স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন বলেছেন, ‘চোরাচালান, মাদক ও নারী পাচারকারী, অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রবহনকারী, খুনি, নারী নির্যাতনকারীরা শুধু সমাজের শত্র“ নয়; এরা দেশের শত্র“। এদের কোনোভাবেই মা করা যাবে না’।
তিনি বলেন, ‘বিগত সরকারের আমলে জঙ্গিবাদ ও আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি ঘটেছিল। শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বর্তমান সরকারের ৩ বছরে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ দমন করতে আমরা সম হয়েছি’।
বুধবার দুপুরে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছিলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যক্রম চলবে। তবে একটি মহল যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বাধাগ্রস্ত করতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর অপচেষ্টায় লিপ্ত। কিন্তু এরা যতই বিরোধিতা করুক, বাংলার মাটিতে যুদ্ধাপরাধীদের অবশ্যই বিচার করা হবে’।
তিনি এ সময় আরও বলেন, ‘বিদেশে পালিয়ে থাকা বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডাদেশ প্রাপ্ত খুনিদের শিগগির দেশে ফিরিয়ে এনে ফাঁসির রায় কার্যকর করা হবে। বিদেশে খুনিদের অবস্থান নিশ্চিত করতে স্ব^রাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে উদ্যোগ নিয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘পঞ্চগড়ের তিন দিকে ভারতীয় সীমান্ত। সীমান্ত দিয়ে মাদক পাচার হওয়া স্বাভাবিক। শধুমাত্র সরকার, বিজিবি ও পুলিশের পে মাদক পাচার প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। এ জন্য প্রয়োজন সামাজিক আন্দোলন’।
শুধু আইনশৃঙ্খলা রাকারী বাহিনীর সদস্যরাই নয়, জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিক, সমাজসেবক, শিক, সাংবাদিকসহ সবাইকে সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা রায় এগিয়ে আসতে হবে বলে মন্তব্য করেন মন্ত্রী।
পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক তোফাজ্জল হোসেন মিয়ার সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যের মধ্যে পঞ্চগড়-১ আসনের সংসদ সদস্য মজাহারুল হক প্রধান, পঞ্চগড়-২ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম সুজন, সংরতি মহিলা আসনের সংসদ সদস্য ফরিদা আখতার হীরা, রংপুর রেঞ্জের উপ-মহা পুলিশ পরিদর্শক বিনয় কৃষ্ণ বালা, দিনাজপুর সেক্টরের ভারপ্রাপ্ত সেক্টর কমান্ডার লে. কর্নেল তৌহিদ, পুলিশ সুপার শাহারিয়ার রহমান, পঞ্চগড় চেম্বারের প্রেসিডেন্ট ইকবাল কায়সার মিন্টুসহ স্থানয়ী রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ সভায় উপস্থিত ছিলেন।
বক্তারা সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে পঞ্চগড়ের অভ্যন্তরে ভারতীয় ছিটমহল সমস্যার সমাধান, পঞ্চগড়ে বন্ধ হয়ে যাওয়া পাসপোর্ট অফিস চালু, সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক নিরীহ বাংলাদেশী হত্যা বন্ধ, অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধ, তেঁতুলিয়ায় করিডোর স্থাপন, বিজিবি’র সীমান্ত রোড নির্মাণ, বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে ইমিগ্রেশন চালু, যুদ্ধাপরাধীদের দ্রুত বিচার, প্রভাবশালী ও অবৈধ দখলদারদের কাছ থেকে সরকারি খাস জমি উদ্ধার ও অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন বন্ধের দাবি জানান।
পরে মন্ত্রী জেলার বোদা উপজেলার ময়দানদিঘীতে মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম গণগ্রন্থাগারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন, ময়দানদিঘী উচ্চ বিদ্যালয়ের নবনির্মিত দ্বিতল ভবনের উদ্বোধন ও ময়দানদিঘী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মিড-ডে-মিল কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।