দীর্ঘ প্রতিক্ষার অবসান ঘটিয়ে শুক্রবার (১ জানুয়ারি) অক্সফোর্ডের করোনার ভ্যাকসিন ছাড়পত্র দিয়েছে ভারত, যা চলতি সপ্তাহেই প্রয়োগ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। তবে প্রত্যেকের ভ্যাকসিনপ্রাপ্তি নিয়ে তৈরি হয়েছে সংশয়।
দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার বলছে, সবাই নয় প্রথম দফায় স্বাস্থ্যকর্মী এবং রোগী মিলিয়ে যে ৩০ কোটি মানুষকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে, শুধু তাদের টিকাকরণের খরচই বহন করবে সরকার।
ভারতের নীতি আয়োগ প্রধান তথা ভারতে কোভিড-১৯ টাস্কফোর্সের নেতৃত্বে থাকা বিনোদ প্রধান এ তথ্য জানিয়েছেন। আগামী ৬ থেকে ৮ মাসের মধ্যে প্রথম দফার ভ্যাকসিনকরণ সম্পন্ন হবে বলে জানান তিনি।
চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীসহ একেবারে সামনের সারিতে দাঁড়িয়ে নোভেল করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন যেসব মানুষ এবং যাদের কো-মর্বিডিটি রয়েছে, প্রথম দফায় টিকাকরণের জন্য তাদেরই বেছে নিচ্ছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। আপাতত করোনার প্রকোপে মৃত্যু প্রতিহত করাই সরকারের লক্ষ্য। তাই যাদের ক্ষেত্রে ঝুঁকি বেশি, তাদেরই বেশি প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।
কিন্তু সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে প্রতিষেধক আদৌ সাধ্যের মধ্যে কি না, সরকার টিকাকরণের ব্যয়ভার বহন করবে কি না, তা জানতে উৎসুক সকলেই। তা নিয়ে শুক্রবার সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখী হন নীতি আয়োগ প্রধান।
তিনি বলেন, ‘৩০ কোটি মানুষের টিকাকরণের ব্যয়ভার বহন করবে সরকার। সরকার যাদের প্রাধান্য দিচ্ছে, তাদের টিকাকরণের প্রস্তুতি চূড়ান্ত পর্যায়ে।’
এর আগে টিকাকরণ প্রক্রিয়া শুরু করতে শুক্রবারই জরুরি ভিত্তিতে ব্রিটিশ সংস্থা অ্যাস্ট্রাজেনেকা এবং অক্সফোর্ডের তৈরি প্রতিষেধকে ব্যবহারে ছাড়পত্র দেয় ভারতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই টিকাকরণ শুরু হয়ে যাবে বলে আশাবাদী সরকার।
সাধারণ মানুষের কাছে কৌভিডের প্রতিষেধক পৌঁছে দিতে এখনো পর্যন্ত ভারতজুড়ে ২৯ হাজার টিকাকরণ কেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে। নির্দিষ্ট তাপমাত্রায়, উপযুক্ত পরিবেশে প্রতিষেধক মজুত রাখার জন্য ৩১টি ‘হাব’ তৈরি হয়েছে, সেখান থেকে সরাসরি ওই কেন্দ্রগুলোতে প্রতিষেধক পৌঁছে দেয়া হবে।
অ্যাস্ট্রাজেনেকা এবং অক্সফোর্ডের তৈরি প্রতিষেধকের ভারতীয় সংস্করণ ‘কোভিশিল্ড’। সেটি তৈরি করছে সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া। সংস্থার ডিরেক্টর উমেশ শালিগ্রাম পিটিআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘এখনও পর্যন্ত আমাদের হাতে অ্যাস্ট্রাজেনেকা এবং অক্সফোর্ডের তৈরি প্রতিষেধকের সাড়ে ৭ কোটি ডোজ রয়েছে। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যে তা ১০ কোটিতে পৌঁছে যাবে বলে আশা করছি।’
আনুষ্ঠানিকভাবে টিকাকরণ শুরু হওয়ার আগে, শনিবার দেশের সমস্ত রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ১১৬টি জেলার ২৫৯ কেন্দ্রে মহড়া হবে। পরিকল্পনা মতো প্রতিষেধক বণ্টন করা যাচ্ছে কি না, টিকাকরণে কী কী বাধা আসছে, তা খতিয়ে দেখা হবে সেখানে।
খবর আনন্দবাজার