প্রতারণার মাধ্যমে এক সৌদি প্রবাসীর কাছ থেকে কোটি টাকারও বেশি অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে গ্রেফতার মডেল ও অভিনেত্রী রোমানা ইসলাম স্বর্ণার রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
রোববার ঢাকা মহানগর হাকিম মোহাম্মদ জসীমের আদালত শুনানি শেষে এই আদেশ দেন। সোমবার সংশ্লিষ্ট আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এদিন রিমান্ড শেষে রিমান্ড শেষে আসামি স্বর্ণাকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। এসময় আসামি পক্ষ জামিন চেয়ে আবেদন করেন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালতে জামিন আবেদন খারিজ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে, গত ২০ এপ্রিল মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আসামি স্বর্ণাকে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর হাকিম মামুনুর রশীদের আদালত তার এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এদিকে প্রতারণার মাধ্যমে কোটি টাকারও বেশি অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে গত ১১ মার্চ অভিনেত্রী স্বর্ণাসহ আরও ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন সৌদি প্রবাসী কামরুল ইসলাম। মামলার পরদিন স্বর্ণা, তার মা শেইলী, ছেলে আন্নাফিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গত ২২ মার্চ অভিনেত্রী স্বর্ণাসহ তিন জনের জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেন আদালত। বর্তমানে তারা কারাগারে রয়েছেন।
মামলার অভিযোগে বাদী কামরুল উল্লেখ করেছেন, আমি তার বাসায় কয়েক দিন অবস্থান করতে বাধ্য হই এবং ২০১৯ সালের ৬ এপ্রিল সৌদি আরবে চলে যাই। সৌদি আরবে যাওয়ার পর প্রথম দিকে সে আমার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখে এবং আমি তাকে নিয়মিত সাংসারিক খরচ দিতাম। চার-পাঁচ মাস পর সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশে এসে তার সঙ্গে দেখা করতে চাইলে সে আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ করতে থাকে এবং দেখা করতে অস্বীকৃতি জানায়। এ বিষয়ে আমি তার পরিবারের সঙ্গে কথা বললে তারাও আমাকে ভয়ভীতি ও হুমকি দেয়। স্বর্ণার আচরণ সন্দেহজনক মনে হওয়ায় তাকে ফ্ল্যাট ও গাড়ি বুঝিয়ে দিতে বললে সেসব নেই বলে জানায়।
২০২০ সালের ৬ জানুয়ারি আদালতে মামলা করেন কামরুল। মামলার পর স্বর্ণা টাকা, স্বর্ণালংকার, ফ্ল্যাট ও গাড়ি ফেরত দিতে চাইলে মামলা প্রত্যাহার করে সৌদি আরব ফিরে যান কামরুল। চলতি বছর ১২ ফেব্রুয়ারি সৌদি আরব থেকে কামরুল বাংলাদেশে এসে ফোন করলে লালমাটিয়ার বাসায় যেতে নিষেধ করেন স্বর্ণা।
এজাহারে তিনি আরো উল্লেখ করেন, ১৬ ফেব্রুয়ারি রাত ১২টার দিকে ফোন করলে স্বর্ণা তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ ভয়ভীতি ও হুমকি দিতে থাকে। মোহাম্মদপুর থানার এসআই সাইফুল ইসলাম ও ফোর্সসহ রাত অনুমান ৩টার দিকে ওই বাসায় যাই। বাসার সিকিউরিটি জানায়, রাত আনুমানিক ২টা ৪০ মিনিটে স্বর্ণা বাসায় ফিরেছে।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে রোমানা ইসলাম স্বর্ণা অভিনীত ‘রানআউট’ সিনেমাটি মুক্তি পায়। এছাড়া একাধিক বিজ্ঞাপনের মডেল ছিলেন তিনি।