রাজনৈতিকভাবে ব্যবহারের কারণে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের উন্নতি হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবীদ ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ।
তিনি বলেন, “রাষ্ট্রয়ত্ব ব্যাংকগুলো থেকে রাজনৈতিক বিবেচনায় ঋণ বিতরণ ও অন্যায়ভাবে এর ব্যবহারের কারণে এ খাতের কোনো উন্নতি হয়নি। তাদের ব্যর্থতার বোঝা বহন করতে হচ্ছে বেসরকারি ব্যাংকগুলোকে।”
শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘ব্যাংকার্স ফোরাম’ আয়োজিত ‘ব্যাংকিং খাতকে করপোরেট সামাজিক দায়িত্বে উৎসাহিত করা’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “আর্থিকখাত একটি নাজুক খাত। এখানে সব সময় সজাগ নজর রাখতে হয়। এটা যদি করা না যায়, তবে দ্রুত পেছনে চলে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।”
ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ বলেন, “রাজনৈতিক প্রভাব থেকে আর্থিক খাতকে যদি রক্ষা করা না যায়, তবে এ খাতে দীর্ঘদিনের ইতিবাচক যে সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে, তা রক্ষা করা কঠিন হবে।”
তিনি আরো বলেন, “আর্থিকখাতে বেশি প্রতিষ্ঠান থাকলেই বেশি দক্ষ হতে পারে না। বরং বাজারের ব্যাপ্তি নিয়ে কাজ করতে হবে। নতুন ব্যাংক অনুমোদন দেওয়ার ক্ষেত্রে এ বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে।”
এই অর্থনীতিবিদ বলেন, “ব্যাংকিং খাতে চাকচিক্যের চেয়ে সেবার মান বৃদ্ধি করলেই এ খাতে উন্নতি হবে। সুদের হার বেশি দিয়ে ঋণ দাতা ও গ্রহীতা উভয়েই সমস্যায় পড়ে।”
ব্যক্তিখাতে ব্যাংকিং খাত অনেকদূর এগিয়ে গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “সামাজিক ব্যয়ের ক্ষেত্রে সরকারি বাধ্যবাধকতা থাকায় এটির উন্নতি থেমে গেছে। আর্থিক খাত এখন শুধু ব্যাংকিংয়ে সীমাবন্ধ নয় বরং অন্যান্য সেক্টরেও ব্যাপ্তি লাভ করেছে।”
তিনি বলেন, “আর্থিক খাত পূর্ণ প্রতিযোগিতার বাজারের মতো নয় যে, যত বেশি ক্রেতা-বিক্রেতা সমাগম হবে অর্থনীতির জন্য ততো বেশি ভালো হবে। বরং ব্যাংকিং খাতে বেশি প্রতিযোগী প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করলে আমানত সংগ্রহের ক্ষেত্রে অসুস্থ প্রতিযোগিতা শুরু হবে। এতে করে অর্থনীতিতে ব্যাংকিং খাতের অবদান বাড়াবে না।”
তিনি আরো বলেন, “বেসরকারি ব্যাংকিং খাতে উন্নতি হয়েছে বলেই এখন সিএসআর নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। অথচ নব্বই দশকে যেখানে শুধু গ্রাহক বাড়ানো ও ঋণখেলাপি নিয়ে আলোচনা হতো।”
ফোরামে সভাপতি এমএ খালেকের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য দেন ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল মান্নান, পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. হেলাল আহমেদ চৌধুরী প্রমুখ।