শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, গত বছরের তুলনায় এবার শিক্ষা সূচকের সকল ক্ষেত্রেই ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে।
একই সঙ্গে আগের চেয়ে শিক্ষার মান বেড়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষার উন্নয়নে সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার কারণেই শিক্ষাক্ষেত্রে আজ এ অগ্রগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
বুধবার বিকেলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী এ কথা বলেন।
শিক্ষা সচিব ও ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
ফলাফল ‘সন্তোষজনক’ উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, গতবারের তুলনায় এবার শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে, পাসের হার বেড়েছে, জিপিএ ফাইভ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে। অন্যদিকে অনুত্তীর্ণ শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে এবং একজন শিক্ষার্থীও পাস করেনি-এমন বিদ্যালয়ের সংখ্যাও গতবারের তুলনায় কমেছে।
এ সাফল্যের জন্য শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষা বিভাগের সকলকে তিনি অভিনন্দন জানান।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষানীতি আমাদের জাতীয় লক্ষ্যের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। আমরা শিক্ষার্থীদের আধুনিক শিক্ষার পাশাপাশি নৈতিকতা ও দেশপ্রেমের শিক্ষায় উজ্জীবীত করে পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।
শিক্ষার মান বৃদ্ধি প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে গত তিন বছরে প্রায় আড়াই লাখ শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া সেরা শিক্ষকদের উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যেও বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
প্রসঙ্গক্রমে তিনি বলেন, আমরা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়াইনি, বরং কমিয়েছি। আগে শিক্ষার্থীদের ক্লাস ফাইনাল ও বৃত্তি দুটো পরীক্ষা দিতে হতো। আমরা এটা কমিয়ে একটিতে নিয়ে এসেছি। পাশাপাশি এ পদ্ধতি চালুর কারণে শিক্ষার্থীদের মধ্যেও এক ধরনের মর্যাদাবোধ ও উৎসাহ তৈরি হয়েছে। তারা সার্টিফিকেট পাচ্ছে।
বৃত্তির ফলাফল ঘোষণা, বৃত্তির পরিমাণ ও বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্য বাড়ানো প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, বৃত্তির ফলাফল কবে ঘোষণা করা হবে এটা শিগগিরই জানিয়ে দেওয়া হবে।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের সম্পদ সীমিত। এর মধ্যেই ফলাফল পর্যালোচনা করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে ও কাজ চালিয়ে যেতে হবে।
এ সময় অনুত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, তাদের হতাশ হওয়ার কিছু নেই। আগামীতে তাদের আরো ভালো করে প্রস্তুতি নিতে হবে।
তারা যাতে ঝরে না পড়ে সেজন্য ফলাফল পর্যালোচনা করে যে ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার সবই নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
অপর এক প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, এবার বছরের প্রথম থেকেই সব স্কুলে একসঙ্গে বই বিতরণ করা হবে।
এদিকে, শিক্ষা সচিব বলেন, দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীরা যাতে ঝরে না পড়ে সেজন্য ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে স্নাতক পর্যায় পর্যন্ত একটি বৃত্তিমূলক ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর অধীনে একটি তহবিল ও ট্রাস্ট গঠন করা হবে। বিভিন্ন কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের সিএসআর কার্যক্রমের অর্থও এখানে প্রদান করা যাবে।
সব মিলিয়ে এটাকে কার্যকর করা সম্ভব হবে-এমন আশা ব্যক্ত করে তিনি বলেন, বর্তমানে দরিদ্র ও মেধাবী এমন ৪০ শতাংশ শিক্ষার্থীকে সরকারি বৃত্তির আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে।
ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলগুলোর জন্য পৃথক ফলাফলের উদ্যোগ নেওয়া হবে কি-না জানতে চাইলে ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. ফাহিমা খাতুন বলেন, না। এতে করে বিভাজন বাড়বে। কারণ তাদের সিলেবাস একই এবং পার্থক্য হচ্ছে তারা শুধু ইংরেজিতে লিখে।