হেডস্কার্ফ ব্যবহারের অনুমতি ফিফার

হেডস্কার্ফ ব্যবহারের অনুমতি ফিফার

ফুটবলে মেয়েদের হেডস্কার্ফ ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে ফিফা। বৃহস্পতিবার ফুটবলে আইন প্রণয়নের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন বোর্ড (ইফাব) হিজাব বা হেডস্কার্ফ ব্যবহারের ওপর ২০০৭ সালের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়।

হেডস্কার্ফ ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞার কারণ হিসেবে ইফাব যুক্তি দেখিয়েছিলো যে, এটি ব্যবহার মেয়েদের জন্য অনিরাপদ। বিশেষ করে এতে গলায় চোটের ঝুঁকি থাকে। অবশ্য অনুমোদন দেওয়ার আগে ইফাব নতুন ডিজাইনের ভেলক্রো হিজাব ব্যবহারের নিরাপত্তার দিকটি বিবেচনায় নেয়। ভেলক্রো হিজাব (এক ধরনের মাথা বন্ধনী) ব্যবহার নিরাপদ এবং এতে চোটের তেমন ঝুঁকি নেই বলে বিশেষজ্ঞরা মতামত দেন।

এক সংবাদ সম্মেলনে ফিফার সাধারণ সম্পাদক জেরোমে ভালকে বলেন,‘হেডস্কার্ফ ব্যবহারে নিরাপত্তা ঝুঁকির বিষয়টি ডাক্তারি মতামতে দূর হওয়ায় খেলোয়াড়দের এটা ব্যবহারের করার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।’

ফিফার সহ-সভাপতি জর্ডানের প্রিন্স আলি বিন আল-হুসাইনের হেডস্কার্ফের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার বিষয়ে কয়েক বছর ধরেই প্রচারণা চালিয়ে আসছিলেন। ফিফার নতুন সিদ্ধান্তের সমালোচকরা দাবি করছেন এই সিদ্ধান্তে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলার সর্বোচ্চ পর্যায়ে বৈষম্য তৈরী হবে। ফিফার মতে বিশ্বে ২৯ মিলিয়ন নারী বা মেয়ে ফুটবল খেলে থাকেন।

ফুটবলে আইন প্রণয়নের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী সংস্থা ইফাব ফিফা সহ-সভাপতি প্রিন্স আল হুসেইনের এক প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে মার্চেই জানিয়েছিলো তারা ফিফা আয়োজিত প্রতিযোগিতায় মেয়েদের হেডস্কার্ফ ব্যবহারের অনুমতি দেওয়ার পক্ষে।

২০০৭ সালে নিরাপত্তার কারণে কানাডায় ১১ বছরের মেয়েদের হিজাব ব্যবহার করতে বাধা দেওয়ার পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে মুসলিম দেশগুলোর চাপের মুখে ছিলো ফিফা। ২০১২ সালে অলিম্পিক বাছাইয়ের দ্বিতীয় পর্বে জর্ডানের বিপক্ষে ম্যাচ শুরুর কয়েক মুহুর্ত আগে ইরানি দলকে খেলার অযোগ্য ঘোষণা করা হয় হেডস্কার্ফ ব্যবহারের কারণে। এরপরই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়।

আরব দেশগুলো এবং এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন ফিফার নতুন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। এএফসির সাধারণ সম্পাদক অ্যালেক্স সুসে বলেন,‘আমাদের জন্য এটা শুভ সংবাদ। এতে এএফসির দেশগুলো উপকৃত হবে। এটা মুসলিম দেশগুলোর জন্য ভাল হবে।’

এ বিষয়ে কুয়েত ফুটবল ফেডারেশনের ওম্যান স্পোর্টিং কমিটির সভাপতি শেখ নাইমা আল সাবাহ বলেন,‘ এই আমাদের খুশী করেছে। আমরা এই সিদ্ধান্তের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় ছিলাম। এতে মেয়েদের প্রতি সুবিচার হয়েছে। এতে ফুটবল খেলায় কুয়েতি মেয়েদের উৎসাহ বাড়বে।’

আরব দেশগুলোতে নারী ফুটবলে কাতার, বাহরাইন, জর্ডান ও সংযুক্ত আরব আমীরাতের পাশাপাশি কুয়েতও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন করে।

খেলাধূলা