ইসলামিক সম্মেলন সংস্থা (ওআইসি) রোহিঙ্গাদের জন্য ভাসান চরে বাংলাদেশ সরকারের দেওয়া ভৌত অবকাঠামো ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে।
ওআইসির পাঁচ সদস্যের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল রোববার হাতিয়ার প্রশাসনিক এখতিয়ারের অধীনে মূল ভূখণ্ড থেকে ৩৭ মাইল দূরে অবস্থিত এক লাখ রোহিঙ্গার থাকার সকল সুযোগ-সুবিধাসহ মডেল শহরে রূপ দেওয়া দ্বীপ ভাসান চর পরিদর্শন করে এ সন্তোষ প্রকাশ করেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রাজনীতি বিষয়ক সহকারী মহাসচিব ইউসুফ আলদোবেই’র নেতৃত্বে ওআইসির প্রতিনিধি দল পরিদর্শনকালে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডার ও রোহিঙ্গাদের সঙ্গে ভাসান চরে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন।
আলদোবেই মিয়ানমারের নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের অব্যাহত মানবিক সাহায্য এবং অস্থায়ী আশ্রয় প্রদানের জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রশংসা করেন।
ভাসান চরের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে ওআইসির সহকারী মহাসচিব এ মানবিক সংকট নিরসনে তাদের অব্যাহত সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
পরে প্রতিনিধিদল কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন এবং রোহিঙ্গাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
প্রতিনিধিদলে ছিলেন ইব্রাহিম খায়রাত, মিয়ানমারে ওআইসি মহাসচিবের বিশেষ প্রতিনিধি এল হাবিব বুরানে, মুসলিম সম্প্রদায় ও সংখ্যালঘু বিষয়ক পরিচালক, রাজনৈতিক বিষয়ক বিভাগ এবং ওআইসির সাধারণ সচিবালয়ের কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশ নৌবাহিনী এক লাখ রোহিঙ্গার আশ্রয়ের জন্য ৩ হাজার ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ভাসান চরে আশ্রয়ন-৩ প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে।
২০১৭ সালে মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে সামরিক অভিযানের পর থেকে প্রায় সাড়ে ৭ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে টেকনাফ ও উখিয়ায় আশ্রয় নেয়।
মোট ১২০টি পাকা গুচ্ছ গ্রাম এবং ১২০টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, কৃষি ও মাছ ধরার সুবিধা, খেলার মাঠ রয়েছে এই দ্বীপে। রয়েছে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতি। যদিও জাতিসংঘ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থা জলোচ্ছ্বাস এবং ঘূর্ণিঝড়ের ঝুঁকির কথা উল্লেখ করে এ প্রকল্পের ব্যাপারে অনীহা প্রকাশ করেছে। এই প্রকল্পের চারপাশের বন্যা সুরক্ষা বাঁধ এখন নয় ফুট থেকে ১৯ ফুটে উন্নীত করা হচ্ছে এবং বাড়িগুলো মাটি থেকে চার ফুট ওপরে নির্মিত হচ্ছে।