রাস্তায় গণপরিবহন না থাকায় মানুষের আনাগোনাও অনেক কম বলে জানিয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেছেন, আমরা দেখছি সংক্রমণ খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। সে ক্ষেত্রে সবাইকেই সংযত আচরণ করতে হবে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
আজ সোমবার (৫ এপ্রিল) ভার্চ্যুয়াল মন্ত্রিসভা বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।
তিনি আরও বলেন, আমরা লকডাউন দিচ্ছি এক সপ্তাহের জন্য। এক্ষেত্রে বিপণিবিতান, অফিস-আদালতে সীমিত সংখ্যক কর্মকর্তা নিয়ে চালু রাখতে হবে। গণসমাবেশ ও গণপরিবহন চলাচল বন্ধ থাকায় অনেক পরিবর্তন এসেছে। আমরা আশা করবো সবাই এটা অত্যন্ত কঠোরভাবে পরিপালন করবেন যাতে সংক্রমণ রোধ করতে পারি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, মানুষের গতিবিধি আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে চাই, কারণ মানুষ যতই বাইরে আসবে, কাছাকাছি আসবে ততই এ সংক্রমণ বেড়ে যাবে। রাস্তায় গণপরিবহন নেই এবং মানুষের আনাগোনাও অনেক কম। সকাল থেকেই আমরা দেখতে পাচ্ছি আগের অবস্থা থেকে এখনকার অবস্থার অনেক পরিবর্তন হয়েছে।
‘মানুষকে ঘরে থাকতে হবে, প্রত্যেককেই সহযোগিতা করতে হবে, সংক্রমণ যাতে করে আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। এবার আমরা দেখছি সংক্রমণ খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। সে ক্ষেত্রে সবাইকেই সংযত আচরণ করতে হবে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
আরও কঠোর নির্দেশনা আসবে কিনা- প্রশ্নে প্রতিমন্ত্রী বলেন, মাঠ প্রশাসন ও সরকারের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা যারা রয়েছেন এবং পুলিশ প্রশাসন, তারা অত্যন্ত কঠোরভাবে তাদের উপর যে নির্দেশনা আছে সে নির্দেশনা বাস্তবায়ন করবেন। এখানে সেটির কোনো ব্যত্যয় হবে না।
রাজধানীতে গাড়ি চলতে দেখা গেছে-সাংবাদিকরা এমন প্রসঙ্গ আনলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, রাজধানীতে গণপরিবহন নেই। আপনারা নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন সেটি। যদি চলে, বিভিন্ন অফিসে তাদের প্রয়োজনীয় কর্মকর্তা এনে সীমিত পরিসরে তাদের প্রয়োজন অনুসারে অফিস পরিচালনা করবেন, সে ক্ষেত্রে এই পরিবহনগুলো তারা নিজেরা ব্যবস্থা করেছে, এগুলো গণপরিবহন না। অফিসের সঙ্গে তারা চুক্তিবদ্ধ হয়েছে, কর্মকর্তাদের আনা নেওয়ার জন্য শুধু ব্যবহার হচ্ছে।
অনেক দূরপাল্লার গাড়িও ছেড়ে গেছে- এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যদি সেটি হয়ে থাকে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রিকশাও চলছে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, গণপরিবহন চলছে না কিন্তু রিকশা চলছে। আর রিকশার উপরে আমাদের কোনো বিধিনিষেধ নেই। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন রিকশা কিন্তু অন্য যানের চেয়ে অনেক নিরাপদ। কারণ খুবই কম আক্রান্ত হয়। রিকশাওয়ালা এবং প্যাসেঞ্জারের মধ্যে দূরত্ব থাকে, এজন্য সেটি কিন্তু খুব কম ঝুঁকিপূর্ণ।
সব মন্ত্রণালয় খোলা আছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, জরুরি প্রয়োজন যেগুলো সেগুলো খোলা আছে। আমাদের আগের যে নির্দেশনা সেখানে ৫০ শতাংশ বলা আছে, সে অনুযায়ী আমরা চাইলে আরো কমাতে পারি, প্রয়োজন অনুযায়ী সেখানে জনবল রাখতে হবে সেটি পরবর্তী নির্দেশনা।
বইমেলা নিয়ে এক প্রশ্নে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বইমেলা স্বাস্থ্যবিধি মেনে করবেন, কর্তৃপক্ষ কঠোর নজরদারিতে রাখবেন, সেক্ষেত্রে কেউ যাতে এখানে বেড়াতে না আসে। বই কেনার উদ্দেশ্যেই আসবেন। এটাকে অন্যভাবে বা বিনোদনের সোর্স হিসেবে বা ঘুরে বেড়ানো- এরকম কোনো সুযোগ এখানে থাকবে না। অত্যন্ত কঠোরতা রাখা হবে। স্বাস্থ্যবিধি ও শারীরিক দূরত্ব মেনে তারা তাদের বইটি কিনে আবার গন্তব্যে ফিরে যাবেন। সেভাবেই কর্তৃপক্ষ দায়-দায়িত্ব নিয়েছে, আমরাও সেটি মনিটরিং করবো।
কিন্তু এটি তো জরুরি কিছু নয় যে খোলা রাখতেই হবে- এমন প্রসঙ্গ আনলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আজ আমরা যেহেতু বিশেষ লকডাউন শুরু করলাম এর ভেতর চিন্তাভাবনা করার আমাদের সুযোগ রয়ে গেছে।