শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা : ৭ আসামির জামিন স্থগিতাদেশ বহাল

শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা : ৭ আসামির জামিন স্থগিতাদেশ বহাল

২০০২ সালে সাতক্ষীরায় তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় করা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত সাত আসামির জামিন স্থগিতের আদেশ বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে রাষ্ট্রপক্ষকে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করতে বলেছেন আদালত। আগামী ২০ জুন এই মামলা পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।

আজ রবিবার (৩০ মে) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন। আসামিপক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন।

এর আগে গত ২৭ মে সাজাপ্রাপ্ত সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তারসহ সাত আসামির জামিন আজ (৩০ মে) পর্যন্ত স্থগিত করেছিলেন চেম্বার আদালত।

২০০২ সালে সাতক্ষীরায় তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় করা মামলায় নিম্ন আদালতে সাজাপ্রাপ্ত সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তারসহ সাত জনকে চার মাসের জামিন দেন হাইকোর্ট। এ সময়ের মধ্যে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আসামিদের করা আপিল নিষ্পত্তি করতে বলা হয়েছে। জামিন পাওয়া আসামিরা হলেন- গোলাস রসুল, আব্দুস সামাদ, আব্দুস সাত্তার, জহুরুল ইসলাম, রাকিব, শাহাবুদ্দিন ও মনিরুল ইসলাম।

বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। পরে আসামিদের জামিন স্থগিত চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।

২০০২ সালের ৩০ আগস্ট সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে যশোর-সাতক্ষীরা সড়কে শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সাবেক সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমানসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। ওইদিনই কলারোয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোসলেম উদ্দিন বাদী হয়ে হত্যাচেষ্টার মামলা করেন।

এ মামলায় তদন্ত শেষে সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়া) আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য বিএনপি নেতা হাবিবুল ইসলামসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগে বলা হয়, শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে এ হামলা হয়েছে। এর পর মামলার আসামি রাকিবের আবেদনে ২০১৭ সালের ২৩ আগস্ট হাইকোর্ট মামলার কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ দেন। একইসঙ্গে রাকিবের ক্ষেত্রে মামলার কার্যক্রম কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়। পরে রাকিবকে জামিন দেওয়া হয়।

রাকিবের আবেদন ছিল, যখন ঘটনার কথা বলা হয় তখন অর্থাৎ ২০০২ সালে তার বয়স ছিল ১০ বছর। সুতরাং তার বিচার হতে হলে শিশু আইনে হবে। বড়দের সঙ্গে দায়রা জজ আদালতে করা যাবে না। গত বছর ৮ অক্টোবর ওই রুল খারিজ করে রায় দেন আদালত। এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন রাকিব। এ আবেদনে আপিল বিভাগ তিনমাসের মধ্যে নিম্ন আদালতে বিচার সম্পন্ন করার নির্দেশ দেন।

এর পর বিচার শেষে সাতক্ষীরার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত গত ৪ ফেব্রুয়ারি এ মামলায় সব আসামিকে সাজা দিয়ে রায় দেন। রায়ে হাবিবুল ইসলামকে কয়েকটি ধারায় ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ ছাড়া সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তারসহ অন্য আসামিদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়।

আইন আদালত শীর্ষ খবর