যথাযোগ্য মর্যাদায় সারাদেশে উদযাপিত হচ্ছে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী

যথাযোগ্য মর্যাদায় সারাদেশে উদযাপিত হচ্ছে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী

রাজধানীর মতো সারাদেশেও নানা আয়োজনে উদযাপন করা হচ্ছে মহান স্বাধীনতা দিবস। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর সঙ্গে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী যুক্ত হওয়ায় উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে।

শোষণ-বঞ্চনার পথ পেরিয়ে ৫০ বছর আগে স্বাধীনতার ডাক আসে এই দিনে। তাৎপর্যময় সেই দিনটিকে ঘিরে তাই নানা আয়োজন।

সংবাদদাতাদের পাঠানো খবরে জানা যায়-

মেহেরপুর : প্রত্যুষে ৫০ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর সূচনা করা হয়। এরপর সূর্যোদয়ের সঙ্গে-সঙ্গে পতাকা উত্তোলন করা হয়। সরকারি কলেজ মোড়ে অবস্থিত শহীদ স্মৃতিসৌধে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়েছে। কোভিড ১৯ এর কারনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়েছে। শহীদ স্মৃতিসৌধে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ মুনসুর আলম খান, জেলা পুলিশের পক্ষে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামিরুল ইসলাম, এরপর জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট, সিভিল সার্জন, আওয়ামী লীগ, জেলা পরিষদ, মেহেরপুর পৌরসভা, এলজিইডি, গণপুর্ত বিভাগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠন, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে পুষ্পমাল্য অর্পন করা হয়। এরপর শহীদদের আত্মার শান্তি কামনা করে দোয়া করা হয়।

শরীয়তপুর : সূর্যোদয়ের সঙ্গে-সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, ৩১বার তোপধ্বনির মধ্যদিয়ে দিবসের কর্মসুচি শুরু হয়। এরপর শরীয়তপুর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন অপু পুস্পস্তবক অর্পণ করে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে জেলা প্রশাসক মো. পারভেজ হাসান শহীদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পর্যায়ক্রমে জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল, পুলিশ সুপার এস এম আশ্রাফুজ্জামান, বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন শহীদ বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এছাড়াও শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবার ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা, বধ্যভূমি ও গণকবরে শ্রদ্ধা নিবেদন, আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, কুচকাওয়াজ ও শরীর চর্চা প্রদর্শনী, শিক্ষার্থীদের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, প্রীতি ফুলবল প্রতিযোগিতা, পুরস্কার বিতরণ, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পর্যায়ক্রমে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে হাসপাতাল, শিশু পরিবার, জেলখানা ও এতিমখানায় উন্নতমানের খাবার পরিবেশন। বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও উপাসনালয়ে দেশ ও জাতির শান্তি কামনায় বিশেষ দোয়া এবং প্রার্থনা। বিকেলে জেলা শিল্পকলা মাঠে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।

জয়পুরহাট : ভোরে সূর্যোদয়ের সঙ্গে-সঙ্গে ৫০ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসুচি শুরু হয়। শহরের শহীদ ডা. আবুল কাশেম ময়দানে কেন্দ্রীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক করে মুক্তিযুদ্ধে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। স্মৃতিসৌধে প্রথমে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন জেলা প্রশাসক মো. শরীফুল ইসলাম। স্থানীয় সংসদ সদস্য এ্যাড. সামছুল আলম দুদু, পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভূঞা, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান রকেট, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সোলায়মান আলী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিল্টন চন্দ্র রায়, জেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ প্রেস ক্লাবসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায়। সকাল ৮ টায় ষ্ট্রেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়। করোনা প্রাদূর্ভাবের কারণে সরকারের নির্দেশনায় এবার কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কুচকাওয়াজে অংশগ্রহণ করেনি। শুধুমাত্র সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বাংলাদেশ পুলিশ, আনসার ও ভিডিপি, জেলা কারাগার, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, বিএনসিসি, জেলা রোভার স্কাউট, জেলা স্কাউট ও গালর্স গাইড দল অশগ্রহন করে। এখানে জাতির বীর সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য এ্যাড: সামছুল আলম দুদু, জেলা প্রশাসক মো. শরীফুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভূঞা, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেনসহ জেলা পর্যায়ের বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তারা জেলা প্রশাসন আয়োজিত কর্মসূচিতে যোগদান করেন।

নড়াইল : ভোরে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসের শুভ সুচনা করা হয়। পরে সূর্যোদয়ের সঙ্গে-সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলন শেষে শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ, গণকবর, বধ্যভূমি, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের বঙ্গবন্ধু ও চেতনা চত্বর ও বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন, বিশেষ দোয়া, কুচকাওয়াজ, বীরমুক্তিযোদ্ধাদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো, করা হয়। জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, আওয়ামী লীগ, নড়াইল পৌরসভা, নড়াইল প্রেস ক্লাব, জেলা আইনজীবী সমিতিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে পুস্পস্তবক অর্পন মোনাজাত, গণকবর জিয়ারত করা হয়। এসব কর্মসূচিতে নড়াইল জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সোহরাব হোসেন বিশ^াস, পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায়, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধ অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান জিন্নাহ, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস, সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন খান নিলু, পৌর মেয়র আঞ্জুমান আরা, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট অচিন চক্রবর্তি, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ওমর ফারুকসহ বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

রাঙ্গামাটি : জেলা শহরের শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে ৫০ বার তোপধ্বনির মধ্যদিয়ে বীর শহীদদের কর্মসূচির শুরু হয়। শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরী, রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, রাঙ্গামাটি পুলিশ সুপার মোদদাছছের হোসেনসহ জেলা প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্মকর্তা, রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ। পরে জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন- খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার এমপিসহ জেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। এছাড়াও রাঙ্গামাটি চিং হ্লা মং মারী ষ্টেডিয়ামে শিশু-কিশোরদের কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসক ও রাঙ্গামাটি পুলিশ সুপার মীর মোদদাছছের হোসেন সালাম গ্রহণ করেন। এ সময় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা প্রদান করেন রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক । পরে কুচকাওয়াজে বিজয়ীদের হাত পুরস্কার তুলে দেয়া হয়। এছাড়া রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের উদ্যোগে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানে সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়।

চাঁদপুর : সূর্যোদয়ের সঙ্গে-সঙ্গে অঙ্গীকার পাদদেশ সংলগ্ন রেললাইনে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের শুভ সূচনা হয়। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে শহরের অঙ্গীকার পাদদেশে প্রশাসন, রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশের নেতৃত্বে জেলা প্রশাসন, পুলিশ সুপার মো. মিলন মাহমুদ এর নেতৃত্বে জেলা পুলিশ, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপির পক্ষে স্থানীয় নেতৃবৃন্দ, জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষে সভাপতি নাছির উদ্দিন আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদসহ রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠন পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে শহরে বিশাল একটি শোভাযাত্রা বের করে। এ সময় সকল সরকারি, বেসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও ভবনসমূহে যথাযথ মর্যাদায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। সকাল ৮টায় জেলা প্রশাসক চাঁদপুর স্টেডিয়ামে পুলিশ, আনসার ও ভিডিপি, বিএনসিসি, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, কারারক্ষী, রোভার স্কাউটস, স্কাউটস্, গার্লস গাইড ও কমিউনিটি পুলিশসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য শিশু-কিশোর সংগঠনের সালাম গ্রহণ ও কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন। এরপরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিশু-কিশোর সংগঠনসমূহ মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে চমৎকার ডিসপ্লে প্রদর্শন করেন।

কুষ্টিয়া : সুর্যোদয়ের সঙ্গে-সঙ্গে কুষ্টিয়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ৩১ বার তোপধ্বনির ও শহীদদের স্মৃতি সৌধে পুষ্পমাল্য অর্পণ এবং মুক্তিযোদ্ধাদের কবরে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণের মধ্যদিয়ে মহান স্বাধীনতা ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন হচ্ছে। সকাল ৬ টায় কুষ্টিয়া কালেক্টরেট চত্বরে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক মো. সাইদুল ইসলামের নেতৃত্বে রাষ্ট্রীয়ভাবে শহীদদের স্মৃতি সৌধে পুষ্পমাল্য অর্পণ এবং দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। এ সময় পুলিশ সুপার মো. খাইরুল আলম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সিরাজুল ইসলাম, জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ সদর উদ্দিন খান, সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতাসহ বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ শীর্ষ খবর