মাঠের ভেতরে খুব ‘ফান’ করেন নাসির হোসেন। বাইরেও তাই। জাতীয় দলের রসিক ক্রিকেটার হিসেবে তার খ্যাতি হয়েছে। ক্রিকেট এবং ক্রিকেটের বাইরের বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন অলরাউন্ডার নাসির হোসেন।
**আপনি তারকা হয়ে উঠেছেন?
নাসির: জাতীয় দলে খেলার পর সবাই চেনে। সালাম দেয়, ভালোবাসে। মানুষের ব্যবহার দেখে আমি অবাক হই, তারা আমাদের কত ভালোবাসে। ক্রিকেটারদের সঙ্গে কথা বলার জন্য মানুষের কি আগ্রহ, না দেখলে বুঝবেন না। সত্যিই এদেশে ক্রিকেটার হতে পেরে আমি ধন্য।
** ক্রিকেটার হওয়ার গল্প বলেন?
নাসির: যখন ছোট ছিলাম তখন আমার কাকা খেলতেন। কাকাতো ভাই খেলতেন। তাদের হাত ধরে ক্রিকেটে আসা। ছোট সময়ে আমার খেলতে ইচ্ছে করতো না। রংপুর ক্রিকেট একাডেমিতে শাকিল ভাই ছিলেন তিনি প্রতিদিন বাসায় এসে জোর করে ধরে নিয়ে যেতেন। মাঠে যেতে আমার ভালো লাগতো না। একদিন রংপুরের হয়ে দিনাজপুরে খেলতে যাই। সেই থেকে খেলতে খেলতে এগিয়ে চলা। বিকেএসপিতে ভর্তি হওয়ার খুব ইচ্ছে ছিলো। আমি এবং আরিফুল হক অভিভাবকদের ছাড়াই বিকেএসপিতে ভর্তি পরীক্ষা দিতে যাই। ফাহিম স্যার আমাদের নির্বাচন করেন ১৪ দিনের ক্যাম্পের জন্য। পরে বিকেএসপিতে ভর্তি হই এবং এখন যে জাতীয় দলে খেলছি তা বিকেএসপি’রই অবদান।
** জাতীয় দলে প্রথম ম্যাচ খেলতে কেমন লেগেছে?
নাসির: খুব নার্ভাস ছিলাম। গলা শুকিয়ে গিয়েছিলো। তার আগে টেস্টে দ্বাদশ ম্যান হিসেবে ফিল্ডিং করেছি। শুরুতে খুব ভয় করছিলো। পরে ক্যাচ ধরেছি এবং ভালো ফিল্ডিং দিয়েছি। কিন্তু ওয়ানডে অভিষেক ম্যাচে ব্যাট করতে নেমে কেমন যেন নার্ভাস ছিলাম।
** প্রথম বিদেশে যাওয়ার অভিজ্ঞতা কেমন?
নাসির: ২০০৫ অথবা ২০০৬ সালে অনূর্ধ্ব-১৫ দলের হয়ে শ্রীলঙ্কায় গিয়ে ছিলাম। ওই টিমের কোচ ছিলেন ইমরান স্যার (সারওয়ার ইমরান)। যাওয়ার আগে অদ্ভুত একটা ফিলিংস কাজ করেছে। প্রথম বিমানে উঠবো, বিদেশে গিয়ে ঘুরবো। স্বপ্ন স্বপ্ন মনে হচ্ছিলো। ওই টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়া খেলেছে। বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয়। খুব সমাদর পেয়েছিলাম আমরা।
** স্লেজিং করেন?
নাসির: আগে স্লেজিং করতে খুব ভালো লাগতো। জাতীয় লিগে প্রচুর মানুষকে যন্ত্রণা দিয়েছি। দুই বছর হয় ওসব করি না। মানুষজন খারাপ বলে।
**: আন্তর্জাতিক ম্যাচে স্লেজ করেন না?
নাসির: আফ্রিদির সঙ্গে একবার খুব লেগেছিলো। আফ্রিদি যত বেশি মার খায় তত দ্রুত বল করে। আমি বলেছিলাম আস্তে। আমি নন স্টাইকিংয়ে যাওয়ার পর আফ্রিদি বলে, কত বছর ধরে জাতীয় দলে খেলো? আমি বলেছি দুই বছর। সে বলে তুমি সিনিয়রকে দাম দাও জুনিয়র তোমাকে দাম দিবে। পরে দুই বলে ৬ ও ৪ মেরে বলেছিলাম, যাও বল নিয়ে আসো। খুব চেতছিলো।
** জাতীয় দলে কাকে নিয়ে বেশি মজা হয়?
নাসির: নাজমুল ভাইকে নিয়ে খুব মজা হয়। রিয়াদ ভাই সবার অ্যাকশন নকল করে দেখায়। আরও অনেক মজার মজার ঘটনা আছে।
**বাইক চালাতে খুব ভালো লাগে?
নাসির: রাতে বাইক চালাতে পছন্দ করি। কয়েকদিন ছুটি পেলে একদিন হলেও রাতে বাইক নিয়ে বের হবো। আমাকে সবাই বলে আস্তে চালাতে। কিন্তু পারি না।
** কোনো অনুষ্ঠানে অতিথি হয়ে গিয়েছিলেন?
নাসির: আমি ক্রিকেটে পুরস্কার দিয়েছি। খুব ভালো লাগে পুরস্কার দিতে। আসলে ক্রিকেটাররা যে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবে সেখানে মন্ত্রী, এমপি এবং অন্যরা গণ্য হয়ে যান। সব আকর্ষণ থাকে ক্রিকেটারদের ওপর।
** প্রেম করেন?
নাসির: প্রেম করি না। করবো কি করে, এখন প্রেম করলে তো তাকে বিয়ে করতে পারবো না। আমরা চার ভাই এক বোন, দুটো চাচাতো বোনেরও বিয়ে হয়নি। যে জ্যাম লেগে আছে তাতে করে ৫০ বছরেও বিয়ে হবে বলে মনে হয় না। যদিও আমার ইচ্ছে ২৮-৩০ বছর বয়সে বিয়ে করার। ওই বয়সের কাছাকাছি গেলে প্রেম করবো!