ভূমধ্যসাগরে জলতেষ্টায় ৫৪ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু

ভূমধ্যসাগরে জলতেষ্টায় ৫৪ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু

লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার পথে ৫৪ জন আশ্রয়সন্ধানী মানুষ ভূমধ্যসাগরে জলতেষ্টায় মারা গেছে। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর ওই যাত্রীদের বেঁচে যাওয়া একমাত্র ব্যক্তির বরাত দিয়ে এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনার খবর জানিয়েছে।

সংস্থাটি জানিয়েছে, জীবিত উদ্ধার হওয়া একমাত্র ব্যক্তি ইরিত্রিয়ার নাগরিক। তিউনিসিয়ার কোস্টগার্ড তাকে গত মঙ্গলবার উদ্ধার করে জার্জিস হাসপাতালে ভর্তি করেছে। এর আগের রাতে স্থানীয় জেলেরা পানির অভাবে মুহূর্ষুঅবস্থায় পরে থাকা ওই ব্যক্তিকে প্রথম দেখতে পেয়ে কর্তৃপক্ষকে খবর দেয়।

উদ্ধারকৃত ইরিত্রিয়ার নাগরিক জানান, জুনের শেষ নাগাদ একটি রবারবোটে  করে তারা লিবিয়া ত্যাগ করেন। তাদের দলে ৫৫ জন ছিলেন যাদের অর্ধেকই ইরিত্রিয়ার নাগরিক।

এ ব্যাপারে জাতিসংঘের মুখপাত্র লরা বলদ্রিনি জানিয়েছেন, উদ্ধার হওয়া ব্যক্তি জানিয়েছেন, সমুদ্রের মধ্যে এক সময় তাদের নৌকায় সমস্যা দেখা দেয়। নৌকার মালিক তাদের পানির বোতল নেওয়ারও অনুমতি দেয়নি। চুপসে যেতে থাকা নৌকা না থামিয়ে সাগরে ভাসিয়ে নেওয়া হয়। এভাবে চলতে চলতে পানির অভাবে এক সময় তারা সবাই দুর্বল হয়ে পড়ে এবং জলতেষ্টায় তাদের মৃত্যু হয়।

ভূমধ্যসাগরের যে অঞ্চলে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে সেখানে অসংখ্য জেলে নৌকা, মালবাহী জাহাজ, নৌবাহিনীর জাহাজ রয়েছে। তারপরও সেখানে এমন ঘটনা কী করে ঘটল তা ভাববার বিষয়। লরা বলছেন, তারা এ মানুষগুলোকে অসহায় এবং মুমূর্ষু অবস্থায় নিষ্ঠুরভাবে ফেলে গেছে বলেই এতগুলো প্রাণ অকাতরে নিঃশেষ হয়ে গেছে।

তৃষ্ণার্ত মানুষেরা নিরুপায় হয়ে সাগরের লবণাক্ত পানি পান করেছে। এতে করে তাদের জলতেষ্টা আরো বেড়ে যাওয়ায় শরীর দ্রুত দুর্বল হয়ে পড়েছে।

উল্লেখ্য, উত্তর আফ্রিকা থেকে ইউরোপের দক্ষিণাঞ্চলে আশ্রয়ের সন্ধানে যেতে গিয়ে সাগরে দুর্ঘটনা কবলিত হওয়ার ঘটনা অহরহই ঘটে। অতিরিক্ত যাত্রী বেশিরভাগ সময়ই ছোট, দুর্বল নৌকায় করে সাগর পাড়ি দিতে গিয়ে এমন দুর্ঘটনায় পড়ে।

ইউএনএইচসিআর এর হিসাবে, চলতি বছরেই লিবিয়া থেকে ইউরোপ যাওয়ার পথে ১৭০ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। ২০১২ সালের শুরু থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ১৩শ’ মানুষ ইতালিতে এবং এক হাজার মানুষ মাল্টায় সুস্থ শরীরে পৌঁছতে সক্ষম হয়েছে।

আন্তর্জাতিক