শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া বলেছেন, নারী জনগোষ্ঠীকে কারিগরি জ্ঞানে দক্ষ ও প্রশিক্ষিত করে শিল্পায়ন প্রক্রিয়া জোরদারের সুযোগ রয়েছে। নারীকে বাদ দিয়ে দেশের উন্নয়ন চিন্তা বাস্তবসম্মত নয়।
তিনি বলেন, বর্তমানে নারীরা জ্ঞান-বিজ্ঞান, তথ্য-প্রযুক্তি, শিক্ষা-স্বাস্থ্য, আইন-আদালত, জনপ্রশাসন, সামরিক বাহিনী শিল্পায়নসহ সব ক্ষেত্রে এগিয়ে এসেছেন। আমাদের নারী উদ্যোক্তারা এখন শুধু দেশেই নয় বিদেশেও স্বীকৃতি পাচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় ‘হাতে-কলমে কারিগরি প্রশিক্ষণে মহিলাদের গুরুত্ব দিয়ে বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্রের(বিটাক) কার্যক্রম সম্প্রসারণ পূর্বক আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দারিদ্র্য বিমোচন’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় নির্মিত মহিলা হোস্টেল ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর তেজগাঁও শিল্প এলাকায় বিটাক কার্যালয়ে নির্মিত হয়েছে হোস্টেলটি।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, গত প্রায় ১ দশক ধরে বাংলাদেশের গড় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশের ওপরে রয়েছে, বাড়ছে রফতানির পরিমাণ। পাশাপাশি শিল্পায়ন প্রক্রিয়া জোরদার হচ্ছে।
দেশে ধীরে ধীরে ব্যবসানির্ভর অর্থনীতি থেকে শিল্পনির্ভর অর্থনীতির দিকে এগোচ্ছে। এক সময়ের তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে বাংলাদেশ উদীয়মান অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে আবির্ভুত হচ্ছে। এ প্রক্রিয়ায় নারী-পুরুষ সবার অবদান রয়েছে।
এক্ষেত্রে বিটাকের মতো প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য বলে মন্তব্য করে শিল্পমন্ত্রী জানান, বিটাক গত সাড়ে তিন বছরে এক হাজার ৭২১ জন প্রশিক্ষিত নারী-পুরুষের চাকরির ব্যবস্থা করেছে। এর মধ্যে ৮৬৮ জন মহিলা। সংস্থার ‘হাতে-কলমে কারিগরি প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে মহিলাদের অগ্রাধিকার দিয়ে আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দারিদ্র্য-বিমোচন’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় এ কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। প্রশিক্ষিত আরো ৫০০ মহিলা খুব শিগগিরই চাকরি পাবেন বলেও জানান শিল্পমন্ত্রী।
দিলীপ বড়–য়া বলেন, দেশের নারী জনগোষ্ঠীর জন্য কারিগরি জ্ঞান ও প্রশিক্ষণ জোরদার করতে সরকার চলতি বছর ৮ ও ৯ অক্টোবর বাংলাদেশে ডি-৮ সম্মেলন আয়োজন করতে যাচ্ছে। এর মাধ্যমে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ ৮টি দেশের মধ্যে পারস্পরিক প্রযুক্তি ও কারিগরি জ্ঞান হস্তান্তরের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
এ সময় মন্ত্রী মহিলা হোস্টেলটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে নামকরণের ঘোষণা দেন।
বিটাকের মহাপরিচালক আব্দুল মতিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি। শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মুনসুর আলী সিকদার, বিটাকের প্রকল্প পরিচালক ড. সৈয়দ ইহ্সানুল করিম অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
বক্তারা বলেন, দেশের ২ কোটি বেকার জনগণের কর্মসংস্থানের জন্য হাতে-কলমে কারিগরি প্রশিক্ষণ সুবিধা জোরদার করা প্রয়োজন। এর মাধ্যমে দেশের বেকার জনগোষ্ঠীর মধ্যে উদ্যোক্তার মনোভাব তৈরি হবে। দীর্ঘ মেয়াদে এর সুফল হিসেবে বাংলাদেশ শিল্পসমৃদ্ধ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে। বক্তারা বিটাকের এ প্রকল্পের মেয়াদ আরো পাঁচ বছর বাড়ানোর দাবি জানান।
উল্লেখ্য, প্রকল্পের আওতায় দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত অবহেলিত ও দরিদ্র নারীদের নিরাপদ আবাসনের লক্ষ্যে এ হোস্টেল নির্মাণ করা হয়েছে। এতে ব্যয় হয়েছে ৪ কোটি ২০ লাখ টাকা। পাঁচ তলা এ হোস্টেলে ২শ’ মহিলা প্রশিক্ষণার্থীর আবাসন সুবিধা রয়েছে।