবে স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ সে সিদ্ধান্ত নেবেন।
তিনি বলেন, ‘বয়স্কদের তুলনায় শিশুদের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর ঝুঁকি কম থাকায় তাদের টিকা দেওয়ার বিষয়টিকে এখন অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে না।’
শিশুদের ওপর সিনোভ্যাকের টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের প্রাথমিক ফলে দেখা গেছে, এই টিকা তিন থেকে ১৭ বছর বয়সীদের শরীরে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করতে সক্ষম। টিকার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও তাদের ওপর খুবই মৃদু।
সিনোফার্ম কর্তৃপক্ষও শিশুদের ওপর তাদের টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের তথ্য জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। তারা ছয় থেকে ১৭ বছর বয়সের শিশুদের ওপর তাদের টিকার দ্বিতীয় ধাপের ট্রায়াল চালাচ্ছে।
ইয়িন বলেন, তাদের টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের দ্বিতীয় ধাপে অংশ নেওয়া শিশুদের টিকার নিয়মিত দুই ডোজ দেওয়ার পর তৃতীয় আরেকটি বুস্টার ডোজ দেওয়া হয়েছে। ট্রায়ালে দেখা গেছে, টিকা দেওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে তাদের দেহে ১০ গুণ অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে এবং দুই সপ্তাহের মধ্যে তা বেড়ে ২০ গুণ হয়েছে।
তবে তৃতীয় বুস্টার ডোজ কখন দেওয়া উচিত সেটি ঠিক করতে তাদের আরো দীর্ঘ সময় ধরে পরীক্ষা চালাতে হবে বলেও জানান ইয়িন।
সিনোভ্যাক বায়োটেক কোম্পানি জানায়, তারা মে মাসের শেষ নাগাদ দেশে-বিদেশে এই টিকার ৬০ কোটিরও বেশি ডোজ সরবরাহ করেছে এবং ৪৩ কোটি ডোজ এরই মধ্যে মানুষকে দেওয়া হয়েছে।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিস্তার রোধে চীনে গণটিকাদান কার্যক্রম চলছে। দেশটিতে ৩ জুন পর্যন্ত প্রায় ৭২ কোটি ৩৫ লাখ মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে।
গত ১ জুন চীনের তৈরি কোভিড-১৯ এর দ্বিতীয় টিকা হিসেবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) সিনোভ্যাক বায়োটেক কোম্পানির তৈরি কোভিড টিকা ‘করোনাভ্যাক’ জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেয়।
ডব্লিউএইচওর স্বাধীন বিশেষজ্ঞদের প্যানেল এক বিবৃতিতে ১৮ বছরের বেশি বয়সীদের জন্য সিনোভ্যাকের এই টিকার দুই ডোজ সুপারিশ করেছে। দুই থেকে চার সপ্তাহ পর দ্বিতীয় ডোজ নেওয়া যাবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাছ থেকে টিকা জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন পাওয়ার মানে হলো, বিশ্বের দেশগুলো এ টিকার মান ও কার্যকারিতায় আস্থা রাখতে পারে।
এর আগে গত ৭ মে চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত ওষুধ কোম্পানি সিনোফার্মের তৈরি দুটি টিকার মধ্যে বিবিআইবিপি-কর-ভি (ইইওইচ-ঈড়ৎঠ) জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছিল ডব্লিউএইচও।