জমকালো আয়োজনে যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতার ২৩৬তম বার্ষিকী উদযাপন

জমকালো আয়োজনে যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতার ২৩৬তম বার্ষিকী উদযাপন

জমকালো আয়োজন, মনোজ্ঞ পরিবেশনা আর বিশিষ্ট জনদের উপস্থিতিতে ঢাকায় উদযাপিত হলো যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা ঘোষণার ২৩৬তম বার্ষিকী উৎসব।

শুক্রবার রাজধানীর অভিজাত বসুন্ধরা আবাসিকের বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টারে এই উৎসবের আয়োজন করে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ মৈত্রী সোসাইটি ও যুক্তরাষ্ট্রের গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর হোমল্যান্ড সিকিউরিটিজ।

অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকাস্থ মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজিনা, মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী শিরীন শারমিন চৌধুরী, সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী, বিশিষ্ট শিল্প উদোক্তা ও শিল্পোগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। আয়োজক সংগঠন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ মৈত্রী সংগঠনের সভাপতি এম গোলাম মেহেরাজ এতে সভাপতিত্ব করেন এবং স্বাগত বক্তব্য রাখেন।

অভ্যাগত অতিথিদের আরও ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক একে আজাদ চৌধুরী, ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার বেনজির আহমেদ, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক সেনা প্রধান লে. জে. (অব) মাহবুবুর রহমান, সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা, সম্মিলিত নাগরিক কমিটি আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, নারী নেত্রী শিরীন আখতার ছাড়াও রাজনীতিক, আমলা, কূটনৈতিক, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।

অনুষ্ঠানে অতিথিদের বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে অনুষ্ঠানস্থলে স্বাগত জানায় এক দল শিশু। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় পতাকা ও পতাকাশোভিত রঙের শাড়িতে সজ্জিত শিশুরা পতাকা নেড়ে স্বাধীনতার উৎসব  অনুষ্ঠানে সব অতিথিদের বরণ করে নেয়।

বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে সঙ্গে নিয়ে সোয়া ৫টায় অনুষ্ঠান স্থলে এসে উপস্থিত হন।

অনুষ্ঠানে মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের নিবিড় বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কও গভীর। আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের মাধ্যমে দু’দেশই উপকৃত হচ্ছে। আমি আশা করি ভবিষ্যতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরো জোরদার হবে। Mozina

মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজিনা বলেন, বাংলাদেশের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। এই দেশ হবে বিশ্বের অন্যতম রপ্তানিকারক দেশ। বিশেষ করে ওষুধ শিল্প, তৈরি পোশাক, তথ্য প্রযুক্তি, হিমায়িত মাছ রপ্তানির মাধ্যমে বাংলাদেশ হবে এশিয়ার পরবর্তী টাইগার।

বিএনপি নেতা মাহবুবুর রহমান বলেন, গণতন্ত্র ও বিশ্বশান্তি রক্ষায় আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। সেই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ স্বাধীনতা ও সন্ত্রাস দমনসহ অনেক বিষয়ে একই ঐক্যবদ্ধ। তিনি বলেন, এই মুহূর্তে বিশ্বশান্তি রক্ষায় বাংলাদেশের সেনারা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছে। যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র ও উন্নয়নের নীতির প্রতি আমাদের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে।

আবুল হাসান চৌধুরী বলেন, এগিয়ে যাওয়ার জন্য দুদেশকে কাজ করতে হবে। দু’দেশের জনগণের মধ্যে নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। এই সম্পর্ককে কাজে লাগিয়ে আমরা অনেক দূর এগোতে পারবো।

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, বাংলাদেশের ছেলেরা যখন শান্তি মিশনে যায়, তখন বিশ্ববাসী বলে আমরা যোদ্ধা। কিন্তু ব্রিটিশরা আমাদের বলে গিয়েছে, আমরা ভীতু। শান্তি মিশনে গিয়ে আমরা প্রমাণ করেছি আমরা যোদ্ধা, আমরা নিষ্ঠাবান এবং আস্থাভাজন। তবে ৪২ বছরে এগোতে পারিনি। কারণ নেতৃত্ব সঠিক নয়। দুই দল এত বেশি ঝগড়া করছে, সংঘাত করছে যে আমরা এগোতে পারছি না।

ওয়ালিউর রহমান বলেন, দু’দেশের স্বাধীনতা ঘোষণায় অনেক মিল রয়েছে। আয়োজকদের ধন্যবাদ এমন একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য। কারণ আমাদের গণতন্ত্রের প্রয়োজন রয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রেরও প্রয়োজন রয়েছে।

অধ্যাপক একে আজাদ চৌধুরী বলেন, বিশ্বের অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ একপাশে নেতৃত্ব দেবে আরেক পাশে নেতৃত্ব দেবে যুক্তরাষ্ট্র।

স্বাগত বক্তব্যে, এম গোলাম মেহেরাজ, যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতার ঘোষণার ইতিহাস তুলে ধরেন। ইউএস কংগ্রেস সদস্য জোসেফ ক্রাউলি, গোরি এল একেরম্যান পাঠানো বাণী পাঠ করে শোনানো হয়। ভিডিও ভাষণ দেন আরেক কংগ্রেস সদস্য পিটার কিং। আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের ওপর প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন তানভীর আহমেদ।

অনুষ্ঠানের শুরু হয় বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে। এরপর নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ এবং সারা বিশ্বে গণতন্ত্রের জন্য জীবন উৎসর্গকারী সকল শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। শিশু ও কিশোররা মঙ্গল প্রদীন জানিয়ে স্বাগত নৃত্য পরিবেশন করে। শিশুদের পরিবেশনায় শুভ জন্মদিন যুক্তরাষ্ট্র গানটিও ছিলো বিশেষ আয়োজন। বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান অতিথিদের নিয়ে কেক কাটেন।

প্রসঙ্গত, ৪ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা বার্ষিকী। দিবসটি পালন উপলক্ষেই যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ মৈত্রী সোসাইটি ও যুক্তরাষ্ট্রের গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর হোমল্যান্ড সিকিউরিটিজ এই যৌথ আয়োজন।

 

বাংলাদেশ