ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী তাকসিম এ খান জানিয়েছেন, এলাকাভিত্তিক পানির দাম নির্ধারণের পরিকল্পনা করছে ঢাকা ওয়াসা। শনিবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকা ওয়াসার বুড়িগঙ্গা মিলনায়তনে ‘নিম্ন আয় এলাকার আদর্শ গ্রাহকদের সন্মাননা স্মারক বিতরণী অনুষ্ঠান-২০২০’ এ সভাপতির বক্তব্যে ওয়াসার এমডি একথা বলেন।
তিনি বলেছেন, ‘আমরা এখন চিন্তা ভাবনা করছি এলাকা ভিত্তিক পানির দাম নির্ধারণ করব। অবশ্যই নিম্ন আয়ের লোকদের পানির দাম আর বাড়বে না, কমানো হয়তবা সম্ভব না, কিন্তু অন্যান্য জায়গায় পানির দাম বাড়বে।’
তাকসিম এ খান বলেন, ‘ঢাকা শহরের বিরাট অংশ প্রায় ১৫-২০ শতাংশ মানুষ ঢাকা ওয়াসার বৈধ পানির আওতার বাইরে ছিল। আমরা দায়িত্ব গ্রহণ করার পর ২০০৯ সালে ঢাকা ওয়াসার সকল নিম্ন আয়ের মানুষদের বৈধ পানির আওতায় আনার উদ্যোগ গ্রহণ করি। নিম্ন আয়ের লোকদের বৈধ পানির আওতায় আনার কাজ শুরু হয়েছিল মূলত ২০১১ সালে থেকে, আমাদের টার্গেট ছিল ২০১৮-২০১৯ সালের মধ্যে শতভাগ নিম্ন আয়ের অঞ্চলকে বৈধ পানির আওতায় আনব। তবে এখনো শতভাগ পারিনি। আমরা আশা করছি ২০২১ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে ঢাকা শহরের সমস্ত নিম্ন আয়ের লোকদের বৈধ পানির আওতায় আনব।’
তিনি বলেন, ‘নিম্ন আয়ের লোকরা সময় মতো বিল পরিশোধ করেছেন বলে আজ আমরা তাদের সন্মানিত করছি। তবে দুঃখজনক হচ্ছে- আমরা যারা অপেক্ষাকৃত অর্থনৈতিকভাবে ভালো তারা আমরা যে পয়সায় পানি পাচ্ছি, ঠিক একই পয়সায় নিম্ন আয়ের লোকরাও পাচ্ছে। এটা উচিত না।’
তিনি আরো বলেন, ‘এই শহরের অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তি যাদের টাকার কোন অভাব নাই তাদের ৭০ লাখ টাকা বিল বাকি থাকে কিন্তু নিম্ন আয়ের লোকদের কারো ১০০ টাকাও বাকি নেই।’
নিম্ন আয়ের লোকদের পক্ষ থেকে পানির দাম কমানোর প্রস্তাব করা হলে তার জবাবে বলেন, অবশ্যই আমরা সবাইকে এক রেটে কেন পানি দেব? সেটা হওয়া উচিত না। তবে এখানে কারিগরি সমস্যা আছে। আমরা এটা নিয়ে ভাবনা চিন্তা করছি। তবে একটা কথা মাথায় রাখতে হবে পানির উৎপাদন খরচের চাইতে অনেক কম দামে পানি দিচ্ছি। বাকিটা সরকার আমাদের ভর্তুকি দিচ্ছে। দুঃখজনক এই ভর্তুকিটা বড় লোকরাও পাচ্ছে, সেটা পাওয়া উচিত না। যাই হোক সেটা টেকনিক্যাল কারণে হতে পারে। আমরা এখন চিন্তা ভাবনা করছি আমরা এলাকা ভিত্তিক পানির দাম নির্ধারণ করব। অবশ্যই নিম্ন আয়ের লোকদের পানির দাম আর বাড়বে না, কমানো হয়তো বা সম্ভব না, কিন্তু অন্যান্য জায়গায় পানির দাম বাড়বে। সবাই একই রেটে পানি নেন এটা হওয়া উচিত না। অবশ্যই যারা নিম্ন আয়ের লোক আর যারা উচ্চ মধ্যবিত্ত বা উচ্চবিত্ত তাদের পানির দামটা আলাদা ধরা উচিত। এব্যাপারে সক্রিয় চিন্তাভাবনা করছি যাতে করে নিম্ন আয়ের লোকদেরকে পানির ব্যাপারে সাশ্রয় করতে পারি।
ওয়াসার এমডির সভাপতিত্বে সন্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ, বিশেষ অতিথি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (পানি সরবরাহ অনুবিভাগ) মুহাম্মদ ইবরাহিম, ওয়াটারএইড বাংলাদেশ কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান, ডিএসকে প্রতিনিধি ড. মাহমুদুর রহমান, ঢাকা ওয়াসার বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী উত্তম কুমার রায় প্রমুখ।