নিউজিল্যান্ডে ভূমিকম্প, নিরাপদে আছে টাইগাররা

নিউজিল্যান্ডে ভূমিকম্প, নিরাপদে আছে টাইগাররা

মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে তিনটি শক্তিশালী ভূমিকম্পের কবলে পড়েছে নিউজিল্যান্ড। দেশটির নর্থ আইল্যান্ডের জিসবোর্নে প্রথমে ৭.৩ তিন মাত্রার ভূমিকম্পের পর আবার ৮.১ মাত্রার কম্পন অনুভূত হয়েছে। মাঝে আরেকটি ভূমিকম্প হয় ৭.২ মাত্রার। যে কারণে জারি করা হয়েছে সুনামি সতর্কতা, নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়েছে উপকূলীয় অঞ্চলের বাসিন্দাদের।

এদিকে নিউজিল্যান্ডে অবস্থান করছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। তবে ভূমিকম্পে ক্রিকেটারদের কোনো ক্ষতি হয়নি বলে জানিয়েছেন ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান আকরাম খান ও বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন।

মূলত ভূমিকম্পের কেন্দ্র থেকে অনেক দূরে বাংলাদেশ দলের বর্তমান অবস্থান। টাইগাররা এখন রয়েছে ক্রাইস্টচার্চে। সেখান থেকে জিসবোর্নের দূরত্ব প্রায় ৯০০ কিলোমিটার। ফলে ভূমিকম্পের সময় টের পাননি ক্রিকেটাররা। বিশেষ করে নিউজিল্যান্ডে তখন মধ্যরাত হওয়ায় দলের প্রায় সবাই গভীর ঘুমে মগ্ন ছিলেন।

কিউইদের সঙ্গে তিনটি ওয়ানডে ও তিনটি টি-টুয়েন্টি ম্যাচ খেলতে বাংলাদেশ দল বর্তমানে ক্রাইস্টচার্চে অবস্থান করছে। ভূমিকম্পের কোনো প্রভাব সেখানে পড়েনি। তবে দেশটির জননিরাপত্তা বিভাগ সর্বসাধারণকে সমুদ্র তীরবর্তী এলাকা থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছে। কারণ ভূমিকম্পের পর তীরবর্তী এলাকাগুলোতে উঁচু ও অস্বাভাবিক ঢেউ আছড়ে পড়তে পারে। ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলটি থেকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার ব্যাসার্ধ এলাকাজুড়ে সুনামি তরঙ্গ দেখা দিতে পারে।

স্থানীয় সময় শুক্রবার (৫ মার্চ) রাত ২টা ২৭ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ২৭ মিনিটে) এ ভূমিকম্প আঘাত হানে। নিউজিল্যান্ডের ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সি জানিয়েছে, ভূমিকম্পের ফলে যে সুনামির স্রোত সৃষ্টি হয়েছে, তা তাদের দেশে আছড়ে পড়বে কীনা, তা এখনও পর্যালোচনা করা হচ্ছে।

এর আগে ২০১১ সালে একটি ৬.৩ মাত্রার ভূমিকম্প সরাসরি আঘাত হেনেছিল নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ শহরে। শহরটির অর্ধেক প্রায় ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। ১৮৫ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছিল ওই ঘটনায়। ধ্বংসের মুখে পড়েছিল অধিকাংশ শহরতলিও। সেই শহরেই ক্রিকেটাররা অবস্থান করছেন।

বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন চৌধুরী ক্রিকেটারদের নিরাপদে থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘তাদের কোনো সমস্যা হয়নি। ক্রাইস্টচার্চে ভূমিকম্পের কোনো আঁচ পড়েনি। কেননা ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল থেকে ক্রাইস্টচার্চ অনেক দূরে। ওখানে কোনো প্রকার সতর্কবার্তাও জারি করা হয়নি।’

নিউজিল্যান্ডে লম্বা সফরে তিনটি ওয়ানডে ও তিন টি-টুয়েন্টি খেলবে বাংলাদেশ। ২০, ২৩ ও ২৬ মার্চ হবে তিনটি ওয়ানডে; ভেন্যু যথাক্রমে ডানেডিন, ক্রাইস্টচার্চ ও ওয়েলিংটন। ক্রাইস্টচার্চের ম্যাচটি দিবা-রাত্রির হবে। ওয়ানডের পর টি-টুয়েন্টি সিরিজ খেলবে দুই দল। ম্যাচ তিনটি ২৮, ৩০ মার্চ ও ১ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে। নেপিয়ার, অকল্যান্ড ও হ্যামিল্টনে হবে কুড়ি ওভারের সিরিজ।

বাংলাদেশের সর্বশেষ নিউজিল্যান্ড সফরও সুখকর কিছু ছিল না। ২০১৯ সালের শুরুতে ক্রাইস্টচার্চে এক মসজিদে বন্দুকধারী গুলি করে ৫০ জন মুসল্লিকে খুন করে। বাংলাদেশ দলও ওই মসজিদে নামাজ আদায় করতে যাচ্ছিল। ভাগ্যের সহায়তায় ক্রিকেটাররা সেদিন বেঁচে গিয়েছিলেন।

খেলাধূলা শীর্ষ খবর