ডেমোক্র্যাট জো বাইডেনকে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে স্বীকৃতি দিলেন এতদিন ধরে নভেম্বরের নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ করে আসা দেশটির ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই দ্বিতীয় দফা অভিশংসনের মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনার মধ্যে বৃহস্পতিবার তিনি এ স্বীকৃতি দেন তিনি।
বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল ভবনে ট্রাম্প সমর্থকদের নজিরবিহীন হামলার ঘটনার পর ট্রাম্প ‘নিয়ম মাফিক ক্ষমতা হস্তান্তরেও’ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
বৃহস্পতিবার সকালেও ট্রাম্প নির্বাচনে কারচুপির ভিত্তিহীন অভিযোগ পুনর্ব্যক্ত করে তার জয় ‘চুরি করে নেওয়া হয়েছে’ অভিযোগ করলেও সন্ধ্যায় দেওয়া ভিডিও বার্তায় বাইডেন প্রশাসনের কাছে মসৃণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর নিশ্চিত করার দিকেই এখন তার মনোযোগ থাকবে বলে জানান।
ডেমোক্র্যাট বাইডেন ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিতে যাচ্ছেন।
ট্রাম্প তার বার্তায় বুধবারের সহিংসতারও নিন্দা জানিয়েছেন। বলেছেন, দাঙ্গাকারীরা যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ন করেছে।
সমর্থকদের উদ্দেশে এ রিপাবলিকান বলেন, ‘আমি জানি আপনারা হতাশ, কিন্তু আমি আপনাদের জানাতে চাই- আমাদের অবিশ্বাস্য যাত্রার এটা কেবল শুরু।’
সহিংসতার পর হোয়াইট হাউসের বেশ কিছু কর্মকর্তা পদত্যাগ করেছেন। সবশেষ খবরে বলা হয়, ডেপুটি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মিক মালভেনি পদত্যাগ করেছেন। তিনি ছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টাদের একজন।
এর আগে পদত্যাগ করেন ডেপুটি প্রেস সচিব সারা ম্যাথুজ, ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পের চিফ অব স্টাফ স্টেফানি গ্রিশাম, হোয়াইট হাউসের সোশ্যাল সেক্রেটারি রিকি নিচেটা, ও ডেপুটি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ম্যাট পটিঙ্গার।
মার্কিন সেনেটে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নেতা চাক শুমার আক্রমণের পর সংবিধানের ২৫তম সংশোধনী প্রয়োগ করে অবিলম্বে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্ট পদ থেকে অপসারণের আহ্বান জানিয়েছেন। একই আহ্বান জানিয়েছেন স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি।
কী ঘটেছিল?
আমেরিকার আইন-প্রণেতারা যখন নভেম্বরের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জো বাইডেনের জয় আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদন করার জন্য অধিবেশনে বসেছিলেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শত শত সমর্থক তখন আমেরিকার আইনসভা কংগ্রেসের ভবন ক্যাপিটল-এ ঢুকে পড়ে। কয়েক ঘণ্টা ভবন কার্যত দখল করে রাখার পর বিক্ষোভকারীরা ধীরে ধীরে ক্যাপিটল প্রাঙ্গণ ছেড়ে বাইরে চলে যেতে থাকে।
রাজধানী ওয়াশিংটনে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা থেকে ১২ ঘণ্টার কারফিউ ঘোষণা করা হয়েছে, কিন্তু সান্ধ্য আইন শুরু হবার পরও শত শত বিক্ষোভকারীকে রাজপথে জটলা পাকাতে দেখা গেছে।
দুপুরের পরই আমেরিকার রাজধানীতে নাটকীয় দৃশ্যে দেখা যায় শত শত বিক্ষোভকারী ভবনটিতে ঢুকে পড়ছে আর পুলিশ কংগ্রেস সদস্যদের নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিচ্ছে। কয়েক ঘণ্টা ভবন কার্যত দখল করে রাখার পর বিক্ষোভকারীরা ধীরে ধীরে ক্যাপিটল প্রাঙ্গণ ছেড়ে বাইরে চলে যেতে থাকে।
ওই দিনের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৫ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়েছে।