চীনের ভিন্নমতাবলম্বী আই ওয়ে ওয়ের আপিল খারিজ

চীনের ভিন্নমতাবলম্বী আই ওয়ে ওয়ের আপিল খারিজ

প্রখ্যাত চিত্রশিল্পী এবং ভিন্নমতাবলম্বী আই ওয়ে ওয়ের আপিল আবেদন খারিজ করে দিয়েছে চীনের একটি আদালত। কর ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগে গত বছর তার বিরুদ্ধে দেড় কোটি ইউয়ান জরিমানা ধার্য করে চীনের কর কর্তৃপক্ষ।

চীনের রাজধানী বেইজিংয়ের চাও ইয়াঙ জেলার একটি আদালতে এই জরিমানার বিরুদ্ধে করা আপিল খারিজ করা হয় বলে জানিয়েছে তার আইনজীবী।

২০১১ সালে কর ফাঁকির অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয় আই ওয়ে ওয়েকে। তবে জরিমানা আরোপকে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে দাবি জানায় তার সমর্থকরা। পরবর্তীতে এর বিরুদ্ধে আদালতে আপিল করা হয়।

এদিকে আদালতের সিদ্ধান্তে হতাশা ব্যক্ত করে তার আইনজীবী পু ঝি কিয়াং সাংবাদিকদের জানান, আদালত কোনো কারণ ছাড়াই তাদের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে।

জরিমানা আরোপের পাশাপাশি গত বছর বিনা বিচারে তিন মাস কারাগারে আটকে রাখা হয় সরকারের বিভিন্ন নীতির কড়া সমালোচক এ চিত্র শিল্পীকে।

কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর পরই তার বিরুদ্ধে কর ফাঁকির অভিযোগ আনে কর্তৃপক্ষ। তার প্রতিষ্ঠান ‘ফেক কালচারাল ডেভেলপমেন্ট’ কর ফাঁকি দিয়েছে  বলে দাবি করে কর্তৃপক্ষ। তবে আই ওয়ে ওয়ে ‘ফেক কালচারাল ডেভেলপমেন্টের’ স্থপতি হলেও কোম্পানির বৈধ মালিক তার স্ত্রী বলে জানিয়েছে তার সহযোগীরা।

এদিকে পুলিশ তার বাড়ির চারপাশ ঘিরে রেখে তাকে আদালতে উপস্থিত হতে বাধা দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন আই। পাশাপাশি আদালত জুড়ে নেওয়া হয় কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি বিপুল সংখ্যক সাদা পোশাকধারী পুলিশও আদালত চত্বরে উপস্থিত ছিলো । আদালত চত্বর থেকে সাধারণ মানুষসহ কূটনীতিক ও সাংবাদিকদেরও ওই এলাকা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম।

রায় ঘোষণার পর প্রতিক্রিয়ায় আই ওয়ে ওয়ে বলেন ‘চীনের বিচার বিভাগ অন্ধকারে আচ্ছন্ন’। রাজধানী বেইজিংয়ের উত্তর পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় অবস্থিত বাসভবন থেকে তিনি এ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।

১৯৫৭ সালে বেইজিংয়ে জন্ম নেওয়া আই ওয়ে ওয়ে চীনের সবচেয়ে প্রখ্যাত কবিদের একজন হিসেবে অভিহিত আই কিংয়ের পুত্র। গত দুইদশক ধরে চীনের সমসাময়িক শিল্পকলার গতিপথ নির্ধারণ করে চলেছেন তিনি।

বেইজিংয়ের বিখ্যাত ‘পাখির বাসা’ অলিম্পিক স্টেডিয়ামের নকশা নির্মাণ তাকে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও সুনাম ও খ্যাতি এনে দেয়।

তবে অলিম্পিক ও ২০০৮ সালের সিচুয়ান প্রদেশে সংঘটিত ভয়াবহ ভূমিকম্প প্রসঙ্গে কর্তৃপক্ষের কঠোর সমালোচনা করায় সরকারের কুদৃষ্টিতে পড়েন তিনি।

আন্তর্জাতিক