চলতি অর্থ বছরে দেশে জিডিপি’র পরিমাণ ৭ শতাংশে দাঁড়াবে, এই আশা প্রকাশ করে বাংলাদেশ বিনিয়োগ বোর্ডের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. সৈয়দ আব্দুস সামাদ বলেছেন, বিদেশি নির্ভরতা কমে যাওয়া বাংলাদেশের জন্য শুভ সংবাদ। তিনি বলেন, দেশে এখন অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে বিনিয়োগ বান্ধব পরিবেশ বিরাজ করছে।
জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন আয়োজিত ‘বাংলাদেশের অর্থনীতির অগ্রগতি ও চ্যালেঞ্জ শীর্ষক’ আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন । বাংলাদেশ মিশনের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ. কে. আব্দুল মোমেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় নির্ধারিত বিষয়ের উপর বিস্তারিত আলোচনা করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্ণর ড. মো. ফরাস উদ্দিন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মিশনের প্রথম সচিব (প্রেস) মামুন-অর-রশিদ। প্রশ্ন-উত্তর পর্ব সঞ্চালনা করেন অনুষ্ঠানের সভাপতি ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন।
ড. সৈয়দ আব্দুস সামাদ বলেন, ২০১১ সালে বাংলাদেশে রেকর্ড সংখ্যক বিনিয়োগ হয়েছে। বাংলাদেশে শ্রমিকের মজুরি বেড়েছে, বাজারে পণ্য সরবরাহ রয়েছে। স্বাভাবিক বাণিজ্য চলছে। সার্বিক পরিস্থিতি অগ্রগতির মধ্যেও অনেকে হাহাকার করছেন ‘অর্থনীতি ধ্বংস’ হয়ে গেল। এটা দুঃখ বিলাস। এটা পরিহার করতে হবে।
ড. মো. ফরাস উদ্দিন দীর্ঘ আলোচনায় বাংলাদেশ সরকারের আর্থ-সামাজিক কর্মকা- তুলে ধরে বলেন, আমরা অর্থনৈতিক মুক্তি পেয়ে কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌছে যাব। যারা সমালোচনা করেন তারা বস্তুনিষ্ঠ সমালোচনা করলে দেশ উপকৃত হবে। তিনি বলেন, ২০০৪-২০০৫ সালে শ্রমিকের মজুরি ছিল সাড়ে চার কেজি চালের সমপরিমান যা বর্তমানে ১০ কেজি চালের সমপরিমানে দাঁড়িয়েছে।
তিনি বলেন, জনবল আমাদের মৌলিক সম্পদ। প্রসঙ্গত তিনি তেল, গ্যাস ও কয়লাসহ স্বর্ণের মত খনিজ সম্পদ থাকার কথা উল্লেখ করে বলেন, শুধু কয়লা উত্তোলন করে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়নে ব্যাপক এগিয়ে যেতে পারে।
ড. ফরাস উদ্দিন বলেন, কৃষক এখন সার ডিজেল কীটনাশক পাচ্ছে। ফলে উৎপাদন বাড়ছে। তারা অর্থনীতির প্রাণ। এখন কৃষককে উৎপাদন সহায়ক সামগ্রী চাইতে গিয়ে আর গুলি খেতে হচ্ছে না। শিক্ষার অগ্রগতি নিয়ে তিনি বলেন, বিগত জোট সরকারের আমলে ২৫ হাজার ছাত্র পলিটেকনিকে ভর্তির সুযোগ পেত। বর্তমান সরকারের তিন বছরের মাথায় এই ছাত্র ভর্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২৫ হাজার। ড. মো. ফরাস উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যেও উঠে দাঁড়াচ্ছে।
ড. এ.কে আব্দুল মোমেন সূচনা বক্তব্যে বলেন, অর্থনীতির ১২ টি ইনডেক্সের মধ্যে ৯টিতে বিগত সরকারের চেয়ে বর্তমান সরকারের আমলে বিশেষ অগ্রগতি হয়েছে। বিশ্বব্যাপী এখন সবাইকে সবক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হচ্ছে। বাংলাদেশে গত ৪০ বছরে যা বিদ্যুত উৎপাদন হয়েছে বর্তমান সরকারের শেখ হাসিনা প্রশাসন তিন বছরে তার সমপরিমান উৎপাদন করেছে।
কুইক রেন্টালের সমালোচনা করে অনেকে সেই সাফল্য ম্লান করে দিতে চাইছে এমন মন্তব্য করে তিনি, দেশে ব্যাপক কর্মসংস্থান, নারী উন্নয়ন, নারীর ক্ষমতায়ন, কর্মমুখী শিক্ষার প্রসার, গ্রামোন্নয়ন ও সাধারণ মানুষের জীবনধারণ মানোন্নয়ন, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীসহ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সরকার গৃহীত বিভিন্ন কর্মকা- তুলে ধরেন।