তৃতীয়দিনের মতো বিক্ষোভে কার্যত উত্তাল মিয়ানমার। সোমবার দেশটির শহরে শহরে জড়ো হয়েছেন অভ্যুত্থানবিরোধী হাজার হাজার বিক্ষোভকারী। তারা বলছেন, প্রায় এক সপ্তাহ ধরে আটক অং সান সু চিকে মুক্তি এবং রাষ্ট্র ক্ষমতা থেকে সামরিক বাহিনীর অপসারণ দাবিতে দেশব্যাপী এ আন্দোলন।
গত ১ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ এশিয়ার দেশটিতে সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে এর বিরুদ্ধে সব নাগরিককে এক হওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে এ আন্দোলন। ইতোমধ্যে প্রতিবাদে যোগও দিয়েছে অনেকে। বলা হচ্ছে, আরও বড় আকারে এবং সংগঠিত হচ্ছে অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভ।
সোমবার বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুনের আন্দোলনে যোগ দিয়েছে বৌদ্ধ ভিক্ষুদেরও একটি দল। তাদের সঙ্গে ভ্যানগার্ড হাতে রয়েছেন শত শত শ্রমিক এবং শিক্ষার্থীরাও। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, আন্দোলনকারীরা সু চির ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) লাল রঙের ব্যানার এবং বৌদ্ধদের বহু রঙের পতাকা উড়াচ্ছেন।
For the third day of protesting against army coup in #Myanmar – a group of Buddhist joined the march to downtown Yangon surrounded by hundreds of young protesters.
Credit: @Myanmar_Now_Eng#WhatsHappeningInMyanmar #Burmacoup #Feb8Coup #Burma pic.twitter.com/g8JMB6BJdo
— Jony (@jonydas1137) February 8, 2021
খবরে বলা হয়েছে ‘আমাদের নেতাদের মুক্তি দিন, আমাদের ভোটকে সম্মান করুন, সামরিক অভ্যুত্থান প্রত্যাখ্যান করুন’ শ্লোগানে প্রতিবাদের জোয়ার উঠেছে মিয়ানমারে। ‘গণতন্ত্রকে বাঁচান এবং স্বৈরশাসনকে না বলুন’ এই শ্লোগানও দিচ্ছে অনেকে। আন্দোলনকারীদের অনেকেই আবার কালো পোশাক পরেও বিক্ষোভ প্রদর্শন করছে।
এর আগে দেশটিতে দ্বিতীয়দিনের মতো বড় বিক্ষোভ হয় রোববার। এ দিন ২০০৭ সালে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের নেতৃত্বাধীন ‘জাফরান বিপ্লবের’ পরে অভ্যুত্থানবিরোধী সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ সমাবেশ হয়।
‘ইয়াঙ্গুনের প্রতিটি কোণ থেকে দয়া করে শান্তিপূর্ণভাবে বেরিয়ে আসুন এবং জনগণের সভায় যোগ দিন’ ফেসবুকে এ আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির অ্যাক্টিভিস্ট আই থিনজার মাং। একইসঙ্গে জান্তাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নেটওয়ার্ক বন্ধ করা প্রসঙ্গে তিনি বলছেন, প্রতিবন্ধকতা এড়িয়ে সমাবেশ করতে হবে। ভিপিএন নেটওয়ার্কগুলো ব্যবহারের অনুরোধ করেছেন তিনি।
এদিকে, হাজার হাজার মানুষ দেশটির দক্ষিণ-পূর্বের উপকূলীয় শহর দাউই এবং উত্তরের কাচিন রাজ্যের রাজধানীতে অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভে পদযাত্রা করেছেন। তাদের অনেকেই কালো পোশাক পরে রয়েছে।
১ ফেব্রুয়ারি ভোরে অং সান সু চি, উইন মিন্টসহ দলের সিনিয়র নেতাদের আটক করে জরুরি অবস্থা জারি করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। এরপর থেকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর কমান্ডার-ইন-চিফ এবং সেনাপ্রধান মিন অং লাইং।
এর প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে আসছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। সু চি, শতাধিক এমপিসহ সব রাজবন্দির মুক্তির দাবি জানিয়েছে জাতিসংঘসহ বিশ্ব সম্প্রদায়। এদিকে, পরিস্থিতির পরিবর্তন না হলে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।