সারাদেশের নেতাকর্মীদের সমন্বয়ে ‘রাবেতাতুল ওয়ায়েজীন’ নামে একটি সংগঠন তৈরি করেছে হেফাজতে ইসলাম। সেই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সারাদেশে ওয়াজ-মাহফিল নিয়ন্ত্রণ করতো সংগঠনটি।
শনিবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) যুগ্ম কমিশনার মো. মাহবুব আলম নিজ কার্যালয়ে হেফাজতে ইসলামের নেতাদের গ্রেফতার ও জিজ্ঞাসাবাদ সম্পর্কে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় এ কথা জানান।
তিনি বলেন, সিন্ডিকেটের মাধ্যমে আয়োজকদের হেফাজত নেতাদের বিভিন্ন ওয়াজে নিতে বাধ্য করা হয়। যার মাধ্যমে তারা উগ্রবাদী বিষয়গুলো বাস্তবায়ন করতে পারছে। এছাড়া মাদরাসার গরিব ছাত্রদের ব্যবহার করে অনুদান-সহায়তা আদায়ের নামে হেফাজত নেতারা বিত্তবান হয়েছেন।
সাম্প্রতিক হেফাজত তাণ্ডবের ঘটনায় হেফাজতের কেন্দ্রীয় পর্যায়ের ১৪ জন নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে জানিয়ে মাহবুব আলম বলেন, তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কোরআন হাদিস বোঝেন, জানেন এমন তদন্ত কর্মকর্তাদের নিয়ে তিনটি দল গঠন করে দেওয়া হয়েছে। তদন্তে মূলত নাশকতার মূল উদ্দেশ্য কী, কারা করছে, কেন করছে, তা জনার চেষ্টা চলছে।
২০১৩ সালে সরকার পতনের অনেক রাজনৈতিক দলের সঙ্গে হেফাজতের চক্রান্ত হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, হেফাজতকে কাজে লাগিয়ে সরকার পতনের একটি অপচেষ্টা চালিয়েছিল। হেফাজত নিজেদের অরাজনৈতিক দল দাবি করলেও তাদের অনেকেই কোনো না কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট।
প্রত্যেক রাজনৈতিক দলেরই আলাদা আলাদা এজেন্ডা রয়েছে। সেই এজেন্ডাগুলো তারা বাস্তবায়ন করতে চায় হেফাজতকে দিয়ে। হেফাজত এমনই এক সংগঠন যার ডাকে মাদরাসার ছাত্রদের আনা ও ব্যাপক লোক সমাগম সম্ভব হয়।
হেফাজত নেতারা কী চান- এমন প্রশ্নের জবাবে মাহবুব আলম বলেন, তারা আসলে চান সরকার পতনের মাধ্যমে ক্ষমতায় গেলে বাংলাদেশকে পাকিস্তান বা আফগানিস্তান মডেল বানানো।
কোন রাজনৈতিক দল ষড়যন্ত্রে জড়িত জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইসলামপন্থীর বাইরেও মূলধারার রাজনৈতিক দল আছে। তাদের সঙ্গে জামায়াত ইসলাম, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলেরও বেশ কিছু নেতার যোগসাজশ রয়েছে। ২০১৩ সালেও ছিল, চলতি বছরেও আছে।
সরকার পতনের বিষয়ে বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে কী চুক্তি হয়েছে- এ প্রশ্নের উত্তরে ডিবির যুগ্ম কমিশনার বলেন, এ ধরনের বিষয়টি এখনো পরিষ্কার হয়নি। তাদের সঙ্গে সর্বশেষ কোনো গোপন মিটিং হয়েছে, নাকি ২০১৩ সালের মিটিংয়ের ধারাবাহিকতায় তারা কাজ করছেন, সেগুলোর বিষয়ে এখনো পূর্ণাঙ্গ কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করেছেন সবারই স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় এখানে রয়েছে।
হেফাজতের অর্থের জোগানদাতা কারা- এ বিষয়ে মাহবুব আলম বলেন, তারা বলেছেন বাইরে থেকেই বেশির ভাগ অর্থ আসে। রাজনৈতিক দল থেকে এ সময় কোনো ফান্ড নেওয়া হয়েছে কিনা এ ধরনের কোনো বিষয় এখনো পাওয়া যায়নি। এবার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বাইরে থেকে অর্থ এসেছে কিনা বিষয়টি এখনো নিশ্চিত নয়।