বাজেট অধিবেশন শেষ শিগগিরই বিরোধী দল সংসদে যোগ দেবে: আশা স্পিকারের

বাজেট অধিবেশন শেষ শিগগিরই বিরোধী দল সংসদে যোগ দেবে: আশা স্পিকারের

বিরোধী দলের টানা বর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো চলতি নবম নবম জাতীয় সংসদের ত্রয়োদশ তথা বাজেট অধিবেশন।

রোববার সন্ধ্যায় সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমাপনী বক্তব্যের পর স্পিকার আবদুল হামিদ অ্যাডভোকেট রাষ্ট্রপতির আদেশ অবহিত করে সংসদ অধিবেশন সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

প্রধান বিরোধী দলের অনুপস্থিতিতে গত ২৭ মে শুরু এ বাজেট অধিবেশন শুরু হয়। ৭ জুন বর্তমান মহাজোট সরকারের এক লাখ ৯১ হাজার ৭৩৮ কোটি টাকার চতুর্থ বাজেট উত্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

২১৩ জন সংসদ সদস্যের ৪৬ ঘণ্টা ৩০ মিনিট বক্তব্যের পর গত ২৮ জুন ২০১২-২০১৩ অর্থবছরের বাজেট পাস হয়। এবারের বাজেট অধিবেশনে মোট কার্যদিবস ছিল ২৯টি। বাজেটের ওপর দীর্ঘ আলোচনা ছাড়াও এ অধিবেশনে ৩১টি সরকারি বিলের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ১৫টি বিল পাস হয়েছে।

এবার অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর জন্য ১৮১টি প্রশ্ন ছিলো। এরমধ্যে প্রধানমন্ত্রী উত্তর দিয়েছেন ৬৮টি প্রশ্নের। এছাড়া অন্যান্য মন্ত্রীদের জন্য প্রশ্ন ছিলো ৩ হাজার ৫০৩টি। এর মধ্যে মন্ত্রীরা উত্তর দিয়েছেন ২ হাজার ১৪৮টির।

সংসদ-আদালত বিতর্ক

তবে সমাপ্ত হওয়া বাজেট অধিবেশন বেশকিছু ইস্যুতে দফায় দফায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল। বিশেষ করে হাইকোর্টের একজন বিচারপতির স্পিকারকে কটাক্ষ করে কিছু মন্তব্যের প্রেক্ষিতে সংসদ সদস্যরা ওই বিচারপতিকে অপসারণের দাবি তোলেন। এ নিয়ে বেশকিছু দিন আলোচনার শীর্ষে ছিল এ ইস্যুটি। তবে স্পিকার তাঁর রুলিংয়ের মাধ্যমে জুডিশিয়াল কাউন্সিল করে ওই বিচারপতিকে অপসারণের দাবি নাকচ করে দিয়ে বিষয়টি সন্তোষজনক সমাধানের দায়িত্ব দেন প্রধান বিচারপতির কাছে।

এছাড়া বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের বক্তব্য একটি সংবাদমাধ্যমে ভুলভাবে প্রকাশিত হয়। ওই ভুল রিপোর্ট নিয়ে কয়েকজন সিনিয়র সংসদ সদস্য আবু সায়ীদের কঠোর সমালোচনা করে বক্তব্যে দেন। এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে ব্যাপক অসন্তোষ সৃষ্টি করলে স্পিকার আবদুল হামিদ অ্যাডভোকেট সংসদের পক্ষ থেকে আবু সায়ীদের প্রতি দুঃখপ্রকাশ করেন এবং তাঁর বিরুদ্ধে দেওয়া সব অসংসদীয় কার্যবিবরণী থেকে এক্সপাঞ্জের নির্দেশ দেন।

শিগগিরই সংসদে আসবে বিরোধীদল: স্পিকার

সংসদ অধিবেশনের সমাপ্তি ঘোষণার আগে স্পিকার আবদুল হামিদ খুব শিগগিরই বিরোধী দল সংসদ অধিবেশনে যোগ দিয়ে জনগণের দেওয়া দায়িত্ব পালন করবে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, “সংসদ প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে বিতর্কের মাধ্যমে। আর বিতর্কের মাধ্যমেই সংসদ বিভিন্ন বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে উপনীত হয়। সংসদীয় বিতর্কে বিরোধী দলই মুখ্য ভূমিকা পালন করে থাকে। এটা দুঃখজনক হলেও সত্য যে, আমাদের প্রধান বিরোধী দল এবারের বাজেট অধিবেশনে যোগ দেয়নি।”

তিনি বলেন, “প্রধান বিরোধী দল বাজেট আলোচনায় অংশ নিলে হয়তোবা বাজেটের ছোটখাট ত্রুটি-বিচ্যুতিগুলো আরও বেশি তুলে ধরতে পারতো। এতে দেশবাসী উপকৃত হতো। জাতীয় বাজেটে জনকল্যাণে যেসব কর্মসূচি, লক্ষ্যমাত্রা ও আর্থিক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তার ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিক সম্পর্কে প্রধান বিরোধী দলের মূল্যবান মতামত ও প্রস্তাব থেকে জাতি বঞ্চিত হয়েছে।”

বাংলাদেশ