সিরিয়ায় চলমান অস্থিরতার মধ্যে রাশিয়া দেশটিতে নতুন করে কোনো অস্ত্র সরবরাহ করবে না বলে জানিয়েছে দেশটির একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা। রাশিয়ার অস্ত্র বাণিজ্যের তদারকিতে নিযুক্ত রাষ্ট্রীয় সংস্থার এক শীর্ষ কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছে বলে দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম।
রাশিয়ার অস্ত্র বাণিজ্য তদারকি প্রতিষ্ঠান ফেডারেল সার্ভিস ফর মিলিটারি টেকনিক্যাল কো অপারেশনের সহকারী প্রধান ভাসিস্লাভ জিরকান এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘শুধু রাশিয়া নয়, বিশ্বের অন্যান্য দেশও সিরিয়ার বর্তমান পরিস্থিতি সর্ম্পকে অবগত রয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা সিরিয়ায় নতুন অস্ত্র সরবরাহের বিষয়ে কোন কথা বলতে চাই না।’
সিরিয়ায় অস্ত্র সরবরাহের ব্যাপারে জিরকান বলেন, ‘যতদিন পর্যন্ত সিরিয়ার পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হবে ততদিন পর্যন্ত সিরিয়ায় নতুন অস্ত্র সরবরাহ করবে না রাশিয়া।’
এছাড়া রাশিয়া সিরিয়াকে তিন ডজন ইয়াক-১৩০ যুদ্ধ বিমান সরবরাহ করবে না বলেও এ সময় জানান তিনি। উল্লেখ্য, সিরিয়া তিন ডজন ইয়াক-১৩০ বিমান সরবরাহের জন্য রাশিয়ার সঙ্গে ৫৫ কোটি ডলারের চুক্তি করেছিলো।
তবে রাশিয়া সিরিয়াতে সব ধরনের অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করবে নাকি শুধুমাত্র ‘নতুন ধরণের অস্ত্র’ সরবরাহ বন্ধ রাখবে সেই বিষয়টি তার বক্তব্যে পরিষ্কার হয়নি বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা। পূর্বের চুক্তি অনুযায়ী সিরিয়াতে রাশিয়া এখনও অস্ত্র সরবরাহ করছে বলে ধারণা করছে পশ্চিমা বিশ্লেষকরা।
তবে যদি রাশিয়া সত্যিই সত্যিই সিরিয়াতে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করে, তবে এটি হবে প্রেসিডেন্ট বাসার-আল-আসাদের জন্য একটি বড় ধরণের ধাক্কা। গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য জনগনের উপর দমন পীড়ণ চালিয়ে যাচ্ছে বাসার আল আসাদ সরকার।
সিরিয়ায় অস্ত্র সরবরাহকারী দেশগুলোর মধ্যে রাশিয়া অন্যতম ।সোভিয়েত ইউনিয়নের অস্তিত্বের সময় থেকেই সিরিয়ায় অস্ত্র সরবরাহ করে আসছে রাশিয়া। সরকার বিরোধীদের দমনের জন্য সম্প্রতি সিরিয়া অস্ত্র ক্রয়ের পরিমান বাড়িয়ে দিয়েছে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা।
একটি গবেষণা সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০০৭ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত রাশিয়ার কাছ থেকে ৪শ’৭০ কোটি ডলারের অস্ত্র ক্রয় করেছে সিরিয়া।পক্ষান্তরে ২০০৩ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত এই ক্রয়ের পরিমান ছিল ২শ’১০ কোটি ডলার।
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন অভিযোগ করেন, রাশিয়ার অস্ত্র সরবরাহের কারণে বাসার-আল-আসাদ দমনপীড়ণের মাধ্যমে সিরিয়ায় তার আধিপত্য বজায় রাখতে সক্ষম হচ্ছে।
তবে সরবরাহ করা অস্ত্র সিরিয়ার বেসামরিক লোকদের বিরুদ্ধে ব্যবহারের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে রাশিয়া।