২০২২ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন পেয়েছে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে চলমান দেশটির নাগরিক অসহযোগ আন্দোলন।
গতকাল শুক্রবার (২৬ মার্চ) নরওয়েজিয়ান এক অধ্যাপক মিয়ানমারের এই আন্দোলনের শান্তি পুরস্কারে মনোনীত হওয়ার খবর জানিয়েছেন।
ইউনিভার্সিটি অব অসলোর সমাজবিজ্ঞানের অধ্যাপক ক্রিশ্চিয়ান স্টোক বলেছেন, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর ১ ফেব্রুয়ারির অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ প্রতিক্রিয়ার প্রতিনিধিত্ব করছে দেশটির নাগরিক অসহযোগ আন্দোলন।
ফরাসী বার্তাসংস্থা এএফপিকে তিনি বলেছেন, মিয়ানমারে গণতন্ত্রের জন্য নাগরিক অসহযোগ আন্দোলন একটি গুরুত্বপূর্ণ গণসমাবেশ করছে। যা এখন পর্যন্ত অহিংস উপায়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
অধ্যাপক ক্রিশ্চিয়ান স্টোক বলেন, এটি গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলন। এই আন্দোলন যদি সফল হয় তাহলে মিয়ানমারের বাইরেও এটি অহিংস-গণতন্ত্রপন্থী অন্যান্য আন্দোলনকে অনুপ্রাণিত করতে পারে। অহিংস এই আন্দোলন এমন এক সময় অনুষ্ঠিত হচ্ছে যখন বিশ্বজুড়ে কর্তৃত্ববাদী শক্তির চাপের মুখে রয়েছে গণতন্ত্র।
১৯৯১ সালে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের জন্য নোবেল শান্তি পুরস্কার জয়ী অং সান সু চি নেতৃত্বাধীন সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর সেনাবাহিনী আবারও অভ্যুত্থান ঘটিয়ে দেশটির ক্ষমতায় এসেছে। মিয়ানমারের এই নেত্রী ও তার রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্র্যাসির (এনএলডির) অনেক নেতাকর্মীকে বর্তমানে রাজধানী নেইপিদোর অজ্ঞাত স্থানে গৃহবন্দি করে রেখেছে সামরিক বাহিনী।
চলতি বছরের নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ সময় ছিল গত ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত। কিন্তু গত সপ্তাহে অধ্যাপক স্টোক ও অন্য আরও পাঁচ অধ্যাপক মিয়ানমারের গণতন্ত্রকামীদের অসহযোগ আন্দোলনকে নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়ার প্রস্তাব জমা দেন। যে কারণে চলতি বছরের পরিবর্তে আগামী বছরের শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন পায় মিয়ানমারের এই আন্দোলন।
প্রত্যেক বছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সংসদ সদস্য, মন্ত্রী, সাবেক নোবেলজয়ী এবং বিশিষ্ট শিক্ষাবিদসহ লাখ লাখ মানুষ ভিন্ন ভিন্ন নোবেল পুরস্কারের জন্য পছন্দের প্রার্থীদের মনোনীত করেন।
মনোনীত হওয়া মানেই পুরস্কারের জন্য নোবেল কমিটির অনুমোদন আছে বিষয়টি তেমন নয়। তবে মনোনীতদের মধ্যে থেকে চূড়ান্ত বিজয়ী বেছে নিতে পারে নোবেল কমিটি। নরওয়ের আইনপ্রণেতারা চলতি বছরের নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য যাদের নাম মনোনয়ন দিয়েছেন; তাদের মধ্যে পরিবেশ আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থানবার্গ, রাশিয়ার বিরোধীনেতা অ্যালেক্সি নাভালনি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং সংস্থাটির দরিদ্র দেশগুলোতে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের সুষম বণ্টনের লক্ষ্যে গঠিত উদ্যোগ ‘কোভ্যাক্স’ও রয়েছে।