কোভিড-১৯ মহামারির কারণে পরীক্ষা না নেওয়ায় মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের নতুন শিক্ষাবর্ষে রোল নম্বরের পরিবর্তে আইডি নম্বর দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)।
সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির নির্দেশনা প্রদানের পর সোমবার (৪ জানুয়ারি) মাউশির সকল অঞ্চলের পরিচালক, উপপরিচালক, জেলা শিক্ষা অফিসার, সকল সরকারি-বেসরকারি স্কুল-কলেজের অধ্যক্ষ এবং উপজেলা/থানা শিক্ষা অফিসারকে এ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে।
মাউশির মহাপরিচালক সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক স্বাক্ষরিত নির্দেশনায় বলা হয়, কোভিড-১৯ মহামারির কারণে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষার জন্য ২০২১ শিক্ষাবর্ষে মাধ্যমিক পর্যায়ে (ষষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত) প্রাতিষ্ঠানিক বার্ষিক পরীক্ষা গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। তবে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনায় অ্যাসাইনমেন্ট ভিত্তিক মূল্যায়ন কার্যক্রম সারাদেশে সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এ মূল্যায়নের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের রোল নম্বর দেওয়া যথাযথ হবে কিনা তা নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে। এছাড়াও রোল নম্বর প্রথা শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রতিযোগিতা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা তৈরি করে যা শেষ পর্যন্ত গুণগত শিক্ষা অর্জনের ক্ষেত্রে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। গুণগত শিক্ষা অর্জনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার মনোভাব নয় বরং শিক্ষার্থীদের মধ্যে সহযোগিতামূলক মানসিকতা তৈরি করা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে রোল নম্বর প্রথার পরিবর্তে আইডি নম্বর ব্যবহার অনুকূল পরিবেশ তৈরি করবে।
নির্দেশনায় শিক্ষার্থীদের দৈবচয়ন পদ্ধতিতে এবং শিক্ষার্থীর নামের বানানের ক্রমানুসারে (অ্যালফাবেট অর্ডার) আইডি দেওয়া যায় বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
এর আগে গত ২৯ ডিসেম্বর শিক্ষামন্ত্রী এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, রোল নম্বর নিয়ে একটা সমস্যা হয়। প্রত্যেক শ্রেণিতে যে রোল নম্বর থাকে, আমাদের রোল নম্বরের যে প্রথা রয়েছে তার কারণে একটা অনভিপ্রেত প্রতিযোগিতা হয় এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেক সময় যে সহযোগিতার মনোভাব যেটি থাকার দরকার অনেক সময় সেটির অভাব ঘটে রোল নম্বরের কারণে, সামনে আসতে চায় সবাই।
তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করছি ২০২১ শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থীদের শ্রেণির রোল নম্বরের এই বিষয়ের পরিবর্তে আইডি নম্বর প্রদান করতে, এতে পুরানো রোল নম্বর প্রথার বিলুপ্তি হবে এবং অনভিপ্রেত প্রতিযোগিতা বন্ধ হয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটা সৎ প্রতিযোগিতার মনোভাব তৈরি হবে বলে আশা করছি।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, প্রাথমিক থেকে সব শিক্ষার্থীর ইউনিক আইডি দেওয়া হবে। পুরো শিক্ষা জীবনে সে ওই আইডি নম্বর নিয়ে থাকবে, এতে তাকে ট্র্যাক করা যাবে সে ঝরে পড়ছে কি না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সমতা আনা এবং গুণগত শিক্ষা অর্জন আনতে আমরা কাজ করছি।