বাজারে দেদারসে বিক্রি হওয়া প্রাণের হট টমেটো সস পুরোটাই ভেজাল এবং তা জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। ল্যাবরেটরি টেস্টে এটা প্রমাণিত হয়েছে। তারপরও এ টমেটো সস বাজারে বিক্রি হচ্ছে। চটকদার বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে ক্রেতারা ঠকছেন প্রতিদিনই। আর ক্ষতিকর উপাদান গ্রহণ করে সাধারণের স্বাস্থ্য প্রতিনিয়তই হুমকির মুখে পড়ছে।
‘জনপ্রিয়’ এ পণ্যে ভেজাল ধরা পড়ায় সম্প্রতি দুটি মামলা হয়েছে উৎপাদনকারী সংস্থা প্রাণ অ্যাগ্রো কোম্পানির বিরুদ্ধে।
দেশের একমাত্র বিশুদ্ধ খাদ্য-আদালতে এ মামলা দায়ের করেন ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের (ডিসিসি, দক্ষিণ) ফুড অ্যান্ড স্যানিটেশন ইন্সপেক্টর কামরুল হাসান। এ মামলা দুটিতে পৃথকভাবে আসামি করা হয়েছে লে. কর্নেল (অব.) মাহতাব চৌধুরী ও মেজর জেনারেল (অব.) আমজাদ হোসেন চৌধুরীকে।
সূত্র জানায়, বিশুদ্ধ খাদ্য-আদালতের মামলা নম্বর ৫০/২০১২ ও ১৯৩/২০১১। মামলা দুটি এখন বিচারাধীন থাকলেও এখন পর্যন্ত কোম্পানিটি তাদের পণ্যের মান উন্নয়ন করেনি।
আদালত সূত্র জানায়, ৫০/২০১২ নম্বর মামলাটির বাদী ফুড ইন্সপেক্টর কামরুল আদালতে যে লিখিত অভিযোগ করেন তাতে দেখা যায়, কাকরাইলের মুসাফির টাওয়ারের ‘নন্দন মেগাশপ’ নামের এক অভিজাত দোকান থেকে ডিসিসির স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা নাজিম উদ্দীন প্রাণ হট টমেটো সসের নমুনা সংগ্রহ করেন। ২০১১ সালের ১১ ডিসেম্বর নমুনা পরীক্ষার জন্য ডিসিসির (ঢাকার একমাত্র দায়িত্বপ্রাপ্ত) জনস্বাস্থ্য পরীক্ষাগারে টেস্টের জন্য পাঠানো হয়।
ওই নমুনা ল্যাবটেস্টের পর ডিসিসির পাবলিক এনালিস্ট সারোয়ার হোসেন ১৮ ডিসেম্বর ডিসিসির স্বাস্থ্য বিভাগে ল্যাবরেটরি প্রতিবেদন জমা দেন। এই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বিশুদ্ধ খাদ্য আইনের ৬-এর (১) ও (৭) ধারায় মামলা করা হয়।
এ মামলার পাবলিক প্রসিকিউটর ইন্সপেক্টর কামরুল জানান, ল্যাব টেস্টে দেখা গেছে প্রাণ কোম্পানির হট টমেটো সসে অম্লতা (অ্যাসিটিক এসিড) ১ দশমিক ২ শতাংশের জায়গায় আছে মাত্র দশমিক ৩৭ শতাংশ।
অন্যদিকে, সসে সম্পূর্ণ দ্রবণীয় কঠিন বস্তুর পরিমাণ ২৫ শতাংশ থাকার কথা থাকলেও তাতে আছে ২৪ শতাংশ।
আরেকটি মামলায় (১৯৩/২০১১) এ অম্লতা (অ্যাসিটিক এসিড) পাওয়া যায় দশমিক ৩৬ ভাগ ও কঠিন বস্তুর পরিমাণ ৩৮ ভাগ।
মামলা দুটির পাবলিক প্রসিকিউটার বলেন, “সসে এ ধরনের উপদানের তারতম্য সম্পূর্ণ ভেজাল হিসেবে পরিগণিত হয়। এর ফলে পণ্যের মান নষ্ট হয় এবং ভেজাল ও ব্যবহারের অযোগ্য হিসেবেই পণ্য উৎপাদিতই হয়।“
তিনি বলেন, বর্তমানে মামলা বিচারাধীন থাকলেও আবার পন্য পরীক্ষা করে দেখা গেছে পণ্যের মান ঠিক করেনি প্রাণ।