সব শঙ্কা উড়িয়ে নকআউটে রিয়াল

সব শঙ্কা উড়িয়ে নকআউটে রিয়াল

বাঁচা-মরার লড়াই ছিল। হারলেই চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে ছিটকে পড়ার শঙ্কা। জিনেদিন জিদানের চাকরি নিয়েই যেন টানাহেঁচড়া করছিল ম্যাচটা। তবে আসল জায়গায় ঠিকই স্বরূপে দেখা গেল জিদানের রিয়াল মাদ্রিদকে। কোনো ধরনের ভুল নয়। দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া লড়াইয়ে দারুণ জয় তুলে নিয়েছে চ্যাম্পিয়নস লিগের সবচেয়ে সফল দলটি। গ্রুপসেরা হয়ে নাম লিখিয়েছে নকআউটে।

বুধবার রাতে আলফ্রেদো দি স্তেফানো স্টেডিয়ামে ‘বি’ গ্রুপের ম্যাচটিতে বরুশিয়া মনশেনগ্লাডবাখকে ২-০ গোলে হারিয়েছে রিয়াল। দুটি গোলই করেন করিম বেনজেমা।

গত অক্টোবরে জার্মান দলটির মাঠে যোগ করা সময়ের গোলে ২-২ ড্র করেছিল রিয়াল। এবার আর কোনো ভুল নয়, শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দাপুটে ফুটবল খেলেই লক্ষ্য স্পর্শ করল তারা। গোলপোস্টের নিচে মনশেনগ্লাডবাখের গোলরক্ষক ইয়ান সমেরের নৈপুণ্য ও পোস্ট দুর্ভাগ্য বাধা হয়ে না দাঁড়ালে ব্যবধান হতে পারত অনেক বড়।

ইন্টার মিলান ও শাখতার দোনেৎস্কের মধ্যে একই সঙ্গে শুরু হওয়া গ্রুপের অন্য ম্যাচটি গোলশূন্য ড্র হয়েছে। ফলে শেষ রাউন্ডে হেরেও শেষ ষোলোয় উঠেছে মনশেনগ্লাডবাখ।

পা হড়কালেই বিপদ-এমনভাবে দেয়ালে পিঠ ঠেকা অবস্থায় শুরুটা দারুণ করে রিয়াল। নবম মিনিটে ডান দিক দিয়ে লুকাস ভাসকেস আক্রমণে উঠে ক্রস বাড়ান ডি-বক্সে। আর লাফিয়ে নেওয়া হেডে বল জালে পাঠান বেনজেমা।

২৫তম মিনিটে বিপদে পড়তে পারত রিয়াল। প্রতি-আক্রমণে গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়াকে একা পেয়েছিলেন আলাসাঁ প্লিয়া। তবে ফরাসি এই ফরোয়ার্ডের শট পোস্টের বাইরে দিয়ে যায়।

ছয় মিনিট পর আরেকটি নিখুঁত হেডে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন বেনজেমা। ডান দিক থেকে একজনের বাধা এড়িয়ে রদ্রিগোর বাড়ানো দারুণ ক্রসে ঠিকানা খুঁজে নেন ফরাসি ফরোয়ার্ড। আসরে তার গোল হলো চারটি।

৩৯তম মিনিট আবারও ডান দিক দিয়ে আক্রমণে প্রতিপক্ষ শিবিরে ভীতি ছড়ায় রিয়াল। ভাসকেসের ক্রসে সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছিলেন লুকা মদ্রিচ, কিন্তু তার শট ঝাঁপিয়ে গোলরক্ষক ঠেকানোর পর বল পোস্টে লাগে। তিন মিনিট পর জালে বল পাঠান ক্রোয়াট এই মিডফিল্ডার; তবে অফসাইডের পতাকা তোলেন লাইন্সম্যান।

দ্বিতীয়ার্ধের চতুর্থ মিনিটে আরেকটি হেডে ব্যবধান আরও বাড়ানোর সুযোগ পেয়েছিলেন বেনজেমা। তবে এ যাত্রায় হেডে তেমন জোর দিতে পারেননি তিনি, গোলরক্ষক বেশ সহজেই ধরে ফেলেন। ৬৩তম মিনিটে টনি ক্রুসের বুলেট গতির শট ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান গোলরক্ষক সমের।

দুই মিনিট পর ব্যবধান কমানোর আরেকটি ভালো সুযোগ নষ্ট হয় সফরকারীদের। ডি-বক্সে বাঁ দিকে ফাঁকায় বল পেয়ে পাশের জালে মারেন প্লিয়া। খানিক পর ডি-বক্সের মুখ থেকে রদ্রিগোর শট পোস্টের একটু বাইরে দিয়ে গেলে ম্যাচে থাকে মনশেনগ্লাডবাখ।

৭৩তম মিনিটে রামোসের জোরালো হেডও ঝাঁপিয়ে ফেরান সমের। ফিরতি বলে বেনজেমার জোরালো শট বাধা পায় ক্রসবারে। পাঁচ মিনিট পর আবারও দুর্ভাগ্য বাধ সাধে; বেনজেমার পাস ডি-বক্সে পেয়ে ভাসকেসের জোরালো শট ফেরে পোস্টে লেগে।

নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটেও হ্যাটট্রিক পূরণের সুযোগ পেয়েছিলেন বেনজেমা, কিন্তু সমেরের বাধা পেরুতে পারেননি তিনি। হ্যাটট্রিক না মিললেও কঠিন পরিস্থিতিতে দলকে পথ দেখানোয় ম্যাচের নায়ক তিনিই।

ছয় ম্যাচে তিন জয় ও এক ড্রয়ে রিয়ালের পয়েন্ট ১০। ৮ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে মনশেনগ্লাডবাখ। মনশেনগ্লাডবাখের সমান ৮ পয়েন্ট নিয়ে মুখোমুখি লড়াইয়ে পিছিয়ে তিন নম্বরে শাখতার। ইউরোপা লিগে খেলবে ইউক্রেনের দলটি। ৬ পয়েন্ট নিয়ে তলানিতে ইন্টার।

খেলাধূলা শীর্ষ খবর