ব্র্যাক ব্যাংকের হিউম্যান রিসোর্স ডিভিশনের(এইচআরডি) প্রধান মডেল তানিয়াত আহমেদ করিমসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে সিলেটের আদালতে ২০ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ব্র্যাক ব্যাংকের সাবেক সিলেট দক্ষিণ সুরমা উপজেলার জোনের জোনাল ম্যানেজার মো. হামিদুর রহমান বাদী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেন।
মো. হামিদুর রহমান নোয়াখালী সদর থানার এওজ বালিয়া গ্রামের সায়েদল হকের ছেলে।
সিলেটের অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবুল কাসেম বুধবার অভিযোগ আমলে নিয়ে এ বিষয়ে দক্ষিণ সুরমা থানার ওসিকে তদন্তের নির্দেশ দেন।
ঢাকা ১নং গুলশান এ্যভিনিউর ব্র্যাক ব্যাংকের হেড অফ হিউম্যান রিসোর্স বিভাগের প্রধান তানিয়াত আহমেদ করিম ছাড়াও মামলার অপর আসামিরা হলেন- ব্র্যাকের এসএমই ব্যাংকিং বিভাগের হেড আব্দুর রহমান, হেড অফ স্মল বিজনেস সৈয়দ এ মোমেন তমাল, বিজনেস ডেভলাপমেন্ট স্মল বিজনেস’র সিনিয়র ম্যানেজার মো. শাহ আলম, হেড অফ এইচ আর অপারেশন সুকুমার চন্দ্র ঘোষ, লিগ্যাল কনসালটেন্ট সমীর কুমার মুখার্জি, সিলেটের টেরিটরি ম্যানজার মো. মনির হোসেন, কক্সবাজার টেরিটরি ম্যানেজার তোফাজ্জল হোসেন, রিপোর্টিং এসএমই এডমিনিস্ট্রেশনের কমপ্লায়্যান্স ম্যানেজার আমজাদ হোসেন ফকির, সিলেটের দক্ষিণ সুরমার জোনাল ম্যানেজার মোহাম্মদ জাফর ইকবাল ও চকরিয়া জোনের ভারপ্রাপ্ত জোনাল ম্যানেজার মো. আসাদুজ্জামান।
আদালত দরখাস্ত মামলাটি দায়েরের পর তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন আগামী ২৬ জুলাই দাখিলের জন্য দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নিদের্শ প্রদান করেন আদালত।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০০৬ সালের ১০ ডিসেম্বর বাদী ব্র্যাকের কুমিল্লার কোম্পানীগঞ্জ ইউনিটের কাষ্টমার রিলেশন অফিসার পদে যোগদান করেন। পরবর্তীতে ২০০৯ সালের ১ জুন তাকে পদোন্নতি দিয়ে চকরিয়া জোনের সিনিয়র কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরে তাকে সিলেটের দক্ষিণ সুরমা জোনের জোনাল ম্যানেজার হিসেবে বদলি করা হয়।
দক্ষিণ সুরমায় দায়িত্ব পালনকালে তাকে না জানিয়ে ওই পদে এজাহার নামীয় আসামী মোহাম্মদ জাফর ইকবালকে নিয়োগ দেওয়া হয়। ১নং আসামী তানিয়াত আহমেদ করিমের নিদের্শে হামিদুরকে ডিমোশন দিয়ে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ কালেকশন কর্মকর্তা হিসেবে বদলির আদেশ দেওয়া হয়।
এ ছাড়া হামিদুরকে ব্র্যাকের একটি মামলায় স্বাক্ষী দেওয়ার জন্য চলতি বছরের ২৮ মার্চ কুমিল্লা যাওয়ার জন্য চিঠি দেওয়া হয়। স্বাক্ষী দেওয়াসহ আনুষঙ্গিক কাজে তিনি কুমিল্লায় ৩দিন অবস্থানের পর ২৯ মার্চ সিলেটে আসেন। পরে ১ এপ্রিল তাকে কোনো কারণ দর্শানো নোটিশ ছাড়াই চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। অথচ ব্যাংকের প্রতারণার কারণে হামিদুর ৬ দিন বান্দরবন কারাগারে আটক ছিলেন।
কর্তপক্ষের খামখেয়ালী ও স্বেচ্ছাচারিতার কারণে হামিদুর রহমানকে এক জেলা থেকে আরেক জেলায় হয়রানীর উদ্দেশ্যে বদলি করা হয়। বদলি ও যাতায়াতের কারণে তার স্ত্রীর গর্ভের সন্তানটিও মারা যান। সর্বোপরি হামিদুর রহমান ২০ কোটি টাকার ক্ষতিগ্রস্ত হন।
চাকরি থেকে বরখাস্ত ও আর্থিক ক্ষতিসাধনের জন্য মামলার প্রত্যেক আসামি প্রত্যক্ষভাবে জড়িত বলে মামলায় উল্লেখ করেন তিনি।