আদালতের রায়ে উচ্ছেদযোগ্য ভাড়াটিয়া স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক। দীর্ঘ ২ বছর ব্যাংকটি তার বনানী শাখার ভবনের মালিককে ভাড়া পরিশোধ না করায় সম্প্রতি ঢাকার অতিরিক্ত জেলা জজ খোন্দকার হাসান মো. ফিরোজ এই রায় দিয়েছেন।
সূত্র বলছে, ২০১০ সালের মে মাস থেকে ব্যাংকটির বনানী শাখার ভবনের মালিককে ভাড়া প্রদান বন্ধ করে। এতে ভাড়া বাবদ তাদের বকেয়া প্রায় ৩৫ লাখ টাকা।
কামাল আতার্তুক এভিনিউয়ের ১৪ নম্বর ভবনের নিচতলায় স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংকের এই শাখা। যার আয়তন ২ হাজার ৮৫০ বর্গফুট।
এদিকে, ভবনের মালিকের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ গত ডিসেম্বরে শেষ হয়ে গেলেও নতুন করে কোনো চুক্তিও করেনি স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক। এর ফলে ভবনের মালিক পিএমপি প্রপার্টিজ লিমিটেড একাধিকবার ভবন ছাড়তে অথবা নতুন করে চুক্তির তাগিদ দিলেও তাতে সাড়া দিচ্ছে না ব্যাংকটি।
সূত্র জানায়, আদালতের রায়ের পর ভবনের মালিকপক্ষ গ্যাস, পানি ও বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে গত বৃহস্পতিবার ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপককে চিঠি দেয়। সেখানে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেওয়া হয়। এতেও সাড়া না পেয়ে শুক্রবার ব্যাংকের পেছনের প্রবেশ পথে তালা লাগিয়ে দেয় পিএমপি প্রপার্টিজ।
সূত্রমতে, রোববার সকালে দুই পক্ষ বৈঠকে বসে। বৈঠকে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড কর্তৃপক্ষ অপরিশোধিত বকেয়া পরিশোধ করতে রাজি হয়েছে বলে পিএমপি কর্তৃপক্ষ জানায়। ভবনের মালিকপক্ষকে এ বিষয়ে দুয়েক দিনের মধ্যে চিঠি দেবে তারা। একই সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন করে চুক্তি করার জন্য অনুরোধ করবে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের বনানী শাখাটির জন্য পিএমপির সঙ্গে ২০০৬ সালের ডিসেম্বর মাসে ৫ বছরের জন্য চুক্তি হয়। ভাড়া নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ টাকা। চুক্তিমতে, ৩৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা অগ্রিম দেয় স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক, যার ৬২ হাজার ৫০০ টাকা প্রতি মাসে ভাড়া হিসেবে সমন্বয় করার কথা।
এদিকে ওই ভবনের জমির মালিকানা নিয়ে উচ্চ আদালতে মামলা থাকায় আদালত রায়ে বলেছেন, যেহেতু জমির মালিকানার বিষয়টি উচ্চ আদালতে নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে, তাই বিবেচ্য হচ্ছে, জমির দখলে কে আছেন। আর ব্যাংকের চুক্তি কার সঙ্গে। যেহেতু চুক্তি পিএমপির সঙ্গে। তাই উচ্চ আদালতের রায় নিষ্পত্তির আগ পর্যন্ত স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক পিএমপিকেই ভাড়া দেবে। তা যেহেতু দেয়নি। তাই স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড খেলাপি ভাড়াটিয়া, উচ্ছেদযোগ্য ভাড়াটিয়া।
এতে আরো বলা হয়, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক আদালতে ভাড়া প্রদানের জন্য বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রকের কাছে মামলা করেছে। তাদের তো নিয়ন্ত্রকের কাছে মামলা করার প্রয়োজন নেই। কারণ জমির মালিক ভাড়া নিতে অস্বীকৃতি জানাননি অথবা অন্যায়ভাবে ভাড়া বাড়াননি।
জানতে চাইলে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের কনজ্যুমার ব্যাংকিং ও জনসংযোগ শাখার প্রধার বিটপী দাশ চৌধুরী প্রথমে মন্তব্য করে অস্বীকৃতি জানান। পরে তিনি বাংলানিউজকে জানান, আদালত যেভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন, আমরা সেভাবে পদক্ষেপ নেবো। এ বিষয়ে আমাদের আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নেবো।
বর্তমানে দখলদার পিএমপি প্রপার্টিজের সঙ্গে চুক্তি নবায়নে যাচ্ছেন কিনা, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, বিয়ষটি এখনই আমরা প্রকাশ করতে চাই না।