হুমকির মুখে সরকারি চিনিকল

হুমকির মুখে সরকারি চিনিকল

ব্যবসায়ীদের নানা কূটকৌশলের জালে হুমকির মুখে পড়েছে সরকারি চিনিকলগুলো। আগামী মৌসুমে সবক’টি চিনিকল সচল রাখতে ৫ মাসের মধ্যে প্রায় ৩শ’ কোটি টাকার প্রয়োজন। অথচ বিক্রি হচ্ছে না সরকারি চিনি।

খুচরা বাজারের চেয়ে দাম বেশি হওয়ায় চিনি উত্তোলন বন্ধ করে দিয়েছে চিনি ও খাদ্যশিল্প কর্পোরেশনের ডিলাররা। এমনকি এবার রোজায় তারা চিনি বিক্রি বন্ধ র‍াখছে।

খোলা বাজারে ৫২ টাকায় চিনি পাওয়া যাচ্ছে এখন। ফলে কেজি প্রতি ৮ টাকা বেশি দিয়ে ৬০ টাকা দরে সরকারি চিনি কিনছে না ক্রেতারা।

ডিলার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বাংলানিউজকে বলেন, সরকারের রিজার্ভে ৮/৯শ’ কোটি টাকার চিনি রয়েছে। আমরা চিনি বিক্রি করতে চাই। কিন্তু যেখানে বাজারে চিনির দাম কমছে সেখানে চিনির মূল্য কেন বাড়িয়ে রাখা হচ্ছে তা আমি বুঝতে পারছিনা।

তিনি বলেন, আমাদের জন্য প্রতিমাসে ৫৫ টাকা কেজি দরে ডিলার প্রতি তিন টন চিনি বরাদ্দ দেয়া আছে। কিন্তু বাজারে খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৫২ টাকা কেজি। এখন  চিনি উত্তোলন করলে ৩ টনে ২০ হাজার টাকা ক্ষতি হবে। আবার চিনি উত্তোলন না করলে প্রতিমাসে ডিলারদের জমা টাকা থেকে ৬শ’ টাকা করে কেটে নেয়া হচ্ছে।

বাবুল আরও বলেন, চিনি ও খাদ্যশিল্প কর্পোরেশনের অধীনে আমরা ৫ হাজার ডিলার রয়েছি। আমাদের ৫০ কোটি টাকা এফডিআর করা আছে। এই টাকা থেকে কর্পোরেশন মাসে ৫০ লাখ টাকা লাভ করে। আমাদেরও লাভ করতে দেয়া উচিৎ বলে আমি মনে করি।

সরকারি চিনিকলের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে জানতে চাইলে বলেন, যদি বাজার দরের সঙ্গে সমন্বয় করে চিনি বিক্রি করা হয়, তাহলে চিনিকল আবার সচল করা সম্ভব।

তবে চিনি ও খাদ্যশিল্প কর্পোরেশন এ বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি বলে জানান তিনি।

অন্যদিকে বুধবার শিল্প মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া বলেন, আসন্ন রমজানে চিনির বাজার স্থিতিশীল রাখতে ৭৫ হাজার মেট্রিক টন চিনি আমদানি করেছে সরকার।

তাই সরকারকে বিপাকে ফেলতেই ইচ্ছাকৃতভাবে খুচরা বাজারে কমদামে চিনি বিক্রি করা হচ্ছে বলে অনেকে মনে করছেন।

যেখানে আমদানিকারকদের চিনি আমদানি করতে ৬১ টাকা খরচ পড়ছে, সেখানে খুচরা বাজারে ৪৮ টাকা থেকে ৫৩ টাকায় চিনি বিক্রি করা হচ্ছে। এতেই বোঝা যায় সরকারকে বিপাকে ফেলার জন্য একটি চক্র ক্ষতিতে চিনি বিক্রি করছে।

যারা কমদামে বাজারে এখন চিনি বিক্রি করছে, তাদের ধারণা এর মাধ্যমে সরকার চিনি আমদানি বন্ধ করে দেবে। আর পরবর্তীতে তারা পুরো ক্ষতি পুষিয়ে নেবে।

অর্থ বাণিজ্য