‘মানুষের ভালোবাসা ছাড়া বেঁচে থাকার মানে নেই’

‘মানুষের ভালোবাসা ছাড়া বেঁচে থাকার মানে নেই’

মানুষের ভালোবাসা ছাড়া বেঁচে থাকার মানে নেই। এ কথা বলেছেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নান খান।

তিনি বলেন, “কোটি কোটি টাকা খরচ করে যারা নির্বাচন করেন, তারা এলাকার উন্নয়নে অবদান রাখেন না। তারা কেবল তাদের পকেট ভারি করার চেষ্টায় মগ্ন থাকেন। আমি নির্বাচনে কোনো টাকা খরচ করিনি, মানুষের জন্য অগাধ ভালোবাসা দিয়েছি। মানুষের কাছ থেকেও আমি সীমাহীন ভালোবাসা পেয়েছি। আমি মনে করি, মানুষের ভালোবাসা ছাড়া বেঁচে থাকার কোনো মানে নেই।”

বুধবার দোহারের জয়পাড়া কলেজ মাঠে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন আয়োজিত গণসংবর্ধনা ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘লিডার ইন ডেভেলপমেন্ট’ সম্মাননা অর্জন করায় তাকে এ সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।

অ্যাড. আব্দুল মান্নান বলেন, “নেতৃত্ব মানে হচ্ছে, মানুষের জন্য কাজ করা, দেশের জন্য কাজ করা। আমি আপনাদের ভোটে নির্বাচিত হয়ে মানুষের জন্য নিরলস কাজ করে যাচ্ছি। বিগত সরকারের সময় বিএনপি-জামায়াতের লোকেরা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ওপর নির্বিচারে নির্যাতন চালিয়েছে। জাতীয় শোকদিবস অনুষ্ঠানের খাবার পদ্মার পানিতে ফেলে  দিয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ কখনোই বিরোধীদলের নেতা-কর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দেয়নি। তাদের হয়রানি করেনি।” এ ব্যাপারে তিনি বিরোধীদলকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেন, যারা অতীতে মিথ্যা মামলা দিয়েছে ও অন্যায়ভাবে নির্যাতন করেছে, তাদের দেখে নেওয়া হবে। ভোটের মাধ্যমে জনগণ বুঝিয়ে দিয়েছে, অন্যায় করে ক্ষমতায় থাকা যায় না। ভবিষ্যতেও মানুষ ভোটের মাধ্যমে জবাব দেবে।

পদ্মাসেতুর নির্মাণকাজ নিয়ে আব্দুল মান্নান খান বলেন, “পদ্মাসেতুর প্রাথমিক কাজ  নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই শুরু হবে। আমার সঙ্গে জাপানের এক মন্ত্রীর কথা হয়েছে। তারাও পদ্মাসেতুতে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। পদ্মাসেতুর নির্মাণকাজ নিয়ে কোনো চক্রান্ত করতে দেওয়া হবে না।”

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম বাবুলের সভাপতিত্বে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজির আহমেদ এমপি, প্রতিমন্ত্রীর সহধর্মিনী হাসিনা মান্নান, সুপ্রিম কোট আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক স.ম রেজাউল করিম, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব আব্দুল জলিল ভুঁইয়া, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আব্দুল বাতেন মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক নাসির উদ্দিন ঝিলু, আওয়ামী লীগ নেতা হাশেম আলী হাসু, অ্যাড. জামাল উদ্দিন জামান, ফজলুল হক ফজলু প্রমুখ।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স. ম রেজাউল করিম বলেন, “তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় বড় বড় অনেক নেতা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন। অনেক নেতাই শেখ হাসিনাকে মাইনাস করে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্নে বিভোর ছিলেন। কিন্তু আমরা সেই ষড়যন্ত্র বানচাল করে দিয়েছি। ভবিষ্যতেও এই ধরণের সব অপচেষ্টার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।”

ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব আব্দুল জলিল ভূঁইয়া বলেন, “এদেশের কিছু কুচক্রী বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে হাত মিলিয়ে পদ্মাসেতুর নির্মাণকাজ বন্ধ করে দিতে চেয়েছে। আমরা সেই ষড়যন্ত্র বাস্তবায়িত হতে দেব না। পদ্মাসেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করে তাদের দেখিয়ে দিতে হবে বাঙালি জাতি সব পারে।”

প্রতিমন্ত্রীকে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, কৃষকলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ, ছাত্রলীগ ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ফুল ও স্মারক দিয়ে সম্মাননা জানায়।

প্রতিমন্ত্রী আব্দুল মান্নান খানের সংবর্ধনা উপলক্ষে স্থানীয় জয়পাড়া কলেজ মাঠে সকাল থেকেই বিভিন্ন ইউনিয়নের নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে জড়ো হতে থাকেন। বিকেল হতে হতে পুরো কলেজ প্রাঙ্গণ মানুষের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে। রাস্তার দু’পাশে দাঁড়িয়ে উচ্ছ্বসিত জনতা ফুলেল শুভেচ্ছা জানায় প্রতিমন্ত্রী ও তার সঙ্গীদের।

সন্ধ্যার পরে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সঙ্গীতশিল্পী মিলা সঙ্গীত পরিবেশন করেন।

রাজনীতি