আফগানিস্তানে ন্যাটোর রসদ সরবরাহ পথ খুলে দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে রাজধানীমুখী লং মার্চ শুরু করেছে পাকিস্তানের মানুষ। রোববার লাহোরের কেন্দ্রস্থল থেকে বিক্ষোভ র্যালি শুরু হয়। ধর্মীয় ও রাজনৈতিক গ্রুপের নেতাকর্মীসহ হাজার হাজার সাধারণ মানুষ বাস, কার এবং মোটরসাইকেলে করে র্যালিতে অংশ নিয়েছে।
রাজধানীমুখী এ লং মার্চের আয়োজন করেছে ৪০টিরও বেশি ধর্মীয় ও রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে গঠিত পাকিস্তান প্রতিরক্ষা পরিষদ।
এদিন শহরের শেষ প্রান্তে অপেক্ষমান আরো কয়েক হাজার মানুষের সঙ্গে মিলে র্যালিটি রাজধানী ইসলামাবাদের দিকে যাত্রা করে।
পুলিশ কর্মকর্তা বাবর বখত জানিয়েছেন, প্রায় দুইশ’টি যানবাহনে করে আট হাজারের মতো মানুষ লাহোর ত্যাগ করেছে।
ইসলামাবাদের দিকে ৩শ’ কিলোমিটার যাত্রা শেষে প্রতিবাদীরা সোমবার পার্লামেন্ট ভবনের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শনের পরিকল্পনা করেছে।
বিক্ষোভকারীদের একজন নেতা মাওলানা সামিউল হক বলেন, “এভাবে রাজপথে নেমে এসে মানুষ আমেরিকার প্রতি তাদের ঘৃণা প্রদর্শন করছে।”
এ প্রতিবাদ র্যালিতে যোগ দিয়েছেন- নিষিদ্ধ ঘোষিত লস্কর-ই-তৈয়বার প্রতিষ্ঠাতা হাফিজ সাইয়েদ, অবসরপ্রাপ্ত গোয়েন্দা প্রধান হামিদ গুল এবং জামাআত-ই-ইসলামির নেতা সাইয়েদ মনোয়ার হাসান।
উল্লেখ্য, গত বছরের নভেম্বরে মার্কিন বিমান হামলায় ২৪ পাকিস্তানি সেনা নিহত হওয়ার পর প্রতিবাদে ন্যাটোর রসদ সরবরাহ পথ বন্ধ করে দেয় পাকিস্তান।
এরপর কয়েক মাস ধরে আলোচনার পর গত সপ্তাহে ওই সরবরাহ পথ খুলে দিতে রাজি হয়েছে ইসলামাবাদ। পাকিস্তানের দাবি অনুযায়ী মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন নভেম্বরের ঘটনার জন্য ক্ষমাপ্রার্থনার পর এ সমঝোতা হয়।
গত বছরের ২ মে পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে মার্কিন অভিযানে আল কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেন নিহত হওয়ার ঘটনায় পাক-মার্কিন সম্পর্কে টানাপোড়েন শুরু হয়। পাকিস্তানের মাটিতে যুক্তরাষ্ট্রের এ একক সিদ্ধান্তের অভিযানকে সার্বভৌমত্বের অবমাননা বলে বর্ণনা করে পাকিস্তানিরা।
এরপর নভেম্বরের ঘটনা পাক-মার্কিন সম্পর্ককে আরো জটিল করে তোলে। সাধারণ মানুষও যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করে।
এছাড়া, পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমে উপজাতি অধ্যুষিত অঞ্চলে ২০০৪ সাল থেকে মার্কিন ড্রোন হামলায় এযাবৎ বহু বেসামরিক মানুষ নিহত হওয়ায় পাকিস্তানি জনগণের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ রয়েছে।