মিসরে নির্বাচিত সংসদ ভেঙে দেওয়ার ইস্যুতে প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসি এবং সুপ্রিমকোর্ট এবার মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছেন। গত রোববার প্রেসিডেন্টের সংসদ পুনর্জীবিত করার নির্দেশ সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে সর্বোচ্চ আদালত।
সোমবার সুপ্রিমকোর্ট বলেছে, গত মাসে সংসদ ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে দেওয়া তাদের রায় অবশ্যই বহাল থাকবে।
এদিকে প্রেসিডেন্ট মুরসির ডিক্রি জারির পর পার্লামেন্টের স্পিকার সাদ আল কাতানি আগামী মঙ্গলবার বিকেলে সংসদ অধিবেশন ডেকে সব সাংসদদের অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। সাংসদদের প্রবেশের অনুমতি দিয়ে সংসদের বাইরে মোতায়েন সেনা সদস্যদেরও সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
রোববার প্রেসিডেন্ট মুরসি বলেন, “নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগে পর্যন্ত সংসদ কার্যকর রাখা উচিৎ।” ডিক্রিতে প্রেসিডেন্ট আরো বলেছেন, “নতুন সংবিধান গণভোটের মাধ্যমে পাস হওয়ার পর ৬০ দিনের মধ্যে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।”
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে গণবিক্ষোভের মুখে স্বৈরশাসক হোসনি মোবারকের পতনের পর গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রথম সংসদে মুসলিম ব্রাদারহুড বেশিরভাগ আসন পায়। প্রেসিডেন্ট মুরসিও এই সংগঠনের নেতা।
গত মাসে কিছু নির্বাচিত সাংসদকে অবৈধ ঘোষণা করে পুরো সংবিধানই ভেঙে দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে রায় দেয় সুপ্রিমকোর্ট। পরে ক্ষমতাসীন সুপ্রিম কাউন্সিল অব আর্মড ফোর্সেস (এসিএএফ) সাংসদদের সংসদ ভবনে প্রবেশ নিষিদ্ধ করে।
রোববার প্রেসিডেন্ট সংসদ পুনর্জীবিত করার নির্দেশ দানের প্রতিক্রিয়ায় মিসরের সর্বোচ্চ সাংবিধানিক আদালদ সোমবার বৈঠক করে। বৈঠক শেষে আদালত বলে, তাদের রায় এবং পরবর্তী সিদ্ধান্ত “চূড়ান্ত এবং এ রায় আপিল অযোগ্য”।
এর আগে রোববার প্রেসিডেন্টের নির্দেশের পর সুপ্রিম কাউন্সিল জরুরি বৈঠকে বসে। এর ধারাবাহিকতায় সোমবার ক্ষমতাসীন জেনারেলদের পক্ষেই অবস্থান নিল সর্বোচ্চ আদালত।
মিসরের ইতিহাসে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত এ প্রথম প্রেসিডেন্টের আদেশকে মোটাদাগে বিচারবিভাগ এবং সেনা বাহিনীর বিরুদ্ধে একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
অবশ্য প্রেসিডেন্ট মুরসি এবং মিলিটারি সুপ্রিম কাউন্সিলের প্রধান ফিল্ড মার্শাল হুসেইন তানতাবির মধ্যে আপাত দ্বন্দ্ব স্পষ্ট হলেও সোমবার তারা সামরিক ক্যাডেটদের স্নাতক ডিগ্রি প্রদান অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দেখা গেছে।