সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, এশিয়ার বিস্ময়কর ডিজিটাল নেতা এখন বাংলাদেশ। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে দৃঢ় অঙ্গীকার ও সে অনুযায়ী কঠোর সংগ্রামের ফলে এশিয়ায় বাংলাদেশ আজ তথ্য-প্রযুক্তিখাতে অনেক এগিয়ে গেছে।
বুধবার (৩ মার্চ) নিউজউইকে প্রকাশিত নিজের কলামে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক প্রধান উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় লিখেছেন, এক দশকেরও আগে বাংলাদেশ অঙ্গীকার করেছিল ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে পা রাখার সমান্তরালে তথ্যপ্রযুক্তিতেও অগ্রসর এক রাষ্ট্রে পরিণত হবে। তখন অল্প মানুষ বিশ্বাস করেছিল আমরা এ স্বপ্ন পূরণ করতে পারবো। সে যাই হোক, এ প্রজেক্টের সবচেয়ে বড় সমর্থক ও সহযোগী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন ২০০৯ ক্ষমতায় এলেন, সেসময় দেশের মাত্র ২ কোটি মানুষের হাতে মোবাইল ছিল। তবে এখন ১২ কোটিরও বেশি মানুষ তা ব্যবহার করে। প্রত্যন্ত গ্রামেও এখন লাখ লাখ মানুষের উচ্চ গতির সংযোগ-সুবিধা আছে। এসব সুবিধার ফলে অগণন মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়েছে।
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিতে প্রধানমন্ত্রীকে গুরুত্বপূর্ণ এবং কার্যকর পরামর্শ দিয়ে থাকেন সজীব ওয়াজেদ জয়। প্রধানমন্ত্রী দেশের ডিজিটাল উন্নয়নে যেসব সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তার পেছনে জয়ের দক্ষ পরামর্শ রয়েছে।
ডিজিটাল বাংলাদেশের মতো বিশাল পরিকল্পনার যাত্রা শুরু হয় ২০০৯ সালে উল্লেখ করে সজীব ওয়াজেদ জয় লিখেছেন, এ পরিকল্পনায় কাগজ-ভিত্তিক সরকারি সেবাকে ব্যবহারে সহজ ইন্টারনেট ও স্মার্টফোন ভিত্তিক প্রোগ্রাম রুপান্তরের লক্ষ্য ছিল। পাশাপাশি ই-সিগনেচার ও ইলেকট্রনিক নথি ব্যাপকভাবে প্রচলন ও প্রসারে উৎসাহ দেওয়া হয়। এসব কাজ সুফল দিয়েছে।
ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফর তুলে ধরতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা সতার কলামে জানান, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। ২০০৮ সালে বাংলাদেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধি ছিল ৫ শতাংশের কাছাকাছি। বর্তমানে তা ৮ শতাংশ। ডিজিটাইজেশনের মাধ্যমে দেশে এরই মধ্যে সুলভ হয়ে ওঠা তথ্যপ্রযুক্তির উচ্চ-গতির সংযোগ ব্যবস্থারও বড় ভূমিকা রয়েছে প্রবৃদ্ধি বাড়ার পেছনে।
সজীব ওয়াজেদ জয় মনে করেন, নাটকীয় গতিতে দেশের ইন্টানেট যুগে প্রবেশের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে থাকা বাংলাদেশের অন্যতম বড় অর্জন। তিনি বলেন, এখন এমনকি ডিজিটাল দক্ষতাও বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করছি আমরা। বাংলাদেশের প্রশিক্ষকরা এখন মালদ্বীপ, ভূটান এবং শ্রীলংকার মতো এশীয় প্রতিবেশিকে ডিজিটাল রাষ্ট্রে রূপান্তরের ক্ষেত্রে সহোগিতা করছে। এক দশক আগেও কেউ ভাবতে পারেনি, এটা সম্ভব।
বঙ্গবন্ধুর নাতি ও প্রধানমন্ত্রীর একমাত্র ছেলে সজীব বলেন, সাড়ে ৮ হাজার ডিজিটাল সেন্টারের মাধ্যমে একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক গড়ে তোলেছে সরকার। এর মাধ্যমে দেশের নাগরিকদের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে অনলাইন সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে জন্ম-নিবন্ধন, চাকরি সন্ধান, অনলাইনে স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা হচ্ছে। অনেক জাতীয় কর্মসূচি এখন অনলাইনের মাধ্যমে বাস্তায়িত হয়। এমনকি গত বছর করোনা মহামারির মধ্যে সরকারি সেবা বলতে গেলে নির্বিঘ্ন ছিলো। আদালত নতুন জুডিসিয়ারি পোর্টালের মাধ্যমে কার্যক্রম চালিয়ে গেছেন। কৃষকরা পেয়েছেন জুরুরি আবহাওয়া ও কৃষি বিষয়ক তথ্য সেবা। এটা সম্ভব হয়েছে কৃষি পোর্টাল থাকার কারণে। মোবাইলের মাধ্যমে সাধারণ নাগরিকদের করোনা বিষয়ক তথ্য সম্পর্কে সচেতন রাখা সম্ভব হয়েছে। করোনার সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেয়েছে অনেক মূল্যবান প্রাণ।
তিনি এই কলামে লিখেছেন, বাংলাদেশের হাতে এখন বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ সরকারি পোর্টাল। এ পোর্টাল এমন একটি ইন্টারনেট লিঙ্ক যা সরকারের প্রায় সব সেবা খাত এর আওতায় এসেছে। অনলাইনে এখন অনেক প্রোগামই সংযুক্ত রয়েছে। ফলে ড্রাইভিং লাইসেন্স থেকে শুরু করে পার্সপোর্ট করা- সবই অনলাইনে সম্ভব হচ্ছে।