হেফাজতের সমর্থক মাদ্রাসাছাত্রদের তাণ্ডবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশনে যাত্রাবিরতি বন্ধের পর এবার ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের সব ট্রেন বন্ধ হয়ে গেছে।
হেফাজতে ইসলামের হরতাল চলাকালে আজ রোববার (২৮ মার্চ) সকালে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী একটি ট্রেনে হামলার পর নিরাপত্তার কারণে এই সিদ্ধান্ত নেয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
রেল পুলিশ জুানায়, আন্তঃনগর সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেনটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তালশহর এলাকা অতিক্রম করার সময় ইট-পাটকেল ছোড়ে হরতালকারীরা। এতে ট্রেনের জানলার কাচ ভেঙে যায়। পরে নিরাপত্তাজনিত কারণে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়।
এই ট্রেনটি পেছনের দিকে টেনে ভৈরব নিয়ে যাওয়া হয়। আর ঘটনার পর নোয়াখালী থেকে ঢাকাগামী উপকূল এক্সপ্রেস আখাউড়া স্টেশনে আটকা পড়ে।
গত শুক্রবার হাটহাজারী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ডাকবাংলো, এসি ল্যান্ড কার্যালয়, থানা, রেল স্টেশন, মৎস্য বিভাগ, আনসার ক্যাম্প, পুলিশ সুপার কার্যালয়ে বেপরোয়া হামলার পর পুলিশের গুলিতে পাঁচজন নিহতের জেরে এই হরতাল ডেকেছেন হেফাজতের নেতা-কর্মীরা।
কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ হবে অঙ্গীকার করলেও সকাল থেকেই সহিংস হয়ে ওঠে মাদ্রাসাছাত্ররা। বিশেষ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরজুড়ে তারা ত্রাসের সঞ্চার করে।
হামলার বাইরে যায়নি ট্রেনও।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনের ম্যানেজার সোয়েব আহমেদ সাংবাদিকদের জানান, তালশহর থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আসার পথে সোনার বাংলা এক্সপ্রেসে ভাঙচুর চালানোর পর যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
তবে সকাল ৭টার দিকে একটি মালবাহী ট্রেন ঢাকার উদ্দেশে এবং ৮টায় পারাবত এক্সপ্রেস সিলেট যায়। এরপর আর কোনো ট্রেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উপর দিয়ে যায়নি।
গত শুক্রবার বিকেলে মাদ্রাসার ছাত্ররা দল বেঁধে ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশনে হামলা করে বিভিন্ন যন্ত্র ও লাইনে আগুন ধরিয়ে দেয়। সংকেতব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এই স্টেশনে আর কোনো ট্রেন যাত্রাবিরতি করছে না।
সেদিন হেফাজতের সমর্থকরা হামলা চালিয়েছেন শহরের আনসার ক্যাম্প, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, মৎস্য অধিদপ্তরের কার্যালয়েও।
পুলিশ সুপার কার্যালয়ে হামলার সময় গুলিতে একজন নিহত হন।
শনিবার বিকেল পর্যন্ত শান্ত থাকলেও আওয়ামী লীগের একটি মিছিল বের হওয়ার পর তাদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় মাদ্রাসাছাত্ররা। পরে সড়ক অবরোধ করে পুলিশের সঙ্গেও মারামারি বাধায় তারা। এ সময় গুলিতে প্রাণহানি হয় পাঁচজনের।
রোববার হরতালের সকালে শহরে যান চলাচল শুরু হলেও মাদ্রাসাছাত্ররা তাণ্ডব শুরু করলে বন্ধ হয়ে যায় সব কিছু। তারা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ালে আহত হয়ে দুইজন মারা যায়।
এর মধ্যে শহরের অসংখ্য সরকারি-বেসরকার স্থাপনা এবং মন্দিরে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে।