পররাষ্ট্র সচিব মিজারুল কায়েস বলেছেন, “তিস্তা নিয়ে এরইমধ্যে যে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে সেটি ভারতের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। এ নিয়ে আমরা নাক গলাতে চাই না, তবে তাদের অভ্যন্তরীণ সমস্যা নিরসনে সময় দিতে চাই।”
সোমবার বিকাল সাড়ে ৫টায় বাংলানিউজকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাতকারে তিনি এ কথা বলেন।
মিজারুল কায়েস বলেন, “বাংলাদেশ ও ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের বৈঠকে বহুল আলোচিত তিস্তাসহ যৌথ নদ-নদীর পানি বণ্টনের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেবে ঢাকা। আগামী ২৪ জুলাই এ বৈঠক হবে। আসন্ন বৈঠকে দু’দেশের প্রধানমন্ত্রীর সফরের বিষয়গুলোও পর্যালোচনা করা হবে।”
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, “দু’দেশের মধ্যে এ পর্যন্ত হওয়া চুক্তিগুলো হচ্ছে দ্বিপক্ষীয়। দ্বিপাক্ষিক স্বার্থের প্রয়োজনেই এতে অন্য দেশগুলোকে সংযুক্ত করার একটি মেকানিজম তৈরির চিন্তা করা হচ্ছে।”
এক্ষেত্রে নেপাল ও ভুটানের প্রসঙ্গও টানেন মিজারুল কায়েস।
তিনি বলেন, “এক বিলিয়ন ডলারের ভারতীয় ঋণের বিভিন্ন প্রকল্পের অগ্রগতি ও বাস্তবায়ন আলোচনায় প্রাধান্য পাবে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর কাছ থেকে ক্ষতিয়ান নেওয়া হয়েছে।”
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, “প্রথম দিকে এই ঋণের ছাড় নিয়ে শুরু হওয়া জটিলতা নিরসন হয়েছে। এখন প্রায় ২০০ মিলিয়ন ডলারের বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে।”
তিস্তা প্রসঙ্গে সচিব বলেন, “শুধু তিস্তাই নয়, যৌথ নদীর পানি বণ্টনের বিষয়ে আলোচনা হবে। তিস্তার ক্ষেত্রে একটি অন্তবর্তীকালীন চুক্তির পক্ষে বাংলাদেশ। কারণ, এ মুহূর্তে আমাদের কাছে ১৯৭৯ সালের তথ্য-উপাত্ত রয়েছে। আর দীর্ঘমেয়াদে চুক্তি করার জন্য তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের জন্যই এই অন্তবর্তীকালীন চুক্তি করা দরকার। এরপর অন্তবর্তীকালে সংগৃহীত তথ্য-উপাত্তের উপর ভিত্তি করেই স্থায়ী বা দীর্ঘমেয়াদী চুক্তিতে যাওয়া উচিত।”
ভারতের আন্তঃনদী প্রকল্প সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “এটিও তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। কারণ, ভারতের পক্ষ থেকে আমাদের জানানো হয়েছে- হিমালয় থেকে ভারত হয়ে বাংলাদেশে আসা নদীগুলোতে কোন আন্তঃনদী সংযোগ করবে না প্রতিবেশী দেশটি। যেসব নদ-নদীগুলো ভারতে উৎপত্তি হয়ে ভারতেই শেষ হয়েছে সেগুলোই আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্পের আওতায়। ওইসব নদীতে সংযোগ স্থাপন করা হলে বাংলাদেশ বা অন্য কোন দেশের ওপর এর প্রভাব পড়বে না।”
তিনি আরও বলেন, “এছাড়াও বৈঠকে ভারতীয় বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের শুল্কমুক্ত ও অবাধ প্রবেশাধিকার ও সীমান্ত সমস্যাসহ অমীমাংসিত ইস্যুগুলো আলোচনা হবে।”
ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহনের ঢাকা সফরের পর এই প্রথম দু’দেশের পররাষ্ট্র সচিবরা দিল্লিতে বৈঠকে বসছেন। আর এতে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেবেন মিজারুল। ভারতের নেতৃত্ব দেবেন তাদের নতুন পররাষ্ট্র সচিব রঞ্জন মাথাই।