উত্তর প্রদেশে নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের সময় করোনা আক্রান্ত হয়ে অন্তত ৭শ’ শিক্ষকের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে তোলপাড় চলছে ভারতে। প্রায় ২ সপ্তাহ আগে শেষ হওয়া পঞ্চায়েত নির্বাচনে দায়িত্ব পালনের সময় তারা আক্রান্ত হন করোনায়।
রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষকদের সংগঠনের অভিযোগ, যোগী আদিত্যনাথ সরকার এবং নির্বাচন কমিশনের গাফিলতির কারণেই প্রাণ গেছে এসব শিক্ষকের।
মায়ের স্মৃতি নিয়ে এখন শুধু চোখের পানিই ফেলতে পারেন দিব্যা সিং। সম্প্রতি করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তার মা-শিক্ষিকা সারিতা সিংয়ের। মায়ের মৃত্যুর ব্যাপারে দিব্যা বলেন, আমার মায়ের জন্মদিন ছিলো। কিন্তু সেটা উদযাপন না করে তার মৃত্যু নিয়ে কথা বলছি। মা আর ফিরবেন না। সম্প্রতি ভারতের উত্তর প্রদেশে শেষ হওয়া পঞ্চায়েত নির্বাচনে দায়িত্ব পালনের সময় করোনায় হন প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষিকা সারিতা সিং। পরে মারা যান তিনি। পুরো বাড়িজুড়েই এখন শোকের মাতম।
মৃত সারিতা সিংয়ের মা কমলা সিং বলেন, নির্বাচনের দায়িত্বে যেতে আমি বারবার নিষেধ করেছিলাম আমার মেয়েকে। কিন্তু ও আমাকে বলেছিলো, না গেলে নাকি তার বিরুদ্ধে মামলা করা হবে। এখন আমার মেয়েকে কোথায় পাবো।
২৯ এপ্রিল পঞ্চায়েত নির্বাচন শেষ হয় উত্তর প্রদেশে। চার দফায় প্রায় সাড়ে ৮ লাখ পঞ্চায়েতে ৬৯ হাজার সহকারী শিক্ষক নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করেন। এরপর থেকেই তাদের অসুস্থ হবার খবর আসতে থাকে বিভিন্ন এলাকা থেকে। রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষকদের সংগঠন জানায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৭শ’ বেশি সহকারী শিক্ষকের।
ড. দিনেশ চন্দ্র বলেন, প্রতি মুহূর্তে শিক্ষকদের মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। আমরা রাজ্য সরকার ও নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদন করেছিলাম ভোট স্থগিত রাখতে। কিন্তু তারা আমাদের আবেদন শোনেনি। ভোটকেন্দ্রের ভিড় থেকে ছড়ানো করোনায় এসব শিক্ষকের মৃত্যু হয়েছে। এ দায় কে নেবে..??
নির্বাচনী দায়িত্ব পালনে যোগ দেয়া শিক্ষকদের বেশিরভাগেরই দায়িত্ব পড়ে উত্তর প্রদেশের অজপাড়াগাগুলোতে। যেখানে নেই নূন্যতম স্বাস্থ্যসেবার ব্যবস্থা। ভারতে করোনায় সংক্রমণ এবং মৃত্যুতে শীর্ষে থাকা রাজ্যগুলোর মধ্যে অন্যতম উত্তর প্রদেশ।