এ বছর অনুদানের ১১ কোটি টাকা পাবেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা

এ বছর অনুদানের ১১ কোটি টাকা পাবেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা

শিক্ষার্থীদের ১০ হাজার টাকা দিচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এমন গুজবে গত কয়েকদিন ধরে দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভিড় করছে শিক্ষার্থীরা। এসব গুজবে কান না দেওয়ার জন্য দুই দফা সতর্কতা জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

শিক্ষার্থীরা কোন ক্যাটাগরিতে কত টাকা পায়, তার একটি নীতিমালা আছে। নীতিমালা অনুযায়ী চলতি বছর শিক্ষার্থী, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রাজস্বখাত থেকে অনুদান হিসেবে ১১ কোটি টাকা অনুদান দেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, এ বছর মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে ৬ কোটি টাকা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের অনুদান দেওয়া হবে। তার মধ্যে এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১ লাখ, একজন শিক্ষক-কর্মচারীর ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৩০ হাজার, শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে মাধ্যমিক পর্যায়ে ৮ হাজার, উচ্চ মাধ্যমিকে ৯ হাজার, স্নাতক/সমমান পর্যায়ে ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে।

এক্ষেত্রে মোট অর্থের ২০ শতাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, ১০ শতাংশ শিক্ষক-কর্মচারীদের এবং ৭০ শতাংশ সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণ করা হবে।

জানা গেছে, গত বছর ৬ষ্ঠ থেকে স্নাতক পর্যায়ের ৮ হাজার ১৮৬ জন শিক্ষার্থী, ৩০০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সমপরিমাণ শিক্ষক-শিক্ষিকাকে ৬ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে।

অন্যদিকে এ বছর মাদসারা ও কারিগরিতে অনুদানের জন্য ৫ কোটি টাকার মধ্যে একক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৫০ হাজার, একজন শিক্ষক-কর্মচারীকে ২০ হাজার, এবতেদায়ী (১ম থেকে ৫ শ্রেণি) পর্যায়ের প্রতি শিক্ষার্থী ৩ হাজার, দাখিল/এসএসসি ভোকেশনাল) পযায়ে প্রতিজন ৫ হাজার, আলিম/এইচএসসি (বিএম)/ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পর্যায়ের প্রতি শিক্ষার্থী ৬ হাজার এবং ফাযিল ও তদুর্ধ্ব পর্যায়ে ৭ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া হবে।

জানা গেছে, গত বছর এ বাবদ ৪ কোটি টাকা অনুদান দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে ৫ হাজার ৯৫১ জন শিক্ষার্থী, ২৪০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ৪০০ জন শিক্ষকের মাঝে এ অর্থ বিতরণ করা হয়।

প্রতি বছর বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষক-কর্মচারী ও মেধাবী, অস্বচ্ছল, প্রতিবন্ধী, জটিল ও ব্যয়বহুল রোগী, দুর্ঘটনা কবলিত শিক্ষার্থীদের সহায়তা দেওয়া হয়ে থাকে। তার ভিত্তিতে এ বছর মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা পর্যায়ে বিভিন্ন ধাপে ৬ কোটি ও কারিগরি ও মাদরাসা পর্যায়ে ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষক-কর্মচারী ও ছাত্র-ছাত্রীদের অনুদান প্রদানে অনুসরণীয় একটি নীতিমালা রয়েছে। বর্তমানে অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়া চলমান। আবেদন শেষে যাচাই-বাছাইয়ের পর যোগ্যদের ব্যাংক হিসাবে এ টাকা পাঠানো হবে বলে জানা গেছে।

নীতিমালায় দেখা গেছে, ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষ থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে, শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের সহায়তা দেওয়া হয়। তার ধারাবাহিকতায় এবছরও অনলাইনে আবেদন চাওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে আগামী ১৫ মার্চ এবং কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগের ১০ মার্চ পর্যন্ত আবেদন চলবে।

নীতিমালায় বলা হয়েছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা এবং কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগে এ সংক্রান্ত আলাদা দুটি কমিটি গঠন করা হয়ে থাকে। এ কমিটিতে একজন অতিরিক্ত বা যুগ্ম সচিব আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। অনলাইন আবেদন কার্যক্রম শেষ হওয়ার পর প্রতিষ্ঠান, শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের আবেদন যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে যোগ্যদের নির্বাচন করা হয়।

জানা গেছে, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষায় গত ১ ফেব্রুয়ারি ও কারিগরিতে ১৮ ফেব্রুয়ারি অনলাইন আবেদন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এ পর্যন্ত বিভিন্ন স্তরে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষার প্রায় ৯০ হাজার আর কারিগরি ও মাদরাসার প্রায় ৪০ হাজার আবেদন জমা হয়েছে। সার্ভার জটিলতার কারণে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষায় আবেদন সময় ২৮ ফেব্রুয়ারি শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা ১৫ মার্চ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে।

রোববার (৭ মার্চ) সকালে করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে শিক্ষার্থীদের ১০ হাজার টাকা সরকারি অনুদান দেওয়ার গুজব ছড়িয়ে পড়ে। ফেসবুক ও ইউটিউবে এমন ভুয়া তথ্য প্রচার করেছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। আর তাদের এ গুজবে বিশ্বাস করে দেশের বিভিন্ন স্কুল-কলেজে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ঢল নামে। ফটোকপি ও অনলাইন সার্ভিসের দোকানগুলোতেও ছিল উপচে পড়া ভিড়। এটি বন্ধে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সতর্কবার্তা জারি করেছে।

বাংলাদেশ শীর্ষ খবর