দুদলের সামনেই ছিল প্রথমবারের মতো পাকিস্তান সুপার লিগের শিরোপা জেতার হাতছানি। এ ছাড়া করাচি ও লাহোরের দীর্ঘদিনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকায় জমজমাট এক ফাইনাল ম্যাচের আশায়ই ছিলেন সবাই। কিন্তু ধীরগতির উইকেটে খেলা হওয়ার কারণে উবে গেল সব উত্তেজনা।
ফাইনালে সবাই যেখানে আশায় থাকে ব্যাটসম্যানদের রানবন্যা কিংবা বোলারদের দারুণ কোনো স্পেলের, সেখানে এর কিছুই হলো না পিএসএল ফাইনালে। ধীরগতির উইকেটে ম্যাড়ম্যাড়ে এক ফাইনালই দেখেছে ক্রিকেটপ্রেমীরা। যেখানে ঠাণ্ডা মাথায় খেলে প্রথমবারের মতো পিএসএল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে করাচি কিংস।
মঙ্গলবার রাতে করাচির ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে হওয়া ফাইনাল ম্যাচটিতে স্বাগতিক দলের প্রতিপক্ষ ছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবালের লাহোর কালান্দার্স। প্লে-অফ পর্বে দুটি এলিমিনেটর জিতে ফাইনালে এলেও, শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচটিতে আর প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়তে পারেনি লাহোর।
আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৩৪ রানের বেশি করতে পারেনি লাহোর। জবাবে ৫ উইকেট হারিয়ে ৮ বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে গেছে করাচি কিংস। তারকা ব্যাটসম্যান বাবর আজম অনবদ্য ফিফটি হাঁকিয়ে দলকে ৫ উইকেটের জয় পাইয়ে দিয়েছেন।
করাচির মন্থর গতির উইকেটে মাত্র ১৩৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে স্বাগতিক দলের শুরুটা খুব একটা ভাল ছিল না। ইনিংসের চতুর্থ ওভারের প্রথম বলে দলীয় ২৩ রানের মাথায় সাজঘরের পথ ধরেন শারজিল খান (১৩), সপ্তম ওভারের পঞ্চম বলে ফিরে যান ১১ বলে ১১ রান করা অ্যালেক্স হেলস।
লক্ষ্য ছোট হলেও ৪৯ রানে ২ উইকেট হারিয়ে খানিক চিন্তায়ই পড়ে গেছিল করাচি। সেখান থেকে তৃতীয় উইকেটে ৬১ রানের জুটি গড়েন বাবর আজম ও চ্যাডউইক ওয়ালটন। এ দুজনের জুটিতেই মূলত জয় নিশ্চিত হয়ে যায় করাচির। ইনিংসের ১৬তম ওভারের প্রথম বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে ধরা পড়েন ২৭ বলে ২২ রান করা ওয়ালটন।
ততক্ষণে জয়ের বন্দরে প্রায় পৌঁছেই গেছে করাচি। বাকি থাকা ২৯ বলে ২৫ রান করতে খুব একটা পেতে হয়নি বাবর আজমদের। অবশ্য ওয়ালটনের বিদায়ের পর দ্রুত কিছু উইকেট হারিয়ে খানিক বিপাকে পড়েছিল করাচি। তবে ইনিংসের শুরু থেকে ম্যাচ জেতা পর্যন্ত খেলে গেছেন বাবর। শেষপর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ৪৯ বলে ৬৩ রান করে।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে উইকেটের চরিত্রের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারেননি লাহোরের ব্যাটসম্যানরা। মন্থরগতির উইকেটে বারবার ধৈর্য হারিয়েছেন দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও ফাখর জামান। বলের গতির সঙ্গে মানিয়ে নেয়ার আগে শট খেলেছেন বাড়তি চেষ্টা করে।
যার ফল পাননি তারা। দুজন মিলে ৬৮ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়লেও, এতে খরচ হয় ৬১ বল। ইনিংসের একাদশ ওভারে দুজনকেই সাজঘরে পাঠান উমাইদ আসিফ। তামিম ৩৮ বলে ৩৫ ও ফাখর খেলেন ২৪ বলে ২৭ রানের ইনিংস। দুই ওপেনার ফিরে যাওয়ার অবশ্য বাকি ব্যাটসম্যানরাও তেমন কিছু করতে পারেননি।
ফর্মে থাকা মোহাম্মদ হাফিজ ৪ বলে ২, আগের ম্যাচের নায়ক ডেভিড উইস ১৪ বলে ১৪, অধিনায়ক সোহেল আখতার ১৪ বলে ১৪, উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান ১৪ বলে ১১ রান করলে বড় সংগ্রহ গড়ার আশা শেষ হয়ে যায় লাহোরের। শেষদিকে শাহিন আফ্রিদির ৪ বলে ১২ রানের সুবাদে বোর্ডে ১৩৪ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায় তারা।
করাচির পক্ষে বল হাতে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন ওয়াকাস মাকসুদ, আরশাদ ইকবাল ও উমাইদ আসিফ।