গোলাম আযমের জামিন আবেদন খারিজ

গোলাম আযমের জামিন আবেদন খারিজ

মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আযমের জামিন আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আর্ন্তজাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল -১।

চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক নাসিমের নেতৃত্বাধীন ৩ সদস্যের ট্রাইব্যুনাল বুধবার তার এ আবেদন খারিজ করেন।

গত মঙ্গলবার গোলাম আযমের প্রধান আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক এ আবেদন দায়ের করেন।

ওই দিন ট্রাইব্যুনাল শুনানি গ্রহণ করে বুধবার আদেশের জন্য তারিখ নির্ধারণ করেছিলেন।

মঙ্গলবার আব্দুর রাজ্জাক তার শুনানিতে অংশ নিয়ে বলেছেন, গোলাম আযম গত ৩০ বছর ধরে রোজার সময় তারাবি নামাজ আদায় করে আসছেন এবং প্রতি রোজার মাসে মসজিদে ইতিকাফ করেন।

রাজ্জাক আরো বলেন, গোলাম আযম মনে করেন, এ বছরই তার জীবনের শেষ রোজা। এ কারণে তার জামিনের জন্য আবেদন করা হয়েছিল। তিনি বিগত বছরগুলোর মতো এ বছরও তারাবি ও ইতিকাফ করতে চান। তাই তিনি এ জামিনের আবেদন করেন বলে জানান রাজ্জাক।

ট্রাইব্যুনাল তার আদেশে বলেছেন, কারা কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রিজন সেল কর্তৃপক্ষ গোলাম আযমের জন্য তারাবির নামাজ ও এতেকাফের ব্যবস্থা করতে পারবে।

মানবতাবিরোধী ৫ ধরনের অপরাধের ৬১টি অভিযোগে অভিযুক্ত করে গত ১৩ মে গোলাম আযমের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল। ১০ জুন তার বিরুদ্ধে ওপেনিং স্টেটমেন্ট উপস্থাপন করে রাষ্ট্রপক্ষ। ১ জুলাই থেকে শুরু হয়েছে সাক্ষ্যগ্রহণ। গোলাম আযমের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত দুজন সাক্ষী তাদের সাক্ষ্য দিয়েছেন। তারা হলেন বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ ও গবেষক ড. মুনতাসির মামুন এবং মাহবুবউদ্দিন আহম্মদ।

গোলাম আযমের বিরুদ্ধে পাঁচ ধরনের অভিযোগ হলো, মানবতাবিরোধী অপরাধের পরিকল্পনা, ষড়যন্ত্র, উস্কানি, পাকিস্তানি সেনাদের সাহায্য করা এবং হত্যা-নির্যাতনে বাধা না দেওয়া।

অভিযোগগুলোর মধ্যে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে সহায়তা ও তাদের সঙ্গে চক্রান্ত করার জন্য ছয়টি, তাদের সঙ্গে পরিকল্পনার তিনটি এবং উস্কানি দেওয়ার ২৮টি, তাদের সঙ্গে সম্পৃক্ততার ২৪টি অভিযোগ রয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ১১ জানুয়ারি গোলাম আযমকে মানবতাবিরোধী অপরাধে দীর্ঘ ৪০ বছর পর ট্রাইব্যুনালের নির্দেশে গ্রেফতার করা হয়।

পরে তাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু কারাগারে পাঠানোর পর চিকিৎসার জন্য তাকে নেওয়া হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রিজন সেলে। বর্তমানে তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন।

এর আগে গত ৯ জানুয়ারি তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের প্রসিকিউশনের দেওয়া আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল।

ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের জমা দেওয়া ওই আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্রে গোলাম আযমের বিরুদ্ধে মোট ৬২টি অভিযোগ উপস্থাপন করা হয়। এর মধ্যে ৬১টি গ্রহণ করে গোলাম আযমের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল।

২০১১ সালের ৩১ অক্টোবর গোলাম আযমের বিরুদ্ধে তদন্ত শেষ করেন তদন্ত কর্মকর্তারা। পরে কর্মকর্তারা তার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনের মাধ্যম। মোট ৩৬০ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদনের পাশাপাশি ১০ হাজার পৃষ্ঠার নথিপত্র সংযুক্ত করা হয়।

বাংলাদেশ