৭০ হাজার গৃহহীন পরিবার পেল পাকা বাড়ি

৭০ হাজার গৃহহীন পরিবার পেল পাকা বাড়ি

‘মুজিববর্ষ’ উপলক্ষে সব ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে সরকারের পক্ষ থেকে ঘর সরবরাহের প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে শনিবার আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় সারা দেশে প্রায় ৭০ হাজার (৬৬ হাজার ১৮৯টি) ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মধ্যে ঘর বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজ শনিবার (২৩ জানুয়ারি) সকালে প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ উদ্বোধনী কর্মসূচিতে যোগ দেন এবং দেশের ৪৯২ উপজেলার সাথে সংযুক্ত হন।

ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমি ও ঘর প্রদান করতে পারা নিজের সবচেয়ে বড় আনন্দের বলে এ সময় জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে আমার অত্যন্ত আনন্দের দিন। গৃহহীন পরিবারকে গৃহ দিতে পারছি, এটি আমার সবচেয়ে আনন্দের। আমার বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মানুষের কথাই ভাবতেন। আমাদের পরিবারের লোকদের চেয়ে তিনি গরীব অসহায় মানুষদের নিয়ে বেশি ভাবতেন এবং কাজ করেছেন। এই গৃহ প্রদান কার্যক্রম তাঁরই শুরু করা।’

এ সময় লাইভে যুক্ত ছিল খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলা, চাপাইনবাবগঞ্জ সদর, নীলফামারীর সৈয়দপুর ও হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলা। এছাড়াও দেশের সব উপজেলা অনলাইনে যুক্ত হয়।

মুজিববর্ষ উপলক্ষে আশ্রয়ন প্রকল্প-২ এর আওতায় প্রায় নয় লাখ মানুষকে পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে পাকাঘর উপহার দেয়া হচ্ছে। প্রথম পর্যায়ে ঘর পেল প্রায় ৭০ হাজার পরিবার। আগামী মাসে আরও ১ লাখ পরিবার বাড়ি পাবে। অনুষ্ঠানে আশ্রয়ন প্রকল্পের তৈরি ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।

গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারের জন্য ১ হাজার ১৬৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬৬ হাজার ১৮৯টি বাড়ি নির্মাণ করেছে সরকার। এটি এমন এক পদক্ষেপ যা প্রথমবারের মতো দেখল বিশ্ব।

বাড়িগুলোর প্রতিটি ইউনিটে দুটি কক্ষ, একটি রান্নাঘর, একটি টয়লেট এবং বারান্দা রয়েছে, যা নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা।

আগামী মাসে দরিদ্রদের মাঝে আরও এক লাখ বাড়ি বিতরণ করা হবে।

আজ বাড়ির পাশাপাশি ৬৬ হাজার ১৮৯টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের প্রত্যেকের কাছেই হস্তান্তর করা হয়েছে তাদের বাড়ির জমির মালিকানার দলিলও। বাড়ির সবগুলোই নির্মিত হয়েছে সরকারি খাস জমিতে।

পাশাপাশি, মুজিববর্ষের সময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ প্রকল্পের অধীনে ২১ জেলার ৩৬ উপজেলায় ৪৪টি প্রকল্পের আওতায় ৭৪৩টি ব্যারাক নির্মাণ করে ৩৭১৫টি পরিবারকে পুনর্বাসিত করা হবে।

২০২০ সালে ৮ লাখ ৮৫ হাজার ৬২২টি পরিবারের তালিকা তৈরি করা হয়। যার মধ্যে ২ লাখ ৯৩ হাজার ৩৬১টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার এবং ৫ লাখ ৯২ হাজার ২৬১টি পরিবার রয়েছে যাদের ১ থেকে ১০ শতক জমি আছে কিন্তু আবাসন ব্যবস্থা নেই।

আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে ১৯৯৭ থেকে ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩ লাখ ২০ হাজার ৫৮টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসিত করা হয়েছে।

আশ্রায়ণ-২ প্রকল্পের সময়কাল জুলাই ২০১০ থেকে জুন ২০২২ পর্যন্ত। এই সময়ের মধ্যে ৪৮৪০.২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ২ লাখ ৫০ হাজার ভূমিহীন, গৃহহীন ও বাস্তুচ্যুত পরিবারকে পুনর্বাসনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।

এটি, জুলাই ২০১০ থেকে ২০১৯ সালের জুন পর্যন্ত সারা দেশে ১ লাখ ৯২ হাজার ২৭৭টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসিত করেছে।

মোট ৪৮ হাজার ৫০০ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ব্যারাকে পুনর্বাসিত করা হয়েছে এবং ১ লাখ ৪৩ হাজার ৭৭৭টি পরিবার যাদের নিজস্ব জমি রয়েছে (১ থেকে ১০ শতাংশ) কিন্তু বাড়ি নির্মাণের সামর্থ নেই তাদের আধা-ব্যারাক, বিশেষভাবে নকশা করা বাড়িগুলো পুনর্বাসন করা হয়েছে।

সরকার আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় গৃহহীন এবং ভূমিহীন পরিবারের জন্য আবাসন ব্যবস্থা করছে, যা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় পরিচালিত একটি আবাসন প্রকল্প।

২ লাখ ৯৩ হাজার ৩৬১টি গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারের পাশাপাশি সারা দেশে ৫ লাখ ৯২ হাজার ২৬১টি গৃহহীন পরিবারকে তালিকাভুক্ত করেছে সরকার।

বাংলাদেশ শীর্ষ খবর