জাপানের পরমাণু বিপর্যয় ‘মানবসৃষ্ট’: রিপোর্ট

জাপানের পরমাণু বিপর্যয় ‘মানবসৃষ্ট’: রিপোর্ট

জাপানের ফুকুশিমা পরমাণু বিপর্যয়কে ‘মানবসৃষ্ট’ বলে অভিহিত করেছে এ সংক্রান্ত সংসদীয় প্যানেল। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ওই প্যানেলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফুকুশিমা পরমাণু কেন্দ্র ছিল একটি ‘ব্যাপকভিত্তিক মানবসৃষ্ট বিপর্যয়’।

তারা বলেছে, এ বিপর্যয় ‘আগে থেকেই বোঝা সম্ভব ছিল এবং এটা প্রতিরোধও করা যেত’। আরো মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এগুলে এর প্রতিক্রিয়া প্রশমিত করা যেতে পারত।

প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয়েছে, বিপর্যয় মোকাবিলায় সরকার এবং পরমাণু কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রতিষ্ঠান টেপকো উভয়ের পক্ষ থেকেই যথযথ সাড়া দেওয়ার ব্যাপারে ঘাটতি ছিল। এছাড়া এর জন্য দেশীয় সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং কর্তৃপক্ষের কাছে এসব ব্যাপারে প্রশ্ন করার ব্যাপারে অনীহাকেও দায়ী করা হয়েছে।

গত বছরের ১১ মার্চ জাপানে ভয়াবহ ভূমিকম্প এবং সুনামিতে ফুকুশিমা দাইচি পরমাণু কেন্দ্রের ছয়টি চুল্লিই ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। চুল্লির শীতলীকারণ ব্যবস্থা বিকল হয়ে যায়। ফলে চুল্লির অংশ বিশেষ গলতে থাকে এবং তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ে।

আক্রান্ত অঞ্চলের ১০ হাজারেরও বেশি মানুষকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়। ক্ষতিগ্রস্ত চুল্লিগুলোকে নিয়ন্ত্রণে আনার বহু চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় কর্তৃপক্ষ। অবশেষে গণদাবির মুখে দেশের সবক’টি পরমাণু বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র বন্ধ করে দেয় সরকার।

সম্প্রতি অবশ্য একটি চুল্লি চালু করা হয়েছে। আরেকটি চালুর অপেক্ষায় আছে। তবে এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভও করছে সাধারণ মানুষ।

ফুকুশিমা পরমাণু কেন্দ্রে সৃষ্ট তেজস্ত্রিয় বিপর্যয় মোকাবিলায় সরকারের পদক্ষেপ বিশ্লেষণ এবং এ ব্যাপারে সুপারিশ করার জন্য ২০১১ সালের মে তে সংসদীয় প্যানেল গঠন করে সরকার। দীর্ঘ ছয় মাস তদন্তের পর এই প্যানেল বৃহস্পতিবার প্রতিবেদন দাখিল করল।

প্রতিবেদনে বিপর্যয় মোকাবিলা করতে ব্যর্থতার কারণে সরকারকেই বেশি দোষ দিয়েছে তারা। তারা বলেছে, যদিও ভূমিকম্প ও সুনামির কারণে পরবর্তী বিপর্যয় কিন্তু ফুকুশিমা দাইচি পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ঘটনাবলীকে কোনোভাবেই প্রাকৃতিক দৃর্যোগ বলা যাবে না। এখানে সরকারের অবহেলা রয়েছে বলে অনুসন্ধানে তারা পেয়েছেন।

বিপর্যয় ঠেকাতে ব্যর্থতার পেছনে প্রধানমন্ত্রী নাওতো কানের কার্যালয় এবং টেপকোর মধ্যকার যোগাযোগ ব্যর্থতাকেও দায়ী করেছে ওই সংসদীয় প্যানেল।

আন্তর্জাতিক